ইসলাম জীবনের প্রতিটি মুহুর্তের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ আমল ব্যবস্থা রেখেছে। তেমনি সকালবেলা ঘুম থেকে জাগার পরেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। হাদিসের আলোকে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর ঘুমের পর থেকে দিন শুরু পর্যন্ত সময়টিকে যেভাবে অতিবাহিত করতেন, সেই আমলগুলো তুলে ধরা হলো-
১. রাসুল (সা.) ঘুম থেকে উঠেই আল্লাহর প্রশংসা করতেন। তিনি বলতেন, ‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমা-তানা, ও ইলাইহিন নুশুর।’
অর্থ : ‘সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদের ঘুমের পর আবার জীবিত করলেন, আর তাঁরই দিকে হবে আমাদের প্রত্যাবর্তন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩১২; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭১১)
২. ঘুম থেকে জেগে রাসুল (সা.) প্রথমেই মিসওয়াক করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৪৫; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৫৫) এভাবে তাঁর মুখ পরিষ্কার এবং নামাজের প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হয়।
৩. এরপর নবীজি (সা.) ওজু করতেন এবং ফজরের নামাজের প্রস্তুতি নিতেন। ওজু করার সময় তিনি দোয়া ও জিকিরে মনোযোগী থাকতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৩৪)
৪. নবীজি (সা.) ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করতেন। এরপর সূর্য ওঠা পর্যন্ত মসজিদে বসে জিকির, কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়ায় সময় কাটাতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৭০)
তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করে, তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকে এবং পরে দুই রাকাআত নামাজ (ইশরাক) পড়ে, সে এক হজ ও এক ওমরার পূর্ণ সওয়াব পাবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৫৮৬)
৫. সূর্য ওঠার প্রায় ১৫–২০ মিনিট পর নবীজি (সা.) দুই বা চার রাকাআত ইশরাক নামাজ আদায় করতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭২০)
৬. নবীজি (সা.) সকাল বেলা অল্প খাবার খেতেন, অনেক সময় খেজুর ও পানি নিতেন। এরপর পরিবারকে উপদেশ দিতেন এবং সবার খোঁজখবর নিতেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ২৬০৮)
৭. রাসুল (সা.) প্রতিদিন সকালবেলা কিছু নির্দিষ্ট জিকির পড়তেন, যেমন: ‘আসবাহনা ও আসবাহাল মুলকু লিল্লাহ।’ আয়াতুল কুরসি, সূরা ইখলাস, ফালাক, নাস- তিনবার করে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭২৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সকালবেলার এই রুটিন মেনে চললে সওয়াব লাভের পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তিও পাওয়া যাবে। ঘুম থেকে জাগা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, নামাজ, জিকির ও ইতিবাচক মানসিক প্রস্তুতি- সবকিছুই এক সফল ও বরকতময় দিনের ভিত্তি গড়ে তোলে।
আইএইচ/
