-68b8183f2e083.png)
মহান আল্লাহ তাআলা অসীম মেহেরবান ও দয়ালু। তিনি শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর কোরআনুল কারিম নাজিল করেছেন। তৎকালীন অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে এ কোরআন মানুষের জন্য হয়ে ওঠে আলোকবর্তিকা। আঁধার ভেদ করে তারা খুঁজে পায় সত্য ও ন্যায়ের পথ। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘অবশ্যই তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আলো ও সুস্পষ্ট গ্রন্থ এসেছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদের শান্তির পথ দেখান, যারা তাঁর সন্তুষ্টির অনুসরণ করে। আর তাঁর অনুমতিতে তিনি তাদের অন্ধকার থেকে আলোতে বের করেন এবং তাদের সরল পথের দিকে হেদায়েত দেন।’ (সুরা মায়িদা : ১৫-১৬)
কোরআনুল কারিম শুধু আধ্যাত্মিক গ্রন্থ নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। এর শিক্ষায় রয়েছে মানবতার মুক্তি ও কল্যাণ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা দিন দিন কোরআনের শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। উম্মতে মুহাম্মদ (সা.) হিসেবে কোরআনের গুরুত্ব যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে না পারায় জীবনে নেমে এসেছে অশান্তি। দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হতে হলে আমাদের প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত এবং এর নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে হবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি তোমার কাছে কিতাব নাজিল করেছি, যাতে সবকিছুর সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। আর এটা হেদায়েত, রহমত ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদস্বরূপ।’ (সুরা আন নাহল : ৮৯)
কোরআন পাঠের মাধ্যমে ঈমান দৃঢ় হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মুমিন তো তারা, যাদের অন্তর কেঁপে ওঠে যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। আর যখন তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। আর তারা তাদের রবের ওপরই ভরসা করে।’ (সুরা আনফাল : ২)
মানবজীবনে পার্থিব প্রাচুর্য থাকলেও প্রকৃত শান্তি কেবল কোরআনের মাধ্যমে পাওয়া যায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং আল্লাহর জিকিরে যাদের অন্তর শান্ত হয়- জেনে রাখো, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তর শান্তি লাভ করে।’ (সুরা আর রাদ : ২৮)
কিয়ামতের ময়দানে কোরআন তেলাওয়াতকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে। এটি এক বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। সাহাবি আবু উমামা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা কোরআন তেলাওয়াত করো। কারণ কোরআন কিয়ামতের দিন তেলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে।’ (মুসলিম : ১৯১০)
কোরআনের প্রতিটি বাণীই সত্য ও পরীক্ষিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ইয়াসিন। শপথ জ্ঞানসমৃদ্ধ কোরআনের।’ (সুরা ইয়াসিন : ১-২)
আর প্রত্যেক মুমিনের চূড়ান্ত লক্ষ্য যেহেতু জান্নাত লাভ। তো সেই জান্নাতে পৌঁছার অন্যতম উপায় হলো কোরআন অধ্যয়ন ও তেলাওয়াত। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘রোজা ও কোরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে আমার রব! আমি তাকে দিনে পানাহার ও কামনা থেকে বিরত রেখেছি, সুতরাং আমার সুপারিশ কবুল করুন। কোরআন বলবে, হে আমার রব! রাতের ঘুম থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি, তাই আমার সুপারিশ কবুল করুন।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে। (মুসনাদে আহমাদ : ৬৬২৬)
আইএইচ/