ঋণের দায়ে আত্মহত্যার পর চল্লিশা, যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৫৭

ঋণের বোঝা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিলেন রাজশাহীর মিনারুল ইসলাম। মৃত্যুর আগে তিনি হত্যা করেন স্ত্রী ও দুই সন্তানকে। তাদের মৃত্যুর পর পরিবার আবারও ঋণ নিয়ে চল্লিশার আয়োজন করে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ হওয়ার পর ফেসবুকে অনেক সমালোচনা শুরু হয়। মূলত সমাজে প্রচলিত এ রীতিকে অনিবার্য মনে করা হয়, না করলে কটূক্তির শিকার হতে হয়।
এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘কোনো মানুষের মৃত্যুর পর চল্লিশা, তিন দিন বা সাত দিনের নামে যে আনুষ্ঠানিকতা হয়ে থাকে, এর সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। কোরআন ও হাদিসে এর উল্লেখ নেই। বরং এটি হিন্দুদের শ্রাদ্ধ থেকে মুসলিম সমাজে প্রবেশ করেছে। ফলে এটি বিদআত হিসেবে গণ্য হবে এবং মানুষকে গুনাহে জড়াচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিনারুল ইসলাম আত্মহত্যার মাধ্যমে গুনাহ করেছেন। তিনি সবর করতে পারেননি। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন তিনি তাকে ও তার পরিবারকে ক্ষমা ও রহমত দান করেন। তবে মৃত্যুর পর যেখানে তারা ঋণগ্রস্ত হয়ে মারা গেছেন, সেখানে সমাজের মানুষের উচিত ছিল তাদের ঋণ পরিশোধে উদ্যোগ নেওয়া। কিন্তু উল্টো তাদের পরিবারকে চল্লিশার বোঝা চাপানো হয়েছে, যা নির্মমতা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
শায়খ আহমাদুল্লাহ মনে করেন, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা প্রতিষ্ঠিত হলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। তাই এখানে সঠিক ধর্মচর্চার ব্যবস্থা থাকা জরুরি। প্রাথমিক স্তর থেকেই সঠিক শিক্ষা ও ধর্মীয় চর্চার সুযোগ তৈরি হলে সমাজ আলোকিত হবে এবং এ ধরনের কুসংস্কার থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।’
ঋণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গ্রাম-গঞ্জে ক্ষুদ্রঋণ ও সুদভিত্তিক ঋণের জালে আটকা পড়ে অসংখ্য মানুষ নিঃস্ব হচ্ছেন, কেউ কেউ আত্মহত্যা পর্যন্ত করছেন। এই ঋণের মাধ্যমে দরিদ্ররা আরও গরীব হয়ে যাচ্ছেন, আর প্রতিষ্ঠানগুলো আরও ধনী হচ্ছে। তাই আমাদের সমাজে করজে হাসানার প্রচলন জরুরি। প্রত্যেক এলাকাতে মসজিদ কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়ে সে এলাকার দরিদ্রদের সহায়তা করলে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা রোধ করা সম্ভব।’
আইএইচ/