বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ডে আত্মহত্যার প্রবণতা কেন বেশি?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:২০

ইউরোপের দেশ ফিনল্যান্ড টানা পাঁচবার বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রায় ৫৫ লাখ মানুষের দেশটি প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা। এ দেশের অরণ্যকে বলা হয় ‘সবুজ সোনা’। শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি- সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে আছে দেশটি। অপরাধের হারও নিতান্তই কম।
তবুও প্রশ্ন থেকে যায়- এত উন্নত, শান্তিপূর্ণ ও সুখী দেশ হয়েও কেন ফিনল্যান্ডে আত্মহত্যার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে বেশি? বিশ্ব পরিসংখ্যান বলছে, আত্মহত্যার হারের দিক থেকে দেশটি পৃথিবীতে ২১তম স্থানে রয়েছে।
একই চিত্র দেখা যায় জাপান ও কোরিয়াতেও। বিশ্বের সবচেয়ে ভদ্র জাতি হিসেবে খ্যাত জাপানিরা কিংবা প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকা কোরিয়ানরা- তাদের সমাজেও আত্মহত্যার হার অত্যন্ত বেশি।
এ বিষয়ে সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে খোলামেলা আলোচনা করেছেন প্রথিতযশা আলেম ও স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ। প্রখ্যাত এই আলেম বলেন, ‘সবকিছু থাকা সত্ত্বেও মানুষ যখন বাঁচতে চায় না, তখন আসল কারণটা হলো মানসিক প্রশান্তির অভাব।’
তিনি সৌদি আরবে থাকাকালীন সময়ে আরবি একটি গ্রন্থ ‘রাব্বি আল্লাহ’ বাংলায় অনুবাদ করেন। সেখানে একটি জরিপভিত্তিক গ্রাফ তুলে ধরা হয় যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পৃথিবীতে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ধর্মে অবিশ্বাসী নাস্তিকদের মধ্যে। আর সবচেয়ে কম আত্মহত্যা ঘটে মুসলমানদের মধ্যে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, বুখারি শরিফের ৬৪৪৬ নাম্বার হাদিসে এসেছে- ‘নবী করীম (সা.) বলেছেন, আসল সচ্ছলতা বস্তুগত প্রাচুর্যে নয়; বরং মানসিক প্রশান্তিতেই নিহিত। যার মন শান্ত, তিনিই প্রকৃত সুখী।’
শায়খ আহমাদুল্লাহর মতে, আত্মহত্যার প্রধান কারণ হলো ধর্ম ও ইসলামের চর্চা থেকে দূরে সরে যাওয়া। আগে সমাজে ইসলামী চর্চা থাকায় মানুষ কষ্টের মধ্যেও সুখী ছিল। অথচ আজ ডিপ্রেশন ঘরে ঘরে বাসা বেঁধেছে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, ‘ঈমান কেবল আখেরাতে নয়, দুনিয়াতেও সুখী করে। বিশেষত নামাজ হলো মানুষের প্রশান্তির মূলমন্ত্র। যে ব্যক্তি খুশু-খুজুর সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ পড়বে, সে দেখবে তার মনের ভার অনেকটা হালকা হয়ে গেছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা ভ্রমণ, বিনোদন, ভোগে প্রশান্তি খুঁজি। এগুলোতে কিছুটা প্রশান্তি থাকলেও, একজন ঈমানদার নামাজে যে প্রশান্তি পান, তা অন্য কোথাও নেই।’
শায়খ আহমাদুল্লাহ মুসলিম সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কখনো কম্প্রোমাইজ করবেন না। জীবনে নামাজ যে স্বাদ, তৃপ্তি ও প্রশান্তি এনে দিতে পারে, তা আর কোথাও পাওয়া যাবে না।’
আইএইচ/