ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় গেলে দেশে চাঁদাবাজি-খুনাখুনি থাকবে না : চরমোনাই পীর
বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:০৬
ছবি : বাংলাদেশের খবর
আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শাসন অভিজ্ঞতার পর জনগণকে ইসলামী শাসন দেখার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
তিনি বলেন, ‘আপনারা অনেক শাসন দেখেছেন, এবার ইসলামকে সুযোগ দিন। আমরা একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী ও ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র উপহার দেবো, ইনশাআল্লাহ।’
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বরিশালের বেলস পার্ক মাঠে ৫ দফা দাবিতে সমমনা ৮টি ইসলামী দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। জনসমাগমে মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের সড়কেও মানুষের ঢল নামে।
চরমোনাই পীর অভিযোগ করেন, ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় গেলে ‘চাঁদাবাজি, অবিচার ও খুনাখুনি থাকবে না; দেশের টাকা বিদেশে পাচার হবে না।’
দুর্নীতিবাজ ও ক্ষমতালোভীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যারা মুখরোচক কথায় জনগণকে ধোঁকা দিয়ে মায়ের বুক খালি করেছেন, অর্থ পাচার করেছেন এবং দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন—বাংলার মাটিতে তাদের আর জায়গা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাসিনা বলেছিলেন ‘শেখ হাসিনা পালায় না’, কিন্তু রান্না করা খাবার খেয়ে যেতে পারেননি। এ থেকে শিক্ষা নিন, পরিবর্তন হোন—না হলে এমন পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকুন।’
বক্তব্য শেষে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও জামায়াতে ইসলামের নেতা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের সুস্থতা কামনায় দোয়া করেন।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আগে পীর সাহেবদের রাজনীতি পছন্দ করতাম না। কিন্তু আজ মনে হলো তিনি কেবল পীর নন, এ দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার একজন মহাবীর।’
তিনি দাবি করেন, ৮ দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। তার ভাষায়, ‘আমরা মানব-রচিত আইন বা সংবিধান চাই না; মদিনার সনদে দেশ চালাতে চাই। সংস্কারের মাধ্যমে সংবিধান থেকে ইসলামবিরোধী ধারা বাতিল করতে হবে।’
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘বাংলাদেশে ইসলামী হুকুমত কায়েম হলে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই শান্তিতে ও স্বাধীনভাবে বসবাস করবে।’
তিনি যোগ করেন, ‘কেউ খাবে আর কেউ না খেয়ে থাকবে—এমন বৈষম্য থাকবে না। এই সমাবেশ দেখে কেবল জালিম ও চাঁদাবাজরাই নাখোশ হতে পারে, মুক্তিকামী মানুষ আশার আলো দেখছে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাসির আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, নেজামে ইসলাম পার্টির আমির মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী এবং ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চানসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এআরএস

