
বর্তমান সমাজে নিজেদের সৌন্দর্য ধরে রাখতে নারীরা অনেক ধরণের মেকআপ, নেইলপলিশ বা কসমেটিক ব্যবহার করে থাকেন। আবার মেকআপ করা অবস্থাতেই নামাজ পড়েন তারা। আর নামাজের জন্য প্রয়োজন হয় অজুর। তো এসব প্রসাধনী অজুতে বিঘ্ন ঘটাতে পারে, সে সময় কি করণীয় বা ইসলামের বিধান কি তা আজ জেনে নিব আমরা।
যদি লিপস্টিক, নেইলপলিশ বা এ ধরনের কসমেটিক পানিকে ত্বক পর্যন্ত পৌঁছাতে না দেয়, তাহলে কি অজু বা গোসল সহীহ হবে? বিশেষ করে ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ বা নেইলপলিশ ব্যবহার করলে তখন কি বিধান হবে? এ ব্যাপারে ফতোয়া হলো-
যদি কোনো প্রসাধনী পানিকে ত্বক পর্যন্ত পৌঁছাতে বাধা দেয়, তাহলে অজু বা গোসল সহীহ হবে না। সেক্ষেত্রে প্রসাধনীটি ধুয়ে ফেলা জরুরি। তবে যদি পানি ত্বকে পৌঁছাতে পারে, তাহলে তার ওপর অজু সহীহ হবে। যেহেতু ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ বা নেইলপলিশ পানি পৌঁছাতে বাধা দেয়, তাই এগুলো থাকলে অজু বা গোসল হবে না। তবে অজুর পর এগুলো ব্যবহার করা হলে এবং এতে হারাম উপাদান না থাকে, তবে নামাজ পড়া যাবে।
আবার কসমেটিক ব্যবহার করে নামাজ পড়লে নামাজের সহীহ হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে কি? যেমন- লিপস্টিক বা ফাউন্ডেশন নামাজের সময় মুখে রাখা যাবে কি না সে ব্যাপারেও অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে। ইসলামি বিধান মতে, মেকআপ লাগানো অবস্থায় নামাজ পড়া বৈধ, যদি এতে কোনো হারাম উপাদান ব্যবহার না হয়। তবে যদি মেকআপে শূকর, হারাম প্রাণীর অংশ বা নিষিদ্ধ উপাদান থাকে, তাহলে সেই অবস্থায় নামাজ সহীহ হবে না এবং নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।
কেননা, কোরআনে বর্ণিত আছে যে, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত প্রাণী, প্রবাহিত রক্ত, শূকরের মাংস এবং যে পশু আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা হয়েছে।’ (সূরা আল-বাকারাহ: ১৭৩)
সুতরাং, কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহারে শরীয়তের দৃষ্টিতে হালাল-হারামের ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি। হারাম উপাদান থাকলে ব্যবহার করা যাবে না। অজু-গোসলের জন্য এমন প্রসাধনী অবশ্যই সরাতে হবে, যা পানি পৌঁছাতে বাধা দেয়। তবে হালাল উপাদান দ্বারা তৈরি মেকআপ থাকলে এবং অজুর পর ব্যবহার করলে, নামাজে কোনো সমস্যা নেই।
- জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া আল্লামা ইউসুফ বানুরি টাউনের ১৪৪৭০২১০১৭৮৯ নম্বর ফতোয়া অবলম্বনে
আইএইচ/