তালবাহানা না করে গণভোট দিন, সরকারকে এটিএম আজহারুল
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২১:৩৭
ছবি : বাংলাদেশের খবর
তালবাহানা না করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত গণভোট দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফেনী জেলা জামায়াত আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এটিএম আজহারুল বলেন, ‘আমরা সরকারকে বলছি এই মাসের মধ্যে গণভোট দিন, গণভোট নিয়ে তালবাহানা করবেন না। যারা জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে জুডিসিয়াল হত্যাকাণ্ড করে ভেবেছিল জামায়াতকে নিশ্চিতভাবে শেষ করে দিয়েছে। কিন্তু জামায়াত আছে, জামায়াত থাকবে ইনশাআল্লাহ। বরং আগের তুলনায় হাজার গুণ বেশী জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু যারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে, নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে, লাখ লাখ নেতাকর্মীকে জেলে আবদ্ধ রেখে শেষ করে দিতে চেয়েছিল, তারা আজ কোথায়? তারা জানে না জুলুম নির্যাতন চালিয়ে কোন আদর্শকে শেষ করা যায় না।’‘

তিনি বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে যে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হয়েছে দেশের ইতিহাসে তা যুগান্তকারী ঘটনা। এটি বাস্তবায়িত হলে এর মাধ্যমে দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং হারানো ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। ফলে আগের মত দিনের ভোট রাতে হবে না, ব্যালট বাক্স ছিনতাই করার সুযোগ থাকবে না। এই জন্য জুলাই সনদকে আইনে পরিণত করতে হবে। এর সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে জনগণ যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামীকে দেয় তবে শোষণহীন, বৈষম্যহীন একটি মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখা হবে। আমরা সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর নির্দেশিত পথে সততার সাথে জনগণের আমানত সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করব। তিনি আগামী নির্বাচনে দেশ ও সমাজে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসলামী শক্তির পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।’
তিনি বলেন, ‘অনেক দল আর নেতা দেখেছেন, এবার জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচিত করে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা করুন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনারা জামায়াত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে সরকারি বরাদ্দের আমানত জনগণের কল্যাণের কাজেই শুধু ব্যবহার হবে। জুলাই সনদের আইনি ব্যক্তি ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন হবে জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সাথে প্রতারণার শামিল। ফ্যাসিবাদি কাঠামো বহাল রেখে একটি যেনতেন নির্বাচন দেশের সমস্যা সমাধানের পথ নয় বলেও তিনি দাবি করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে তবে তার আগে সরকারকে অবশ্যই সকল দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।’
এ জামায়াত নেতা আরও বলেন, ‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জন আকাঙ্খাকে ধারণ করে জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তিকে আগে নিশ্চিত করতে হবে। গণহত্যায় জড়িত ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের দ্রুত বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। তারা যারা বার বার গণতন্ত্র হত্যা করেছে মানুষের ভোটের অধিকার ও বেঁচে থাকার অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে সেই স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। গণহত্যার দায়ে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।’
জেলা আমির মুফতি আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন-জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা অঞ্চল টিম সদস্য ও ফেনী-২ আসনের জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ও ফেনী-৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট এএসএম কামাল উদ্দিন।
ফেনী জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন- জেলা নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য অধ্যাপক আবু ইউসুফ, সদর উপজেলা আমির মাওলানা নাদেরুজ্জামান, শ্রমিক নেতা ফারুক আহমেদ আযাদ, ছাত্র শিবিরের শহর সভাপতি ওমর ফারুক, শহর জামায়াতের আমির ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম।
এর আগে সকালে ফেনীর দাগনভূঞায় পথসভা শেষে দুপুরে এটিএম আজহারুল ইসলাম জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মরহুম মকবুল আহমদের কবর জিয়ারত করেন। ওই বাড়ির দরজায় আঞ্জুবের নেছা ইসলামী এডুকেশন কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
- এম. এমরান পাটোয়ারী/এমআই

