
মানুষ তার জীবনে নানা রোগ-ব্যাধি ও বালা-মুসিবতের সম্মুখীন হয়। এগুলো শুধুই যে কষ্ট ও দুর্ভোগ তা নয়; বরং মুমিনের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা, গুনাহ মাফের উপায় ও জান্নাতের পাথেয়। কুরআন ও হাদিসে এ বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। (সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত : ১৫৫)
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে সকল ক্লান্তি, যাতনা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, কষ্ট, কঠিন দুশ্চিন্তা ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমন কি যে কাঁটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এ সবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন’ (সহিহ বোখারি, হাদিস : ৫৬৪১-৬৫৪২)
বালা মুসিবতের সময় মুমিনের করণীয় হল ধৈর্য ধারণ করা। সেজন্যই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মু’মিনগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত : ১৫৩)
রোগব্যাধির সময় আল্লাহর নিকট আরোগ্য কামনা করে প্রার্থনা করতে হবে। যেমন হযরত আইউব (আ.) দুআ করেছিলেন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আর স্মরণ কর আইউবের কথা, যখন সে তার রবকে আহবান করে বলেছিল, ‘আমি দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়েছি। আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত : ৮৩) আল্লাহ সাথে সাথে তাকে আরোগ্য দান করেছিলেন।
কষ্টের মাঝেও মুমিনের উচিত আল্লাহর নেয়ামত মনে রেখে কৃতজ্ঞ থাকা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যে রোগ সৃষ্টি করেছেন, তার প্রতিষেধকও সৃষ্টি করেছেন।’ (তিরমিযী শরিফ, হাদিস : ২০৩৮)
রোগ ও মুসিবতে মুমিনের প্রতি আল্লাহর বিশেষ রহমত থাকে। হাদিসে এসেছে, ‘যখন আল্লাহ বান্দার জন্য কল্যাণ চান, তখন তিনি তাকে দুনিয়াতে বিপদে ফেলেন।’ (তিরমিযী শরিফ, হাদিস : ২৩৯৬)
রোগব্যাধি ও বালা-মুসিবত মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মুমিনের জন্য এগুলো আল্লাহর পরীক্ষা, গুনাহ মাফের উপায় এবং জান্নাতের পথে সহায়ক। তাই বিপদে হতোদ্যম না হয়ে ধৈর্য, দোয়া, শোকর ও আল্লাহর উপর ভরসা রাখা মুমিনের প্রধান করণীয়। কেননা বান্দার জন্য আল্লাহর রহমতই হলো শেষ আশ্রয়।
আইএইচ/