Logo

ধর্ম

কোরআনের যেই ৬ আয়াত পাঠে রোগমুক্তি লাভ হবে

Icon

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪০

কোরআনের যেই ৬ আয়াত পাঠে রোগমুক্তি লাভ হবে

মানুষ অসুস্থ হলে সুস্থ করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হাতেই। তবে বান্দাকে চেষ্টা করতে হয়- আল্লাহর কাছে দোয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়। এভাবে অসুস্থতা একজন মুমিনের জন্য আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম হয়ে ওঠে। ধৈর্য ধারণ করলে এ থেকে সওয়াবও মেলে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে কোনো মুসলিম দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়- তা যদি একটি কাঁটা বিঁধা কিংবা আরও ক্ষুদ্র কিছু হয়- তবুও এর মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন, যেমন গাছ থেকে পাতাগুলো ঝরে পড়ে।’ (সহিহ বুখারি: ৫৬৪৮)

অতএব, রোগাক্রান্ত হলে প্রথমেই আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে, তারপর চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। আর চাইলে কোরআনের বিশেষ কিছু আয়াত পড়েও শিফার দোয়া করা যায়। পবিত্র কোরআনে ৬টি আয়াতকে আয়াতে শিফা বা রোগমুক্তির আয়াত বলা হয়। সাধারণত এগুলো পড়ার আগে সুরা ফাতিহা পড়ে নেওয়া উত্তম।

রোগমুক্তির আয়াতসমূহ 

১. সুরা তাওবা, আয়াত ১৪

উচ্চারণ: ওয়া ইয়াশফি ছুদূরা কাওমিম মু’মিনীন।

অর্থ: আর আল্লাহ মুমিনদের অন্তরসমূহ শান্ত করে দেন।

২. সুরা ইউনুস, আয়াত ৫৭

উচ্চারণ: ওয়া শিফাউল লিমা ফিস্-ছুদূর, ওয়া হুদাওঁ ওয়া রাহমাতুল লিল মু’মিনীন।

অর্থ: এতে অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত রয়েছে মুমিনদের জন্য।

৩. সুরা নাহল, আয়াত ৬৯

উচ্চারণ: ইয়াখরুজু মিম্ বুতূনিহা শারাবুম মুখতালিফুন আলওয়ানুহু, ফীহি শিফাউঁ লিন্নাস।

অর্থ: তার (মৌমাছির) পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়, যাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার।

৪. সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৮২

উচ্চারণ: ওয়া নুনায্যিলু মিনাল কুরআনি মা হুয়া শিফাউঁ ওয়া রাহমাতুল লিল মু’মিনীন।

অর্থ: আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের আরোগ্য এবং মুমিনদের জন্য রহমত।

৫. সুরা আশ্-শোআরা, আয়াত ৮০

উচ্চারণ: ওয়া ইযা মারিদতু ফাহুয়া ইয়াশফীন।

অর্থ: আর যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আমাকে আরোগ্য দান করেন।

৬. সুরা হা-মীম সেজদাহ (ফুসসিলাত), আয়াত ৪৪

উচ্চারণ: কুল হুয়া লিল্লাযীনা আ-মানূ হুদাঁওঁ ওয়া শিফা।

অর্থ: বলুন, এটা মুমিনদের জন্য হেদায়েত ও রোগমুক্তি।

দোয়া ও শিফা সম্পর্কিত হাদিস

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল হয়, যতক্ষণ না সে তাড়াহুড়া করে বলে- ‘আমি দোয়া করলাম, কিন্তু কবুল হলো না।’ (সহিহ বুখারি: ৬৩৪০)

আরেক হাদিসে হযরত জাবির (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ তা দান করেন, অথবা তদনুযায়ী তার কোনো অমঙ্গল প্রতিহত করেন। তবে শর্ত হলো, সে যেন পাপ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া না করে।’ (তিরমিজি)

আরেক বর্ণনায় রাসূল (সা.) বলেন, ‘যদি কেউ চায় যে বিপদের সময় তার দোয়া কবুল হোক, তবে সে যেন সুখের দিনগুলোতে বেশি বেশি দোয়া করে।’ (তিরমিজি: ৩৩৮২)

হযরত সালমান (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া আর কিছুই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে না, আর নেক আমল ছাড়া আর কিছুই আয়ু বৃদ্ধি করতে পারে না।’ (তিরমিজি: ২১৩৯)

সুতরাং, রোগ-ব্যাধি মুমিনের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। ধৈর্য ধারণ করলে এর মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয়, আর দোয়া করলে আল্লাহর রহমত ও শিফা লাভ হয়। তাই আমাদের উচিত রোগের সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করা, কোরআনের আয়াতে শিফা পাঠ করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে শারীরিক ও মানসিক রোগ থেকে মুক্তি দান করুন। আমিন।

আইএইচ/

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর