Logo

রাজনীতি

গণভোটের দাবিতে কঠোর অবস্থানে জামায়াত-সমমনারা

Icon

এম. ইসলাম

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৬

গণভোটের দাবিতে কঠোর অবস্থানে জামায়াত-সমমনারা

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকার মহাসমাবেশে বড় শোডাউন দেখাতে চায় জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আটটি দল রাজনৈতিক দল। যুগপৎ এ কর্মসূচিতে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলার নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে জোরেশোরে কাজ করছে দলগুলো। তারা রাজধানীর পল্টন মোড়ে এই সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দলগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিশ, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি। দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বলেন, দাবি না মানলে কাল মহাসমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

কর্মসূচির ধরন ঠিক করতে দলগুলোতে নানা আলোচনা রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও, সড়ক অবরোধ, সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করার মতো কর্মসূচি। দাবি মানতে ৪৮ বা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হতে পারে। আল্টিমেটামের পর ফের ঢাকায় মহাসমাবেশ চিন্তা-ভাবনা চলছে।

তবে, কর্মসূচি নিয়ে মতভেদও রয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনদুর্ভোগ হয় এমন কর্মসূচি দেওয়ার ব্যাপারে অনেকের আপত্তি রয়েছে। বরং সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে কি ধরনের কর্মসূচি দেওয়া তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘মহাসমাবেশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করতে আট দলের নেতারা বৈঠক করছেন। কর্মসূচি সফলে প্রত্যেক দল কাজ করছে। কালকের মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের দিনক্ষণ ও ‘নোট অব ডিসেন্ট’ তুলে দেওয়া নিয়ে বিএনপি এবং

জামায়াত পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যে গত ৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেয় সরকার।

সরকারের ওই ঘোষণার পরও বিএনপি একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে। আর জামায়াত ও সমমনারা সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিতে অনড় থেকে ৩ নভেম্বর সংবাদ সস্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। তাদের কর্মসূচির মধ্যে ছিল- গত ৬ নভেম্বর গণমিছিল ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান ও ১১ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ। ৬ নভেম্বর রাজধানীতে কর্মসূচি পালনকালে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছিলেন, ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র হবে ভিন্নরকম। ঢাকা চলো কর্মসূচির মাধ্যমে বড় শোডাউনের ঘোষণা দেন তিনি। সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাঁকা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। 

এরপর থেকে সমমনা এই আট দল কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। মহাসমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগরী ও আশপাশের জেলা বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জকে টার্গেট করেছে দলগুলো। ঢাকার পাশাপাশি আশপাশের জেলা থেকে ব্যাপক নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কাজ করছে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এর বাইরের কোনো জেলা থেকে লোকজন আনার পরিকল্পনা এখন নেই দলগুলোর।

রাজধানীর রমনা থানা জামায়াতের আমির আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেভাবে আমরা কাজ করছি। দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিষয়টি মনিটরিং করছেন।’

জামায়াত সমমনারা ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও এখন তাদের প্রধান দাবিই হচ্ছে আগে গণভোট। তাদের অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে- সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি, লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, গণহত্যার বিচার ও জাপাসহ ১৪ দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

যুগপৎ কর্মসূচিতে যুক্ত জাগপার সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘সরকার দাবি না মানলে ১১ নভেম্বরের মহাসমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ঢাকার বাইরের লোকবল আনার চিন্তা না থাকলে আশপাশের জেলার নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে সেদিন ঢাকায় লোকে লোকারণ্য হবে।’

এদিকে, আলোচনায় বসতে জামায়াতের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আহ্বান জানানো হলেও দলটি ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ ব্যাপারে যেকোনো দল বসার আহ্বান জানালে দলটি সাড়া দেবে। 

সরকার আগামী দুই বা তিন দিনের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি এবং গণভোটের ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

সরকারের সেই সিদ্ধান্ত বিএনপি বা আন্দোলনরত জামায়াত সমমনাদের বিপক্ষে যায় তাহলে ফের রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে নাকি আগেই সমঝোতা হবে তা এখন দেখার বিষয়।

বিকেপি/এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর