নারীরা যে কাজে জিহাদের সওয়াব পাবেন
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১১:৫০

এআই দিয়ে তৈরি ছবি
হাদিস শরিফ থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, জিহাদ তথা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করা সর্বোত্তম আমল। মুজাহিদদের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করবে, অতঃপর সে নিহত হোক কিংবা বিজয়ী হোক, অচিরেই আমি তাকে দেব মহাপুরস্কার।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৭৪)
ইসলামি শরিয়তে জিহাদ শুধুমাত্র পুরুষের ওপর ফরজ। বিভিন্ন হাদিস থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, নারীদের ওপর জিহাদ ফরজ নয়। অথচ, সব যুগের মুমিন নারীদেরই জিহাদের প্রতি আগ্রহের কথা জানা যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- তাহলে কি জিহাদের মতো সর্বোত্তম আমলের ফজিলত শুধু পুরুষরাই লাভ করবে?
আসলে এই প্রশ্নের উত্তর হবে- ‘না’। জিহাদের ফজিলত শুধু পুরুষরাই লাভ করবে না; বরং নারীরাও জিহাদের সওয়াব লাভ করতে পারবেন ভিন্ন একটি আমলে, সেটি হলো- পবিত্র হজ। হজ আদায়ের মাধ্যমে তারা জিহাদের ফজিলত অর্জন করতে পারবেন। ইমাম বুখারী (রহ.) নারীদের হজের অধ্যায়ের শিরোনাম দিয়েছেন ‘জিহাদুন নিসা’। মানে নারীদের হজ করাটাই জিহাদে অংশগ্রহণের সমান।
এ প্রসঙ্গে উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে জিহাদের অনুমতি চাইলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমাদের জিহাদ হলো হজ।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৭৫)
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বুখারির আরেক বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমরা দেখছি জিহাদ সর্বোত্তম আমল। আমরাও জিহাদে যেতে চাই। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, (তোমাদের জন্য) সর্বোত্তম জিহাদ হলো হজ্জে মাবরুর।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫২০)
আরেক হাদিসে এসেছে- উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! নারীদের ওপর কি জিহাদ আছে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হাঁ, এমন জিহাদ যাতে কোনো লড়াই নেই- হজ ও ওমরাহ।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯০১)
নারীদের জিহাদের ফজিলত লাভ করার আগ্রহকে রাসুল (সা.) স্বাগত জানিয়েছেন। তবে সাথে সাথে বলে দিয়েছেন, কোন আমল করলে তারা সর্বোত্তম আমল জিহাদের ফজিলত লাভ করতে পারবে। জিহাদের মধ্যে যেমন অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়, তেমনি হজের মধ্যেও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হতে হয়। এই কষ্ট সহ্য করে ধৈর্যের সাথে যদি নারীরা হজ আদায় করেন, তাহলে তারাও জিহাদের ফজিলত লাভ করবেন।
উপরোক্ত হাদিসগুলোতে সামর্থ্যবান নারীদের বেশি বেশি হজ করার ফজিলতের প্রতিও ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আরেক বর্ণনায় এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি আপনাদের সাথে জিহাদে বের হব না? তখন রাসুল (সা.) বললেন, (না, তোমাদের জন্য) উত্তম ও সুন্দর জিহাদ হজ, মাবরূর হজ। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ কথা শোনার পর থেকে আমি হজ ছাড়িনি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮৬১)
ডিআর/বিএইচ
সম্পর্কিত
পঠিত
মন্তব্য করুন