Logo

ধর্ম

মুসলিম মনীষী

শত্রুকেও হাসিমুখে আপন করে নিতেন আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী

Icon

আলাউদ্দীন বিন সিদ্দীক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ২০:২২

শত্রুকেও হাসিমুখে আপন করে নিতেন আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী

আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী (রহ.) ছিলেন এমন এক অনন্য মানবিক চরিত্র, যিনি জীবনব্যাপী সদাচার, সহিষ্ণুতা ও সৌহার্দ্যের আলোকবর্তিকা হয়ে ছিলেন। বৈরিতা বা মতপার্থক্য কখনোই তাকে বিচলিত করতে পারেনি। বরং শত্রুকেও হাসিমুখে আপন করে নেওয়াই ছিল তার স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য।

রাজনৈতিক অঙ্গনের কঠিন সময়গুলোতেও তিনি ছিলেন নম্রতা, ধৈর্য ও মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েও তিনি ব্যক্তিগত সম্পর্ক নষ্ট করতেন না, বরং উষ্ণ ব্যবহার দিয়ে প্রতিপক্ষের হৃদয় জয় করতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, পার্থিব শত্রুতা ক্ষণস্থায়ী; সত্য, সদাচার আর মানবিকতাই চিরস্থায়ী।

আল্লামা হাফেজ্জী (রহ.) ইসলামের মহান আদর্শ ধারণ করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন করেছিলেন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের অনুকরণে তিনি দুশমনকেও দাওয়াত ও সদাচরণের মাধ্যমে আপন করে নেওয়ার পথে অগ্রসর হতেন। তিনি কখনো কঠোর ভাষায় কারো সমালোচনা করতেন না; বরং পিতৃস্নেহে ভুল সংশোধনের চেষ্টা করতেন।

আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী (রহ.)-এর মানবিকতা আরেকটি উজ্জ্বল রূপ পেয়েছিল নির্দোষ কারাবন্দী আলেমদের মুক্তির সংগ্রামে। তিনি মনে করতেন, আলেমদের অন্যায়ভাবে বন্দি রাখা গোটা জাতির জন্য বিপদসংকেত।

তিনি বলতেন, ‘আল্লাহর দ্বীন প্রচার করা অপরাধ নয়’ বরং শ্রেষ্ঠ দায়িত্ব। যারা অন্যায়ভাবে আলেমদের কারাগারে রেখেছে, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, নতুবা জাতির ওপর আল্লাহর গজব নেমে আসবে।’

তিনি আরও বলতেন, ‘কারাগার কোনো আলেমের স্থান নয়; তাদের জায়গা মিম্বর, মিহরাব এবং জাতির নেতৃত্বের আসনে।’

এই গভীর অনুভব থেকেই তিনি নিরলস চেষ্টা করতেন বন্দি আলেমদের মুক্তির জন্য। প্রকাশ্য সভা-সমাবেশে যেমন তিনি দৃপ্ত কণ্ঠে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেন, তেমনি ব্যক্তিগতভাবে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের মাধ্যমেও মুক্তির জন্য উদ্যোগী হতেন।

আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী (রহ.)-এর এই আপসহীন মানবিক ভূমিকা তাকে শুধু সময়ের নেতা নয়; বরং মানবতার প্রতিনিধি করে তুলেছিল।

চলতি মাসের প্রথম শুক্রবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং অবশেষে ৭৭ বছর বয়সে পরপারে চলে যান। তার মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে পড়ে পুরো ধর্মীয় অঙ্গন এবং তার অগণিত শিষ্য ও অনুসারী।

ডিআর/বিএইচ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর