ঢাকায় প্রতি ৪০ মিনিটে বিবাহবিচ্ছেদ, যা বলছেন আজহারী ও শায়খ আহমাদুল্লাহ
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:২০
ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে ৪টি এবং প্রতি ৪০ মিনিটে একটি সংসার তালাকের মাধ্যমে ভেঙে পড়ছে; এই উদ্বেগজনক তথ্য সামনে রেখে দেশের দুই প্রখ্যাত ইসলামি আলোচক মিজানুর রহমান আজহারী ও শায়খ আহমাদুল্লাহ তালাকের ভয়াবহ সামাজিক পরিণতি ও এর বিকল্প পথ নিয়ে জরুরি সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকাতেই প্রতি বছর ১,৪০০-এর বেশি তালাক নিবন্ধিত হয়। সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে, রাজধানীতে প্রতিদিন প্রায় ৩৭টি দাম্পত্য সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটছে। এই ভাঙনের পেছনে পশ্চিমা ভোগবাদী দর্শন, পারস্পরিক অবিশ্বাস, সন্দেহপ্রবণতা, একে অপরের হকের প্রতি উদাসীনতা এবং অবৈধ সম্পর্ককে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে এক ফেসবুক পোস্টে ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘বিচ্ছেদ কোনো সমাধান নয়, বরং স্বস্তির আবরণে মোড়া দীর্ঘ অনুতাপ ও অন্তহীন আত্মিক যন্ত্রণার সূচনা।’ তিনি সমস্যা সনাক্ত করে যৌক্তিক সমাধানের পথে হাঁটার ওপর জোর দেন।
আজহারী সহিহ মুসলিমের একটি হাদিস উল্লেখ করে বলেন, ‘শয়তান খুব খুশি হয় যখন কোনো ঈমানদারের সুখী দাম্পত্য জীবন ভাঙতে পারে।’ হাদিসে বর্ণিত আছে, শয়তান তার অনুচরদের মধ্যে তাকে বিশেষ মর্যাদা দেয় যে কারো দাম্পত্য জীবন ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। তিনি কোরআনের সুরা বাকারার ২০৮ নম্বর আয়াত উদ্ধৃত করে মুসলিমদের শয়তানের ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানান।
একইভাবে শায়খ আহমাদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘তালাক কোনো প্রশংসনীয় কাজ নয়; বরং নিরুপায় অবস্থায় একটি বিষাক্ত সম্পর্ক থেকে বের হওয়ার শেষ উপায়।’ তিনি জোর দেন, ‘ভাঙার আগে একবার নয়, শতবার ভাবা উচিত- সংশোধনেই সমাধান, বিচ্ছেদে নয়।’
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘তালাকের নির্মম বলি হয় সন্তানরা। বাবা-মার বিচ্ছেদের মানসিক আঘাত তারা সারাজীবন বয়ে বেড়ায়।’
শায়খ আহমাদুল্লাহ তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ হয়তো মনে হচ্ছে একা থাকাই স্বস্তির, কিন্তু এই তারুণ্য স্থায়ী নয়। বার্ধক্যে যখন একলা বিছানায় অসুস্থ হয়ে কাতরাবেন, তখন পাশে মাথায় রাখার মতো একটি ভালোবাসার হাতও পাবেন না।’
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকা তালাকের হার সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি। পারিবারিক বন্ধন রক্ষায় ধর্মীয় সচেতনতার পাশাপাশি দাম্পত্য কাউন্সেলিং সেবার প্রসার ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি।
আইএইচ/

