১৬ ডিসেম্বর জাতির এক মহাকাব্যিক দিন : তারেক রহমান
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:৪২
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মহান বিজয় দিবসকে জাতির অহংকার, আনন্দ ও বেদনার এক মহাকাব্যিক দিন হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, ১৯৭১ সালে মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র এখনো চলমান। আগ্রাসী শক্তি ও তাদের দেশীয় এজেন্টরা স্বাধীনতাকে বিপন্ন করার জাল বুনে যাচ্ছে।
আগামীকাল মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বিজয় অর্জিত হয়। তিনি জীবনবাজি রেখে বিজয় ছিনিয়ে আনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান।
স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করে তিনি বলেন, নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তিনি শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, শোষণমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয় ছিল নতুন বাংলাদেশের মূল চেতনা। কিন্তু অমানবিক ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী বারবার সেই প্রত্যয়কে মাটিচাপা দিয়ে দুঃশাসন কায়েম করেছে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে একের পর এক প্রহসনের একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে জনমতকে উপেক্ষা করা হয়েছে। দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সংবাদপত্র ও বাকস্বাধীনতা নিরুদ্দেশ করা হয়েছে। গণতন্ত্রহীন দেশে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার দাপটে ভয়, হতাশা ও নৈরাজ্য ছড়িয়ে পড়ে এবং অসংখ্য মানুষকে হত্যা, গুম ও মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী করা হয়।
তারেক রহমান আরও বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করা এক অবিসংবাদিত নেত্রীকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে অন্ধকার কারাগারে রাখা হয়েছিল। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে শাসকগোষ্ঠী ধারাবাহিকভাবে গণবিরোধী পদক্ষেপ নেয়।
তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবসের প্রেরণায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শক্তির পরাজয় ঘটে এবং ইতিহাসের এক নিষ্ঠুর একনায়কের পতন হয়। এর মধ্য দিয়ে দেশে আবার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে বিজয় দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হোক— বিভাজন ও হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করে তারেক রহমান দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা জানান এবং সবার জীবনে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন।

