Logo

ধর্ম

প্রতিবেশীর প্রতি অন্যায় বান্দার আমলকে নিঃশেষ করে দেয়

Icon

আরিফ মাহমুদ

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫০

প্রতিবেশীর প্রতি অন্যায় বান্দার আমলকে নিঃশেষ করে দেয়

ইসলাম যেহেতু একটি সার্বজনীন ধর্ম তাই সব বিষয়ে এই ধর্মের অর্থবহ দিকনির্দেশনা রয়েছে। তেমনি প্রতিবেশীর অধিকার রক্ষায় গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। প্রতিবেশী বলতে সেসব লোককে বোঝানো হয়, যারা নিজ বসতবাড়ির আশপাশে অবস্থান করেন। ইসলামে প্রতিবেশীর সংজ্ঞা বেশ বিস্তৃত। হাদিসে বলা হয়েছে, নিজ বাড়ি থেকে প্রায় ৪০ বাড়ি পর্যন্ত প্রসারিত অঞ্চলে যারা বসবাস করেন তারাই প্রতিবেশী। 

ইসলামে প্রতিবেশীর অধিকারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গভীরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কোরআন ও হাদিসে প্রতিবেশীর প্রতি সদাচরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যা ইসলামের একটি মৌলিক শিক্ষা।

আবু হুরাইরা বলেন, ‘এক লোক রাসুল (সা.)-কে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এক নারী তার অত্যধিক নামাজ, রোজা, দানের জন্য সুপরিচিত। কিন্তু সে কথার মাধ্যমে তার প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়। তার ব্যাপারে আপনি কী বলেন? রাসুল (সা.) বললেন, সে জাহান্নামী। লোকটা আবার বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আরেক নারীর ব্যাপারে প্রসিদ্ধি আছে যে, সে রোজা কম রাখে, দানও কম করে এবং নামাজও কম পড়ে। বলতে গেলে সে এক টুকরো পনিরই দান করে। কিন্তু প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না। তার ব্যাপারে আপনি কী বলেন? রাসুল (সা.) জবাব দিলেন, সে জান্নাতি। (মুসনাদে  আহমাদ ৯২৯৮)।

এমনকি রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিবেশীকে যে কষ্ট দেয়, সে জান্নাত থেকে বঞ্চিত।’ হযরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, 'রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়। (সহিহু মুসলিম: ৪৬)

কোরআনে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘আল্লাহর ইবাদত করো এবং তার সঙ্গে কাউকে শরিক করো না। আর পিতা-মাতার সঙ্গে সৎ ব্যবহার করো, আত্মীয়স্বজন, এতিম ও অভাবগ্রস্ত এবং কাছের ও দূরের প্রতিবেশীর সঙ্গে সৎ ব্যবহার করো।’ (সুরা নিসা ৩৬) কোরআনের এই নির্দেশনা মুসলমানদের প্রতিবেশীর সঙ্গে সৌজন্যতা, সহানুভূতি, সাহায্য ও সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জিবরাইল (আ.) আমাকে প্রতিবেশীর অধিকার সম্পর্কে এত বেশি উপদেশ দিয়েছেন যে, আমি মনে করেছিলাম প্রতিবেশীকে ওয়ারিশ বানানো হবে।’ (সহিহ বুখারি) এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, প্রতিবেশীর অধিকারকে ইসলামে কতটা উচ্চ স্থানে রাখা হয়েছে।

ইসলামে প্রতিবেশীর অধিকার মানা এবং তাদের জন্য ভালোবাসা ও দয়া প্রদর্শন করা শুধু সামাজিক কর্তব্য নয় বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। প্রতিটি মুসলমানের উচিত এই নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করা এবং প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক সুন্দর ও মজবুত করা, যা একটি সুন্দর ও সুস্থ সমাজ গঠনে সহায়ক। মহান আল্লাহ আমাদের যথাযথভাবে প্রতিবেশীর অধিকার রক্ষা করার তওফিক দান করুন, আমিন।

লেখক : শিক্ষার্থী, ফিজিওথেরাপি ডিপার্টমেন্ট, সিআরপি, সাভার- ঢাকা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর