Logo

ধর্ম

জুমাবারে করণীয় ও বর্জনীয়

Icon

মুহাম্মদ হেদায়ত উল্লাহ

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:২০

জুমাবারে করণীয় ও বর্জনীয়

ইসলামে জুমার দিন শুধু সাপ্তাহিক নামাজের দিন নয়; বরং এটি মুসলিম সমাজের সাপ্তাহিক ঈদ। আত্মশুদ্ধির মহান দিন এবং আধ্যাত্মিক জাগরণের অনন্য উপলক্ষ। এ দিনকে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের জন্য বিশেষ মর্যাদা ও রহমতপূর্ণ সময় হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। তাই এই দিন সম্পর্কে সচেতনতা, গুরুত্ব এবং আমল মুমিনের অপরিহার্য কর্তব্য।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সূর্য উদিত হওয়া দিনের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এই দিনে আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে, জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। আর কিয়ামতও এই জুমার দিনেই সংঘটিত হবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৬২)

জুমাবারের প্রস্তুতি
জুমার দিনের আমলকে সুন্দর করার জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত রয়েছে। গোসল করা, আগে মসজিদে যাওয়া এবং খুতবা মনোযোগসহকারে শোনা ইত্যাদি।

হজরত আওস ইবনে আওস আস-সাকাফী রা. বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি:

১) জুমার দিন ভালোভাবে গোসল করবে

২) আগে আগে মসজিদে যাবে

৩) বাহনে না উঠে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাবে

৪) অনর্থক কথা বলবে না

৫) ইমামের কাছে বসে মনোযোগসহকারে খুতবা শুনবে।

তার প্রতি কদমের বিনিময়ে এক বছরের রোজা ও এক বছরের রাতের নফল নামাজের সওয়াব লেখা হবে। (আবু দাউদ, হাদিস: ৩৪৫)

মিসওয়াক করা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা:
হজরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিন মুসলিমদের ঈদের দিন। তাই যে আসবে সে যেন গোসল করে, সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং মিসওয়াক করে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১০৯৮)

উত্তম পোশাক পরিধান করা
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবেৃ তার জন্য এ জুমা ও পূর্ববর্তী জুমার মধ্যবর্তী গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যাবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৩৪৩)

সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা
‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় আলো (নূর) ছড়িয়ে থাকবে।’ (বাইহাকি, হাদিস: ৬০৬৩)

বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন আসর নামাজের পর ওই স্থানে বসা অবস্থায় ৮০ বার নি¤œলিখিত দরুদ পাঠ করবে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব আমলনামায় লেখা হবে।’

দরুদটি হলো: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাল্লিমু তাসলিমা।’ (আফদালুস সালাওয়াত, হাদিস: ২৬)

জুমাবারের বর্জনীয়

১) জুমার আগে অহেতুক সময় নষ্ট করা

২) খুতবার সময় ঘুমানো

৩) খুতবা চলাকালীন কথা বলা

৪) অন্যের ঘাড় টপকে কাতারে অগ্রসর হওয়া

৫) ইমাম মিম্বরে উঠার পর নফল নামাজ শুরু করা

৬) জুমার দিনে ব্যবসা-বাণিজ্যে অতিরিক্ত ব্যস্ত থাকা এবং জুমা এড়ানো

৭) মসজিদে প্রবেশের সময় শব্দ করা বা অন্যকে বিরক্ত করা

৮) মোবাইলের রিংটোন চালু রাখা, ফোনে কথা বলা বা মোবাইল ব্যবহার করা

৯) খুতবা চলাকালে কাউকে নীরব হতে বলা, টোকা দেওয়া বা ইশারা করা

১০) সুগন্ধি ব্যবহার না করা ও পোশাক বা শরীরে দুর্গন্ধ থাকা

১১) নামাজের সময় হাত-পা নড়াচড়া করা বা পোশাক-টুপি নিয়ে খেলা করা

১২) মসজিদে তাড়াহুড়ো করে ঢোকা ও দৌড়ানো

১৩) জামায়াতে দেরিতে আসা এবং প্রথম কাতারের ফজিলত হাতছাড়া করা

১৪) জুমার দিন গাফলতি ও দুনিয়াবি কাজে নিমগ্ন থাকা, জিকির-দোয়া ও তিলাওয়াত বাদ দেওয়া

১৫) মসজিদে বসে অযথা গল্প-আড্ডায় সময় নষ্ট করা

লেখক: প্রভাষক, ইসলামিক স্টাডিজ, দশমিনা ইসলামিয়া কামিল এমএ মাদারাসা, পটুয়াখালী, বরিশাল।

বিকেপি/এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

ইসলাম ধর্ম

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর