
মানব জীবনে ঈমান হলো আধ্যাত্মিক শক্তির মূল ভিত্তি। ইসলাম সেই ঈমানকে বহুমাত্রিকভাবে উপস্থাপন করেছে। এ ঈমানের মাধ্যমেই একজন মানুষ প্রকৃত মুসলমান হিসেবে পরিচিতি পায়। শুধু মুখের উচ্চারণ নয়, বরং অন্তরের বিশ্বাস ও কর্মের প্রতিফলনেই এর পূর্ণতা আসে।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ঈমানের সত্তরটিরও অধিক শাখা রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোত্তম শাখা হলো- ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা, আর সর্বনিম্ন হলো- রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক কিছু অপসারণ করা। আর লজ্জা ঈমানের অন্যতম শাখা। (সহীহ্ বোখারি ও মুসলিম)
এই হাদিসের মাধ্যমে বোঝা যায়, ইসলামে ঈমান একটি বহুমাত্রিক কাঠামো। শুধু মুখে স্বীকৃতি নয়, বরং অন্তরের বিশ্বাস, চরিত্রের সৌন্দর্য এবং সমাজে ইতিবাচক অবদান- সবই ঈমানের পরিপূর্ণতার অংশ।
হযরত আবু বকর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সেই কালেমাকে কবুল করবে যা আমি আমার চাচা আবু তালেবের নিকট মৃত্যুর সময় উপস্থাপন করেছিলাম, অথচ তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন- এই কালেমা সেই ব্যক্তির মুক্তির কারণ হবে।’ (মুসনাদে আহমদ)
এই কালেমাটি হলো- ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই।
ইসলামের মূলভিত্তি দাঁড়িয়ে আছে এই কালেমার উপর। কেউ যদি সঠিকভাবে এ কথা মেনে নেয় এবং জীবনে বাস্তবায়ন করে, তবে তার ঈমানের ভিত্তি সুদৃঢ় হয়।
হাদিসে বলা হয়েছে, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেওয়াও ঈমানের একটি শাখা। অর্থাৎ, ঈমান শুধু মসজিদের মেহরাবেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং মানুষের কল্যাণেও প্রতিফলিত হয়। সামাজিক দায়িত্ব, অন্যের উপকার, পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা- এসবও ঈমানের অংশ।
‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এই বাক্যটি একজন মুসলমানের জীবন দিশারি। এ কালেমা ছাড়া ঈমান পূর্ণ হয় না, আর মুসলমান হওয়াও সম্ভব নয়। তাই সর্বোত্তম যিকির হলো এই কালেমা, যা হৃদয়কে আলোকিত করে, কর্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করে এবং আখিরাতে মুক্তির কারণ হয়।
আইএইচ/