
বছর ঘুরে এখন চলছে মহিমান্বিত রবিউল আউয়াল মাস। এ মাসেই আল্লাহ তাআলা বিশ্বমানবতার জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে। এ ব্যাপারে আল্লাহ কোরআনে বলেন, ‘আর আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ’ (সুরা আম্বিয়া : ১০৭) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন পুরো মানবজাতির জন্য এক আলোকবর্তিকা। তাই এই মাস উম্মাহর হৃদয়গুলোকে এক কাতারে দাঁড় করানো ও সিরাত পাঠের মাধ্যমে ঐক্যের শপথ নবায়ন করার শিক্ষা দেয়।
কুরআন ও সুন্নাহ থেকেও ঐক্যের আহ্বান পাওয়া যায়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)
এই আয়াতে স্পষ্টভাবে উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলা হয়েছে। আল্লাহর রজ্জু মানে কুরআন ও সুন্নাহ। রাসুল (সা.) রবিউল আউয়াল মাসে জন্মগ্রহণের মাধ্যমে যে দাওয়াতের সূচনা করেন তার মূল ভিত্তি ছিল উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করা।
তাঁর জীবনেও ঐক্যের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। কেননা, নবুওয়ত লাভের পর রাসুল (সা.) মক্কার সমাজকে বিভক্ত অবস্থায় পান। যেখানে কেউ গর্ব করত বংশ নিয়ে, কেউ সম্পদ, আবার কেউ গোত্র নিয়ে। নবীজী (সা.) এর দাওয়াত সেই বিভাজনগুলো ভেঙে দিল। মক্কার কালো-সাদা, ধনী-গরিব, আরব-অনারব সবাই এক কাতারে দাঁড়াল।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা সবাই আদম সন্তান, আর আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি থেকে। কোনো আরবের ওপর অনারবের, কোনো শ্বেতাঙ্গের ওপর কৃষ্ণাঙ্গের কিংবা কোনো কৃষ্ণাঙ্গের ওপর শ্বেতাঙ্গের শ্রেষ্ঠত্ব নেই; কেবল তাকওয়া ছাড়া।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৩৪৮৯)
এ শিক্ষাই আজ আমাদের জন্য রবিউল আউয়ালের মূল বার্তা। উম্মাহর মধ্যে বিভাজন নয়, বরং প্রয়োজন তাকওয়া ও সুন্নাহর আলোয় ঐক্য।
আল্লাহ আমাদের প্রত্যেককে রাসুল (সা.) এর দেখানো পথে চলে ইহকালীন শান্তি এবং পরকালীন মুক্তি পাওয়ার তাওফিক দান করুন, আমিন।
আইএইচ/