Logo

ধর্ম

ভূমিকম্পের সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) যে দোয়াগুলো পাঠ করতে বলেছেন

Icon

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৫

ভূমিকম্পের সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) যে দোয়াগুলো পাঠ করতে বলেছেন

মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। আর সঠিক পথের দিকনির্দেশনার জন্য দিয়েছেন মহাগ্রন্থ আল কোরআন। মানুষের জীবনে যত প্রকারের বিপদ ও দুর্যোগ নেমে আসে, তার প্রতিকার এবং উত্তরণের পথও আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য সহজ করে দিয়েছেন। ভূমিকম্প, ঝড়-তুফান, বন্যা কিংবা মেঘের গর্জনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে আল্লাহ তাআলার মহাশক্তির এক ক্ষুদ্র নিদর্শন মাত্র। এসবের মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করা হয়, যেন তারা নিজেদের আমল, আচার-আচরণ ও জীবনাচারকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন, যেন তারা যেকোনো বিপদ, দুঃখ-কষ্ট ও দুর্যোগের সময় সর্বপ্রথম মহান আল্লাহর দিকে ফিরে যায় এবং তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করে। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি এ দোয়া পড়বে, সে আসমান ও জমিনের সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকবে: ‘বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদূর্রু মা‘আস মিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামা’ই, ওয়া হুয়াস সামী‘উল আলীম।’ অর্থাৎ আল্লাহর নামে, যাঁর নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো কিছুরই ক্ষতি করতে পারে না, আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী। এই দোয়া তিনবার পড়লে বান্দা আল্লাহর হেফাজতে থাকে এবং দুর্যোগ থেকে সুরক্ষিত হয়। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘বলে দাও, আল্লাহ তোমাদের উপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম। ’(সুরা আনয়াম: ৬৫)। ভূমিকম্পের সময় রাসূল (সা.) তাঁর উম্মতকে আল্লাহর মহাশক্তিকে স্মরণ করে তাঁর তাসবিহ ও তাকবিরে ব্যস্ত থাকতে শিখিয়েছেন। মাটির দিকে তাকিয়ে বলতে হয়- ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, লা শারিকালাহু, ফাবি আয়্যি আ’লা-ই রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান।’ যতক্ষণ না ভূমিকম্প শেষ হয়, ততক্ষণ এভাবে আল্লাহকে ডাকতে থাকলে বান্দার অন্তরে ভীতি প্রশমিত হয় এবং আল্লাহর রহমত নাযিল হয়। এ ছাড়া বিপদের সময় আল্লাহর দরবারে আরও একটি দোয়া পড়তে বলা হয়েছে, যা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘আন্তা ওয়ালিয়্যুনা ফাগফিরলানা ওয়ার হাম্না, ওয়া আন্তা খইরুল গফিরিন।’ (সূরা আরাফ, আয়াত ১৫৫)। এর অর্থ হলো- হে আল্লাহ! আপনি আমাদের অভিভাবক ও রক্ষক। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন, আমাদের প্রতি দয়া করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বাধিক ক্ষমাকারী। এই দোয়ার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছে কেবল নিরাপত্তাই চায় না, বরং তাঁর ক্ষমা ও রহমতও প্রার্থনা করে, যা বিপদের সময় মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রয়। এ ছাড়াও ভূমিকম্পের সময় আরও যেসব দোয়া পড়া যেতে পারে- উচ্চারণ: লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ। উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন। (বুখারি ও মুসলিম) রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি এ দোয়া তিনবার পড়বে সে ভূমি ও আকাশের দুর্যোগ থেকে হেফাজতে থাকবে। সম্প্রতি আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের জন্য শিক্ষা ও সতর্কবার্তা। দুনিয়ার সবকিছুই আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে, তাই কোনো বিপদ এলে বান্দার কর্তব্য হলো ধৈর্য ধারণ করা, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া, ইস্তেগফার করা এবং দোয়া ও জিকিরে লিপ্ত থাকা। কারণ আল্লাহ তাআলাই আমাদের একমাত্র ভরসা, একমাত্র রক্ষাকারী। তিনি চাইলে বিপদকে সহজ করে দেন এবং দুর্যোগের মধ্যে রহমতের দ্বার উন্মুক্ত করেন। অতএব, দুর্যোগের সময় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে হতাশ না হয়ে আমাদের উচিত মহান আল্লাহর দিকে সম্পূর্ণভাবে ফিরে যাওয়া, তাঁর নাম স্মরণ করা, দোয়া ও ইস্তেগফার করা এবং পরস্পরকে সাহায্য করা। এর মাধ্যমেই আল্লাহর রহমত ও সাহায্য লাভ করা সম্ভব। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাঁর হেফাজতে রাখুন এবং সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ করুন, আমিন।

আইএইচ/

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর