-6773b2269303e.jpg)
একজন মুসলমানের জন্য ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হচ্ছে নামাজ। কুরআন মাজিদের বিভিন্ন জায়গায় ঈমানের পরেই নামাজের কথা বলা হয়েছে। সুরা বাকারার শুরুতেই ইরশাদ হয়েছে, ‘এটি সেই কিতাব, এতে কোনো সন্দেহ নেই। মুত্তাকিদের জন্য পথপ্রদর্শক। যারা ঈমান রাখে গায়েবের প্রতি, নামাজ আদায় করে এবং আমি তাদেরকে যা দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।’
হাদিস শরিফে এসেছে,ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি—
১. সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসুল।
২. নামাজ আদায় করা।
৩. জাকাত প্রদান করা।
৪. হজ করা।
৫. রমজানের রোজা রাখা ( বুখারি ১/৬)।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে যখন কেউ ইসলাম গ্রহণ করত তখন তিনি তাকে সর্বপ্রথম নামাজের অঙ্গীকার করাতেন।
নবিজি (সা.)-এর পূর্বের নবি-রাসুলগণও তাওহীদের পরেই নামাজের আদেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে,‘তাদেরকে তো আদেশ করা হয়েছিল একনিষ্ঠভাবে ইখলাসের সাথে আল্লাহর ইবাদত করতে এবং নামাজ কায়েম করতে ’ (সুরা বায়্যিনাহ : ৫)।
নামাজের ফজিলত
নামাজের অগণিত ফজিলতের মধ্যে একটি হচ্ছে নামাজ মানুষকে অন্যায় ও গুনাহ থেকে রক্ষা করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে’ (সুরা আনকাবুত : ৪৫)।
এখানে প্রশ্ন হয়ে থাকে, নামাজ তো আমাদের গুনাহ থেকে হেফাজত করে না? এর উত্তর উক্ত আয়াতের মধ্যেই রয়েছে। বলা হয়েছে যে, ‘অবশ্যই আল্লাহর যিকর (স্মরণ) সবচেয়ে বড়।’ অর্থাৎ, অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরতকারী হচ্ছে আল্লাহর স্মরণ। যার নামাজে আল্লাহর স্মরণ যত বেশি থাকবে, নামাজ তাকে তত বেশি গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে।
নামাজের প্রতি মুহাব্বত
নামাজের তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর। নামাজের রোকনগুলো ঠিকভাবে আদায় করার পাশাপাশি অন্তরের ইখলাস ও খুশু-খুজু এবং নামাজের প্রতি মুহাব্বত এর পূর্ণাঙ্গতার জন্য অপরিহার্য। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,‘আমাকে স্মরণ করার জন্য নামাজ পড়’ (সুরা ত্বহা : ১৪)।
নামাজের প্রতি মুহাব্বত সেই স্তরের হতে হবে, যাতে নামাজে দাঁড়ালে আমাদের হৃদয় শান্ত ও প্রশান্ত হয় এবং আমরা আল্লাহর সঙ্গে সৃষ্টির সবচেয়ে নিকটতম সম্পর্ক অনুভব করি।
সাহাবিদের নামাজের প্রতি ভালোবাসা
নামাজের প্রতি সাহাবিদের গভীর ভালোবাসা ছিল। হজরত আবু বকর (রা.) নামাজে দাঁড়ালে তিনি এমন নিশ্চুপ হয়ে যেতেন যে, মনে হতো যেন একটি কাঠ মাটিতে গেড়ে দেওয়া হয়েছে। হজরত উমর (রা.) যখন খঞ্জর দ্বারা আহত হয়েছিলেন, তখনো নামাজের গুরুত্ব অনুভব করে তিনি নামাজ পড়েন এবং বলেছিলেন, ‘যদি নামাজ পড়তেই অক্ষম হয়ে যাই, তবে বেঁচে থেকে আর লাভ কী?’
এটিআর/