তারেক রহমান
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে এখনও ভোটার হয়নি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, তিনি আগামী মাসের মধ্য ভাগে দেশে ফিরে ভোটার হবেন। নেতারা বলছেন, তারেক চাইলে লন্ডন থেকেও ভোটার হতে পারতেন, তবে তিনি নিজ দেশে এসে ভোটার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, বিএনপির চেয়ারম্যান লন্ডনে ভোটার হয়েছেন কিনা, তা কমিশন জানে না। তবে যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়লে যেকোনো সময়ে ভোটার হতে পারবেন।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘ইতোমধ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যেসব প্রার্থী ১৮ বছর পূর্ণ করেছেন, তারা নতুন ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তবে যারা বয়স বেশি বা আগে ভোটার ছিলেন, তারা বাদ পড়লে নির্বাচনের আগে ‘সাপ্লিমেন্টারি’ তালিকার মাধ্যমে ভোটার হতে পারবেন। নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে ভোটার হতে হবে।’
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রথমবারের মতো ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। সেই সময়ে তারেক রহমান ও স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান লন্ডনে ছিলেন। সম্প্রতি জোবাইদা দেশে ফিরে ভোটার হলেও তারেক এখনও আবেদন করেননি। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, দেশে ফিরে তিনি ভোটার হবেন।
ছবিযুক্ত ভোটার আইডি কার্ডের জন্য স্বাক্ষর, ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ বাধ্যতামূলক। দেশে ফিরে আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন তাকে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করবে।
দেশে ফেরার অপেক্ষায় দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে প্রবল আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণার পরপরই তিনি দেশে ফিরবেন বলে দলীয় সূত্রের দাবি। তারেকের দেশে ফেরার আগে ওমরাহ হজে যাওয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকে সরাসরি দেশে আসবেন তিনি। চার্টার্ড বিমানে দেশে ফেরার সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং দলীয় নিজস্ব ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে।
তারেক রহমান দেশে ফিরে গুলশান-২-এর ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন। বাড়িটি খালেদা জিয়ার ‘ফিরোজা’ ভবনের পাশের, যেখানে তিনি চেয়ারপারসনের কার্যালয় হিসেবে অফিসও করবেন। বাড়িটিকে উপযোগী করে সাজানো হয়েছে, সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন বিএনপির নিরাপত্তা বাহিনী।
দলীয় নেতা জানান, তারেকের ফেরার দিনকয়েক দিন আগে বিষয়টি প্রকাশ করা হবে। তিনি যেদিন ফিরবেন, সেদিন রাজধানীতে লাখ লাখ নেতাকর্মী ও সমর্থক স্বাগত জানাতে উপস্থিত হবেন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দিনটি ঐতিহাসিক হবে এবং নির্বাচনি প্রচারের অর্ধেকের বেশি কার্যক্রম তার উপস্থিতির সঙ্গে যুক্ত হবে।
তারেক রহমান ১৭ বছর ধরে লন্ডনে আছেন। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হন। কারাগারে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান। পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডনে যান এবং সেখান থেকেই দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।

