Logo

ধর্ম

দোয়া হোক কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য

Icon

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১২:০৪

দোয়া হোক কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য

ইসলামে দোয়া হলো ইবাদতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দোয়া মানে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা, সাহায্য চাওয়া এবং তাঁর রহমত কামনা করা। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমার প্রতিপালক বলেন- তোমরা আমাকে ডাকো, আমি (তোমাদের ডাকে) সাড়া দেব। যারা অহংকারবশতঃ আমার ইবাদাত করে না, নিশ্চিতই তারা লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সূরা গাফির: ৬০)

এই আয়াত প্রমাণ করে যে, দোয়া হলো সরাসরি আল্লাহর সাথে যোগাযোগের মাধ্যম। ইসলামের দৃষ্টিতে দোয়া কখনোই কোনো পার্থিব স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে কিংবা কোনো মানুষকে খুশি করার জন্য করা উচিত নয়। কারণ দোয়া হলো খাঁটি ইবাদত, আর ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্যই নিবেদিত হতে হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ইবাদতের মূল বা সার।’ (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৭১)

এ হাদিসের আলোকে বোঝা যায়, দোয়া কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হতে হবে। মানুষের সামনে প্রদর্শন বা তাদের খুশি করার জন্য দোয়া করা হলে, তাতে রিয়া বা লোক দেখানোর মানসিকতা চলে আসে, যা ইবাদতকে নষ্ট করে দেয়।

আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন- ‘নিশ্চয় মুনাফিকগণ আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে, তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলে শাস্তি দেন এবং তারা যখন নামাজের জন্য দাঁড়ায়, তখন শৈথিল্যভরে দাঁড়ায়, লোক দেখানোর জন্য, তারা আল্লাহকে সামান্যই স্মরণ করে।’ (সূরা নিসা: ১৪২)

ইসলামে রিয়ার কোনো স্থান নেই। কেননা, তা হলে ইবাদত খাঁটি থাকে না। যেমন কেউ যদি দোয়া করে এই ভেবে যে লোকেরা তাকে ধার্মিক বলবে, অথবা কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তিকে খুশি করার জন্য দোয়া করে, তবে তার সেই দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হয় না। বরং তা গোনাহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

রাসুল (সা.) আরো সতর্ক করে বলেছেন- “আমি তোমাদের জন্য যা সবচেয়ে বেশি ভয় করি, তা হলো ছোট শিরক। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘ছোট শিরক কী, হে আল্লাহর রাসুল?’ তিনি বললেন, ‘রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদত।” (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২৩৬৩০)

সেজন্য দোয়া করার সময় একমাত্র নিয়ত থাকতে হবে যে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও তাঁর রহমত লাভ। দোয়ার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করে এবং তাঁর দয়া ভিক্ষা করে। এই বিনয়ই দোয়ার আসল সৌন্দর্য।

এছাড়া, আল্লাহ তায়ালা কুরআনে দোয়ার সঠিক রূপ তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন- ‘তোমরা তোমাদের রবকে ডাক অনুনয় বিনয় করে ও চুপিসারে। নিশ্চয় তিনি পছন্দ করেন না সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে।’ (সূরা আরাফ: ৫৫)

এই আয়াত স্পষ্ট করে যে দোয়া গোপন, আন্তরিক ও খাঁটি নিয়তে হতে হবে। মানুষের খুশির জন্য প্রকাশ্যে দোয়া করা, স্বার্থসিদ্ধির জন্য আল্লাহর কাছে হাত তোলা- এসব ইসলাম অনুমোদন করে না।

সুতরাং, দোয়া হলো বান্দার সঙ্গে প্রভুর গভীর সম্পর্কেরনিদর্শন। এটি কোনো লেনদেন কিংবা মানুষকে তুষ্ট করার মাধ্যমও নয়। তাই আমাদের সব দোয়া হওয়া উচিত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, তাঁর রহমত ও মাগফিরাত লাভের জন্য। তখনই দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকবে।

আইএইচ/

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর