
সম্পদ ও সম্মান মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ। তিনি যাকে ইচ্ছা বাড়িয়ে দেন, যাকে ইচ্ছা কমিয়ে দেন। তাঁর দেওয়া অনুগ্রহ বান্দার জীবনে কখনো সন্তান–সন্ততি, কখনো সম্পদ, রিজিক, সম্মান কিংবা আমল–ইবাদতের বরকত হিসেবে নেমে আসে। ৫টি আমল এমন রয়েছে যার মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে সম্পদ ও সম্মান বৃদ্ধি পাওয়া যাবে।
কোরআন ও হাদিসের আলোকে সেই ৫টি আমল হলো-
১. তওবা–ইস্তেগফার করা
যে বান্দা বেশি বেশি তওবা–ইস্তেগফার করে, আল্লাহ তার অভাব–অনটন দূর করেন এবং সংকটসমূহ সহজ করে দেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এ দোয়া পড়বে- উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যূমু ওয়া আতুবু ইলাইহি। অর্থ: “আমি সেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর। আর আমি তাঁর কাছেই তওবা করছি।” সে ব্যক্তির সব গুনাহ ক্ষমা করা হবে; এমনকি যদি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালানোর মতো গুরুতর অপরাধও থাকে।’ (আবু দাউদ : হাদিস, ১৫১৭)
২. দান–সাদকা করা
দান–সাদকা রিজিক প্রসারিত করে, সম্মান বৃদ্ধি করে। যারা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, আল্লাহ তাদের সীমাহীন রিজিক দান করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে নবী! আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সংকুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় করো, তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনি উত্তম রিজিকদাতা।’ (সুরা সাবা, আয়াত: ৩৯)
৩. ওমরা করা
ওমরা গুনাহের কাফফারা এবং অভাব–অনটন দূর করার একটি উপায়। এতে রিজিকে বরকত আসে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ওমরা করে, ওমরা তার গুনাহ ও অভাব দূর করে দেয়।’ (তিরমিজি)
তিনি আরও বলেছেন, ‘এক ওমরা থেকে অপর ওমরা পর্যন্ত মাঝের সময়ের সব (সগিরা) গুনাহ মাফ হয়ে যায়। আর হজে মাবরূরের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (মুসলিম)
আরেক হাদিসে বলেছেন, ‘ক্রমাগত হজ ও ওমরা করতে থাকো; কেননা তা দারিদ্রতা ও গুনাহ এমনভাবে দূর করে, যেমন হাপর লোহা–সোনা থেকে ময়লা দূর করে দেয়।’ (ইবনে মাজাহ)
এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর জন্য হজ ও ওমরা পরিপূর্ণভাবে পালন করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৯৬)
৪. কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা
যে কোনো কাজ বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু করলে তাতে বরকত আসে, শয়তান দূরে সরে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন খাবার খায় আর বিসমিল্লাহ বলে, তখন শয়তান সেই খাবারে অংশ নিতে পারে না। খাবার অল্প হলেও বরকতময় হয়ে যায়। একইভাবে কেউ যখন ঘরে প্রবেশ করে বিসমিল্লাহ বলে, তখন শয়তান ঘরে প্রবেশ করতে পারে না।’ (মিশকাত শরীফ : হাদিস, ৪২৯৪-৯৬) অতএব, প্রতিটি কাজ বিসমিল্লাহ বলে শুরু করলে আল্লাহ তাতে বরকত দান করেন।
৫. সকালবেলা কাজ শুরু করা
সকালবেলার কাজে বরকত রয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়া করেছেন, উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বারিক লি উম্মাতি ফি বুকুরিহা। অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমার উম্মতের সকালবেলার কাজে বরকত দান করুন।’ (আবূ দাঊদ : হাদিস ২৬০৬)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘আমার উম্মতের জন্য সকালবেলায় বরকত দেওয়া হয়েছে।’ তাই সকাল সকাল কাজে অভ্যস্ত হওয়া বরকত ও সম্মান লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
সুতরাং, এই ৫টি আমল করলে মানুষের সম্পদ ও সম্মান বৃদ্ধির পাবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লিখিত আমলগুলো সঠিকভাবে করার তাওফিক দিন, আমিন।
আইএইচ/