
বিবাহ মানব জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। অনেক সময় মানুষ ভাবে, ‘এখনও তো আমি পুরোপুরি পায়ে দাঁড়াইনি, আর্থিকভাবে শক্তিশালী হইনি- তাহলে বিয়ে করব কিভাবে?’ কিন্তু ইসলাম আমাদেরকে সহজ শিক্ষা দিয়েছে।
ইসলামের বিধান অনুযায়ী বিয়ের জন্য মূলত দরকার হলো- মোহরের ব্যবস্থা এবং ডাল-ভাতের জোগাড় করতে পারা। তথাকথিত ‘সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত’ হওয়ার শর্ত ইসলামে নেই।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে যুবক সমাজ! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ে করতে সক্ষম, সে যেন বিয়ে করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস ৫০৬৫)
আর বিবাহ হলো ঈমানের অর্ধেক পূর্ণ, রিজিক বৃদ্ধির একটি কারণ এবং জীবনে বরকত নামার অন্যতম মাধ্যম। তাই আমাদের উচিত বিয়ের ব্যাপারে আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এবং দেরি না করা। কেননা, পরিবার পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে আল্লাহ রিজিক বাড়িয়ে দেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজের অভিভাবক এবং প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। একজন পুরুষ তার পরিবারের অভিভাবক এবং তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৮৯৩, সহিহ মুসলিম: ১৮২৯)
বিবাহের মাধ্যমে একজন পুরুষ যখন পরিবারের দায়িত্ব নেয়, তখন আল্লাহ তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন, কারণ তিনি তার পরিবারের জন্য চেষ্টা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা গরিব হলে বিবাহ করো, কেননা বিয়ে তোমাদের জন্য সম্পদশালী হওয়ার উপায়।’ (ইবনে মাজাহ: ১৮৪৭, হাসান)
রাসূল (সা.) এখানে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে, বিয়ে করা দারিদ্র্য দূর করার অন্যতম উপায়। কারণ, বিবাহের মাধ্যমে রিজিকে বরকত আসে এবং নতুন সুযোগের দরজা খুলে যায়। অন্য এক হাদিসে এসেছে, ‘তিন শ্রেণির লোকদের সাহায্য করা আল্লাহর জন্য দায়িত্ব, তাদের একজন হলো সেই ব্যক্তি, যে বিয়ে করে নিজের চরিত্র পবিত্র রাখতে চায়।’ (সুনান আন-নাসাই: ৩২১৮, তিরমিজি: ১৬৫৫, সহিহ)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, যারা সৎ উদ্দেশ্যে বিবাহ করে, আল্লাহ তাদের সহায়তা করেন এবং তাদের জীবনে বরকত দেন, যা রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম। আল্লাহ বলেন,
‘আমরা তোমাদের এবং তাদের (সন্তানদের) রিজিক দিয়ে থাকি।’ (সূরা আল-ইসরা: ৩১)
অনেকে মনে করেন, বিবাহ করলে খরচ বেড়ে যাবে, সংসার চালানো কঠিন হবে। কিন্তু আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, তিনি সবাইকে রিজিক প্রদান করেন। ‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত, তাদের বিবাহ দাও এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল, তাদেরও। যদি তারা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের স্বচ্ছলতা দান করবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সূরা আন-নূর: ৩২)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কেউ যদি দারিদ্র্যতার ভয়ে বিবাহ করতে ভয় পায়, তবে তার জন্য আশার বাণী হলো- আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তার রিজিকে সমৃদ্ধি দান করবেন।
আইএইচ/