Logo

ধর্ম

কওমিতে তারবিয়াহ মজবুত করা সময়ের দাবি

Icon

মুফতি রিজওয়ান রফিকী

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৫

কওমিতে তারবিয়াহ মজবুত করা সময়ের দাবি

কওমি মাদরাসার লেখাপড়া যথেষ্ট উন্নত। কিন্তু তারবিয়াহ একেবারে ভেঙে পড়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়। আর তাযকিয়াহ তো টোটালই নেই। আমাদের ফারাগাত বেশি দিন হয়নি। কিন্তু আমাদের ছাত্র যামানায় উস্তাযের সঙ্গে বে-আদবী করা কল্পনাও করতে পারতাম না আমরা। উস্তাযদের মাঝে কোনো আভ্যন্তরীণ ইখতেলাফ থাকলে, নিজেদের নাক গলানোর চেষ্টা করতাম না। কিন্তু এই স্বল্প সময়ের মাঝে কী থেকে কী হয়ে গেলো?

মাদরাসার আভ্যন্তরীণ এসব বিষয়াদি ভালো না লাগলে মাদরাসা চেঞ্জ করে আবু তাহের মিসবাহ সাহেব (আদীব হুজুর)-এর মতো কোনো মাদরাসায় যাওয়া উচিত। কিন্তু কোনো উস্তাযের সঙ্গে আদব বিবর্জিত আচরণ কল্পনায় আনাও উচিত নয়। কিছু ছাত্ররা নিজেদের পাক্কা ঈমানদার মনে করে, হক্বের ঝান্ডাবাহী ভাবসাব নিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদে নিজেকে বড্ড প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর মনে করে উস্তাযের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। কিন্তু এতে যে তার ইলমের নিয়ামত তার নসীব থেকে আজীবনের মতো সরে যায়, সে বুঝতেও চায় না। নেক সুরতে ধোকা খায় আরকি।

সম্প্রতি সময়ে আমাদের অঙ্গনে আদবের জায়গাটা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। এমনকি উস্তাযদের মাঝে আভ্যন্তরীণ ইখতিলাফে ছাত্ররাও জড়িয়ে পড়ছে। আমি বুঝি না, উস্তাযরাও কীভাবে পারেন এটা? যারা ছাত্রদের শেখাবে ফিতনামুক্ত জীবন গঠণের ইতিহাস, সেই তারাই যদি নিজেদের আভ্যন্তরীণ ফিতনায় ছাত্রদেরকে উস্কে দেয়, তাহলে জেনে রাখুন- নিঃসন্দেহে তিনি ছাত্রদের খায়েরখাহ নন। মুহতামিম সাহেবের উচিত, সেই উস্তাযকে দ্রুত বরখাস্ত করা। নইলে ঐ একজনই পুরো মাদরাসার চিত্র নোংড়া করে ফেলবে।

ইদানীং ফেসবুকে ছাত্রদের লেখালেখির ধরণ দেখলে আফসোস হয়। এসব-ই আমাদের ছাত্রদের রূপ! কওমি ছাত্রদের লেখা থেকে নূর বিচ্ছুরিত হওয়ার কথা, কিন্তু সেটা কী হচ্ছে? কারো কোনো স্ক্যান্ডেল ভাইরাল হলে, আমাদের ছাত্রদের কমেন্টস দেখলে অসহ্য বিরক্তি লাগে। এমনটাই কি হওয়ার কথা ছিলো? বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যাহ কি এ ক্ষেত্রে দায় এড়াতে পারেন? আমি মনে করি, এসবে নজর দেওয়া বেফাকের অপরিহার্য দায়িত্ব।

শুধু পরীক্ষার ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ করা অযৌক্তিক। হাটহাজারীতে ঝামেলা হলো, পটিয়াতেও হলো, প্রত্যেকটা মাদরাসায় এই আন্দোলনকারী গ্রুপ তৈরি হলো। কিন্তু, এরপরও বেফাকের দায়িত্বশীলদের টনক নড়েনি। কোনো কার্যকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। কেন? এগুলো ঠিক করা কী বেফাকের কোনো দায়িত্ব নয়? তাদের দায়িত্ব কী শুধুই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ? তালিম, তাযকিয়্যাহ, তারবিয়্যাহ এক কথায় পুরো শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তাদের ভাবা উচিত। তা না হলে এই ছাত্ররাই কিয়ামতে তাদেরকে জবাবদিহিতা করবে, লিখে রাখুন।

বেফাককে এ্য।টাক করে কথা বলা আমার মাকসাদ না। আল্লাহর ওয়াস্তে দায়িত্বশীলগণ আমাকে ক্ষমা করবেন। কিন্তু অনুরোধ থাকবে- বাচ্চাদের নিয়ে আপনারা একটু ভাবুন। গভীরভাবে ভাবুন। আপনাদের একটু ফিকির পুরো কওমি জগতটা আলোকিত হতে পারে।

লেখক : সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ মুসলিম কাউন্সিল ও প্রিন্সিপাল, মাদরাসা মারকাযুন নূর বোর্ড বাজার, গাজীপুর

বিকেপি/এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর