মানবজীবনে আত্মীয়তার সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদ্ব্যবহার সমাজের বন্ধনকে দৃঢ় করে এবং মানবতার সৌন্দর্য প্রকাশ করে। ইসলামের নবী, বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন আত্মীয়তার বন্ধনে সর্বোত্তম আদর্শ। তাঁর জীবন ও আচরণে প্রতিফলিত হয়েছে ভালোবাসা, দয়া, সহমর্মিতা এবং আত্মীয়তার প্রতি অনন্য সম্মান। তিনি শিখিয়েছেন- আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা ইমানের অংশ, আর আত্মীয়ের প্রতি উদাসীনতা আল্লাহর সন্তুষ্টিকে হারানোর কারণ।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন পৃথিবীর সর্বোত্তম আত্মীয়তা রক্ষাকারী ব্যক্তি। সাহাবিদের ভাষায়, ‘তিনি ছিলেন মানুষের প্রতি সর্বাধিক অনুগ্রহশীল ও সর্বোত্তম আত্মীয়তা রক্ষাকারী।’ তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে ছিল ভালোবাসা, সম্মান ও যত্নপূর্ণ সম্পর্ক। তাঁদের সঙ্গে নবীজির ছিল গভীর হৃদ্যতা ও ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক। রাসুলুল্লাহ (সা.) জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দুধ-মায়ের পরিবারকে সম্মান ও ভালোবাসায় সিক্ত রাখতেন।
হাদিসে এসেছে, অন্ততপক্ষে সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে হলেও তোমরা তোমাদের আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করো। (বাজ্জার, হাদীস নং ১৮৭৭)
অন্যত্র রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা নিজ বংশ সম্পর্কে ততটুকুই জানবে যাতে তোমরা আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করতে পারো। কারণ, আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করলে আত্মীয়-স্বজনদের ভালোবাসা পাওয়া যায় এবং ধন-সম্পদ ও বয়স বেড়ে যায়। (তিরমিযী, হাদীস নং ১৯৭৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন মানবতার সর্বোত্তম আদর্শ। আত্মীয়দের প্রতি তাঁর ভালোবাসা, দয়া ও সম্মান সমাজে ঐক্য, শান্তি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তি স্থাপন করেছে। তিনি শেখিয়েছেন—আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা আল্লাহর নিকট প্রিয়তম কাজ। তাই আমাদেরও উচিত তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা, তাঁদের প্রতি দয়া ও ভালোবাসা প্রদর্শন করা এবং সম্পর্কের সেতুবন্ধন দৃঢ় করা।
লেখক : শিক্ষার্থী, ফিজিওথেরাপি ডিপার্টমেন্ট, সিআরপি, সাভার

