বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
বড় আকারে যুদ্ধের আশঙ্কা কতোখানি?

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ১১:১২

পাক-ভারত সংঘাত বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, রাতের আঁধার কাটিয়ে দিল আলোর ঝলক, তবে তার উৎস ছিল গোলা; ফলে ছড়াল আতঙ্ক। প্রাণ বাঁচাতে হুড়মুড়িয়ে সবাই খুঁজছিল নিরাপদ স্থান। গতকাল প্রথম প্রহরে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো শুরু করতেই এই চিত্র দেখা গেছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে দুই সপ্তাহ আগে সন্ত্রাসী হামলায় অনেকের সিঁথির সিঁদুর মুছে দেওয়ার জবাবেই এই হামলা, বলছে নয়া দিল্লি। এই সামরিক অভিযানের নাম তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন সিঁদুর। সেই সিঁদুরে অন্য পাশের কাশ্মীরের অনেকেই হারাল স্বজন।
ভারতের দাবি, তাদের হামলায় নিহত হয়েছে ৭০ জন। পাকিস্তান বলছে, সংখ্যাটি ২৬। তবে সবাই যে মানুষ, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই কারও। জঙ্গিদের আস্তানা লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয় বলে নয়া দিল্লির দাবি। জইশ-ই মোহাম্মদের নেতা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ জন নিহত হওয়ার খবর জানা গেলেও ইসলামাবাদ বলছে, নিহতদের অধিকাংশই নিরীহ মানুষ।
পক্ষ না নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে বাংলাদেশকে
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে বলে মত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
কাশ্মীরে হামলার পর দুই দেশের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যা বড় হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও স্থিতিশীলতায় ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশকে কোনো পক্ষ না নিয়ে নিরপেক্ষ কূটনৈতিক অবস্থানে থাকতে হবে এবং যুদ্ধ হলে সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। তারা বলেন, ভারত থেকে খাদ্য ও কাঁচামাল আমদানির ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা বেশি। যুদ্ধ দীর্ঘ হলে আমদানি ব্যাহত হতে পারে, বাড়তে পারে মূল্যস্ফীতি।
তাই বিকল্প বাজার খুঁজে 'প্ল্যান বি' রাখতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। অন্যদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ এখনো আন্তর্জাতিকভাবে মধ্যস্থতার পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি, তবে আলোচনা ও পরামর্শ দিয়ে শান্তির বার্তা দিতে পারে।
সরকারকে আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় কূটনৈতিকভাবে সক্রিয় হতে হবে এবং কোনো পক্ষ না নিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পরিসরে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে হবে। সবশেষে ব্যবসায়ীদের আহ্বান, আঞ্চলিক শান্তির পক্ষে থেকে স্থিতিশীল বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে হবে।
পাকিস্তানে ভারতের হামলা উত্তেজনা বাড়াল
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ২২শে এপ্রিল কাশ্মীরের হেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে।
এর জবাবে মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তানের ছয়টি শহরে হামলা চালায় ভারত, দাবি করে তারা নয়টি সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করেছে। পাকিস্তান পাল্টা অভিযোগ করে বলেছে, মসজিদ, স্কুল ও জলবিদ্যুৎ স্থাপনায় হামলা হয়েছে, এতে নারী-শিশুসহ ৩১ জন নিহত এবং ৫৭ জন আহত হন।
ভারতও জানায়, সীমান্তে পাকিস্তানি গোলাবর্ষণে ১৫ জন বেসামরিক নিহত এবং এক সেনা মারা গেছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ ও তুরস্ক, শান্তির আহ্বান জানিয়েছে। আকাশপথে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, ফ্লাইট বাতিল হয়েছে দুই দেশেই। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ রক্তের বদলা নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য গড়ে তুলছেন। ভারতও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং সব প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনাও বাড়ছে। আন্তর্জাতিক মহল শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়, কিন্তু পরিস্থিতি যেকোনো সময় বড় সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।
বড় আকারে যুদ্ধের আশঙ্কা কতোখানি?
