প্রধান উপদেষ্টার প্রেস বার্তায় কওমি মাদরাসাকে হেয় করায় ছাত্র জমিয়তের প্রতিবাদ
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:১০
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বার্তায় কওমি মাদরাসা শিক্ষাকে আলাদাভাবে উল্লেখ করে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ।
সম্প্রতি জাতীয় পর্যায়ের দুটি গণমাধ্যমের কার্যালয়ে সংঘটিত হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রেস বার্তায় নাশকতার অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে দুঃখজনকভাবে শুধুমাত্র কওমি মাদরাসা শিক্ষার পরিচয় আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়। অথচ একই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া অপর আটজনের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বা শিক্ষাগত পরিচয় সেখানে উল্লেখ করা হয়নি।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি রিদওয়ান মাযহারী এবং সাধারণ সম্পাদক সাআদ বিন জাকির বলেন, এভাবে একতরফাভাবে কোনো অপরাধীর সঙ্গে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়কে সামনে আনা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কওমি মাদরাসা শিক্ষাকে সামাজিকভাবে হেয় করার একটি সুপ্ত ও প্রচ্ছন্ন প্রয়াস বলেই প্রতীয়মান হয়।
তারা আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বক্তব্যে এমন পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি গভীরভাবে উদ্বেগজনক। অপরাধের দায় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত; তা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দলীয় পরিচয় কিংবা সামাজিক শ্রেণির ওপর আরোপ করা ন্যায়সংগত নয়।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় জোরালোভাবে দাবি জানান, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধী ও উস্কানীদাতাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে ব্যক্তির অপরাধের দায়ে কোনো শ্রেণি বা শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করার অপচেষ্টা থেকে রাষ্ট্রকে বিরত থাকতে হবে। সহিংসতায় জড়িত নয় এমন নিরীহ শিক্ষার্থীদের ঢালাওভাবে হয়রানি বন্ধ করারও আহ্বান জানান তারা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এ ধরনের সামাজিক শ্রেণিবৈষম্য চরম অপেশাদারিত্ব ও গর্হিত আচরণের শামিল। অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট প্রেস বার্তার ব্যাখ্যা ও সংশোধন করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের দায়িত্বহীন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড পরিহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়াও ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, ফ্যাসিবাদী আমলের ন্যায় বাকস্বাধীনতা দমনের যে দুঃসাহসিক প্রয়াস অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গ্রহণ করতে যাচ্ছে; তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শুধুমাত্র সমালোচনার অজুহাতে কোনো ধরনের ওয়ারেন্ট ছাড়াই আলেমদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেশে নতুন করে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটাতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
আইএইচ/

