
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র রওজা শরীফের ওপর নির্মিত মসজিদে নববির সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপত্য হলো সবুজ গম্বুজ। এটি ‘গামবাদ ই খাযরা’ নামেও পরিচিত। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এ গম্বুজকে ঘিরে আছে নানা ইতিহাস ও বিস্ময়কর ঘটনা, যার অনেকটাই আজও অজানা থেকে গেছে অনেকের কাছে। বাংলাদেশের খবরের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো পবিত্র ও ঐতিহাসিক এই সবুজ গম্বুজের এমন ছয়টি অজানা তথ্য-
১। ৯০০ হিজরি (১৪৮১ খ্রিস্টাব্দ) সালের প্রথম দিকে মসজিদে নববির গম্বুজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে সম্পূর্ণ গম্বুজ পুড়ে যায় এবং মসজিদের ভেতরের দেয়াল ও প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে পরবর্তীতে তা পুনর্গঠন করে আবারও নতুন রূপে দাঁড় করানো হয়।
২। ৬৭৮ হিজরির পূর্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র সমাধির ওপর কোনো গম্বুজ ছিল না। ৬৭৮ হিজরিতেই আল-নাসির হাসান ইবনে মুহাম্মদ কালায়ুন সর্বপ্রথম কাঠের তৈরি একটি গম্বুজ নির্মাণ করেন, যা ইতিহাসে প্রথম গম্বুজ হিসেবে খ্যাতি পায়।
৩। সেই যুগে অভিজাত ও সম্ভ্রান্তরা নিজেদের কিংবা প্রিয়জনদের সমাধি অলঙ্কৃত করতেন সোনা, রূপা, মুক্তা, হীরা-জহরতে। অথচ প্রিয়নবির রওজা পাকের ওপর নির্মিত গম্বুজটি সাধারণ কাঠামোয় নির্মিত- কোনো জাঁকজমকপূর্ণ কারুকাজ ছাড়াই। এর সরলতাতেই লুকিয়ে আছে মহিমান্বিত সৌন্দর্য।
৪। রওজা শরীফের ঠিক উপরের অংশের গম্বুজে একটি জানালা রয়েছে। অনেকেই এ জানালাকে ঘিরে নানা ভিত্তিহীন কাহিনি রটনা করেন, যেমন, কেউ নাকি গম্বুজ ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছিল। বাস্তবে এ জানালাটি গম্বুজের প্রারম্ভকাল থেকেই স্থাপিত, যার রয়েছে কেবল স্থাপত্যিক গুরুত্ব।
৫। মসজিদে নববির এই গম্বুজটি শুরু থেকেই সবুজ ছিল না। প্রথমে কাঠের কাঠামোয় বাদামী রঙে ছিল এটি। পরবর্তীতে তা সাদা, তারপর নীল ও বেগুনি রঙে রঞ্জিত হয়। অবশেষে অটোমান সুলতানের নির্দেশে ১২৫৩ হিজরিতে গম্বুজটি সবুজ রঙে রঞ্জিত করা হয়, যা আজও সেই অপরূপ রূপে জ্বলজ্বল করছে।
৬। অনেকে মনে করেন সাধারণ লোকজনই গম্বুজটি পরিষ্কার করেন। কিন্তু বাস্তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওজা শরীফের ওপর অবস্থিত এই মহিমান্বিত গম্বুজের পরিচ্ছন্নতার জন্য নির্দিষ্ট কিছু লোক নিযুক্ত আছেন, যাদের বলা হয় ‘ইউনুস’। বর্তমানে পাঁচজন ইউনুস এ দায়িত্ব পালন করছেন।
আইএইচ/