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাত বড় ধরনের যুদ্ধে রূপ নেবে কি না, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়, তবে বড় যুদ্ধ হবে কিনা তা নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ পদক্ষেপগুলোর ওপর। ভারতের 'অপারেশন সিঁদুর' এবং পাকিস্তানের পাল্টা জবাবে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, তবে দুই পক্ষই সরাসরি যুদ্ধ চায় না বলেই ধারণা।
ভারত দাবি করেছে, তারা সন্ত্রাসবিরোধী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে, সামরিক স্থাপনায় নয়। অন্যদিকে পাকিস্তান বলেছে, তারা উপযুক্ত সময়ে জবাব দেবে, তবে কীভাবে তা স্পষ্ট নয়। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এই সংঘাত জাতীয়তাবাদী চেতনাকে উসকে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার কৌশল।
বাংলাদেশের জন্য এই মুহূর্তে সক্রিয় কোনো ভূমিকা রাখা সম্ভব নয়, তবে শান্তির পক্ষে অবস্থান রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করাই হবে সঠিক পদক্ষেপ। এই ধরনের উত্তেজনা আঞ্চলিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে, যদিও দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য কম।
অনেকের মতে, এটা সীমিত আকারেই থাকবে এবং দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ হবে না, কারণ তা দুই দেশের জন্যই ক্ষতিকর। তবে এই সংঘাত যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে গোটা অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হবে—বিশেষত অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে।
যুদ্ধের দামামায় বড় দরপতন শেয়ারে
আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের আশঙ্কায় গতকাল দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক এক দিনে কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এতে বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক কমেছে ২৭০ পয়েন্ট এবং বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা।
যুদ্ধের আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে তারা শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করে, আর তাতেই বাজারে বড় ধরনের ধস নামে। ডিএসইতে ৩৮৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে, মাত্র নয়টির বেড়েছে। ভালো লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানির মধ্যেও বেশিরভাগের শেয়ারদর কমেছে।
বাজারে গুজব ছড়ায় যে বিএসইসির চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হবে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আরও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। যদিও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পুঁজিবাজার নিয়ে বৈঠকের ঘোষণা কিছুটা আশার আলো দেখায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু যুদ্ধ নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা এবং কোম্পানির মুনাফা নিয়ে সংশয়ও শেয়ারবাজার পতনের কারণ। তবে অনেকে আশাবাদী, বাজার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
উৎপাদন রপ্তানির খরায় কুপোকাত রিজার্ভ রেমিট্যান্সের বড়াই
কালের কণ্ঠে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি এখন কঠিন সময় পার করছে। রিজার্ভ কিছুটা বাড়ার পাশাপাশি রেমিট্যান্স ভালো এলেও অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও রপ্তানি খাতে বড় ধস নেমেছে। বিনিয়োগে স্থবিরতা, পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদি মন্দা এবং শিল্প খাতে বিপর্যয় অর্থনীতিকে বড় সংকটে ফেলেছে।
রাজস্ব আয়ের বড় অংশ সুদ পরিশোধে চলে যাচ্ছে, আর উৎপাদন কমে যাওয়ায় কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। রপ্তানিও কমে গেছে, বিশেষ করে এপ্রিল মাসে যা ছিল চলতি অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। গ্যাস সংকটের কারণে অনেক কারখানা ঠিকমতো চলতে পারছে না, ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গার্মেন্ট খাতসহ বিভিন্ন শিল্পের বড় অঙ্কের বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে। বিদেশি ক্রেতাদের সময়মতো পণ্য পাঠাতে বিমানপথে অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে, যা রপ্তানিকারকদের ক্ষতিতে ফেলছে।
সাধারণ মানুষ জীবনযাত্রার খরচ কমিয়ে দিয়েছে, আর বিনিয়োগকারীরা নতুন উদ্যোগ নিতে সাহস পাচ্ছেন না। অথচ সুশাসন ও নীতিগত সহায়তা থাকলে এই বিপর্যয় অনেকটা এড়ানো যেত। বিশ্বব্যাংক বলছে, জিডিপি প্রবৃদ্ধিও কমবে এবং প্রায় ৩০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে। এই বাস্তবতায় কেবল রেমিট্যান্সের বড়াই অর্থনীতির মূল সমস্যাগুলো ঢাকতে পারছে না। উন্নয়নবান্ধব নীতি, বাজার ব্যবস্থাপনা ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে গুরুত্ব না দিলে সংকট আরও বাড়বে।
কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না'
দেশ রূপান্তরে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামে র্যাব-৭-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পলাশ সাহা নিজ অফিসে নিজের অস্ত্র দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার হয়েছে, যেখানে তিনি লিখেছেন—তার মৃত্যুতে মা বা স্ত্রী কেউ দায়ী নন, বরং তিনিই দায়ী, কারণ কাউকেই ভালো রাখতে পারেননি।
চিরকুটে স্ত্রীকে স্বর্ণ নিয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইকে দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকাল ১০টার দিকে, যখন তিনি একটি অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সহকর্মীরা হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে রুমে গিয়ে দেখেন তিনি নিথর পড়ে আছেন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রয়োজন। পলাশ সাহা গোপালগঞ্জের বাসিন্দা এবং বিসিএস ৩৭ ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। তার স্ত্রী ও মা চট্টগ্রামেই থাকতেন। পরিবারের ধারণা, স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে চলমান দ্বন্দ্ব এবং পারিবারিক কলহ থেকেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
তার স্ত্রী বর্তমানে র্যাবের হেফাজতে আছেন এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরিবার অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
- এটিআর