বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
৬০০০ লাইসেন্সকৃত অস্ত্রের হদিস নেই

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ০৯:৩৭

ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা আ.লীগের
দীর্ঘ হচ্ছে ফেরার পথ
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, মাত্র ৯ মাসেই বড় ধরনের নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে আওয়ামী লীগ। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর সব চেষ্টাই ব্যর্থ হচ্ছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় দলটি। এরপর থেকেই চাপে পড়ে যান দলের নেতাকর্মীরা। ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা দলীয় কার্যালয় এবং নেতাকর্মীদের বাড়িতে চালায় হামলা ও ভাঙচুর। কিছু স্থানে অগ্নিসংযোগও করা হয়। পদধারী নেতা থেকে শুরু করে কর্মীরাও হন এলাকা ছাড়া।
অনেকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে থাকতে বাধ্য হন। যদিও পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে নীরবে অনেকে ফিরতে শুরু করেন। কিছু এলাকায় নেতাকর্মীরা মাঝে মধ্যে লুকিয়ে মিছিল করতেন। ভার্চুয়ালি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতেন শেখ হাসিনা। রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়ে তিনি ভারত থেকে নানা বার্তা দিতেন।
যমুনামুখী লংমার্চের হুঁশিয়ারি
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। খুলনায় অনুষ্ঠিত 'তারুণ্যের সমাবেশে' বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচন না হলে জনগণ যমুনামুখী লংমার্চে নামবে। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার একজন বিদেশি নাগরিককে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে দেশের সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলেছে, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
এ উপদেষ্টাকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানান তিনি। সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, সরকার এনসিপি ঘরানার দুই উপদেষ্টাকে রাখার মাধ্যমে নিরপেক্ষতা নষ্ট করছে।
তিনি তাদের পদত্যাগ দাবি করেন এবং বলেন, এদের কার্যক্রম ওপেন সিক্রেট। সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, সরকার বিদেশিদের সঙ্গে দেশের সমুদ্রবন্দর, নদীবন্দর ও করিডর নিয়ে গোপন চুক্তি করেছে।
এছাড়া আওয়ামী লীগকে 'ফ্যাসিবাদের দোসর' আখ্যা দিয়ে বলেন, ঢাকায় তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। বিএনপির এই সমাবেশে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। বরিশাল থেকেও শতাধিক গাড়িবহরে নেতাকর্মীরা খুলনায় সমাবেশে যোগ দেন। বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ না হলে জনগণ আন্দোলনে নামবে এবং বর্তমান সরকার সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিতে পারবে না।
বরাদ্দ কমছে শিক্ষা-স্বাস্থ্যেও
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আগামী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) সরকারের উন্নয়ন বাজেট বা এডিপির আকার প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমানো হচ্ছে। প্রায় সব খাতে বরাদ্দ কমলেও সবচেয়ে আলোচনার বিষয় হলো শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমে যাওয়া। অনেকেই আশা করেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকার এই দুই খাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে। কিন্তু খসড়া এডিপি বলছে, পরিবহন ও জ্বালানি খাত আগের মতোই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
শিক্ষা খাতে আগামী বছরের বরাদ্দ ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা কম। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা, আগের তুলনায় সোয়া ১২ শতাংশ কম। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, বরাদ্দ কমানোর কারণ হচ্ছে অব্যবহৃত অর্থ এবং বাস্তবায়নযোগ্যতা বিবেচনা করা।
তবে অর্থনীতিবিদদের মতে, বরাদ্দ ও খরচ হওয়ার দায় নির্ধারণ না করে বরং জবাবদিহি নিশ্চিত করা উচিত। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমালে দীর্ঘমেয়াদে জনগণের কল্যাণ ব্যাহত হবে। এই দুই খাতেই কাঠামোগত সংস্কার এবং টেকসই বিনিয়োগের প্রয়োজন। অথচ নতুন বাজেটে পরিবহন খাতে শিক্ষার দ্বিগুণ ও স্বাস্থ্যের তিনগুণ বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।
বড় প্রকল্পে না হাঁটার অঙ্গীকার করলেও সে পথেই অন্তর্বর্তী সরকার
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার শুরুতে বড় মেগা প্রকল্প না করার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে সে পথেই হাঁটছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে একনেক সভায় ছোট ও জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণের কথা বলা হলেও, এরপর একাধিক বড় প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে ১৩ হাজার ৫২৫ কোটি টাকার বে টার্মিনাল প্রকল্প, ভোলা-বরিশাল ১৭ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার সেতু প্রকল্প এবং ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার কালুরঘাট সেতু নির্মাণ। এছাড়া চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের উন্নয়ন, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনসহ বহু প্রকল্পে কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। অথচ আগের সরকারে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে প্রায় পৌনে ৩ লাখ কোটি টাকার অপচয় ও লুটপাট হয়েছে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে। অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, নতুন প্রকল্পগুলোতেও অনিয়মের ঝুঁকি রয়েছে এবং স্বচ্ছতা অনুপস্থিত।
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এসব প্রকল্প অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তবে কেন এসব নেয়া হচ্ছে? তবে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের দাবি, দূরদর্শী চিন্তা থেকেই কেবল প্রয়োজনীয় বড় প্রকল্প নেয়া হয়েছে এবং বাজেটের ঘাটতি কমিয়ে দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখাই সরকারের লক্ষ্য। তবু বিশেষজ্ঞরা এসব সিদ্ধান্তকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন।
নগর ভবনে ঝুলল ৬৫ তালা, আসিফকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
ইত্তেফাকের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং তার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের ৬৫টি ফটকে তালা লাগিয়ে সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। ফলে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কার্যত অঘোষিত ছুটিতে চলে গেছেন।
আন্দোলনের আয়োজকরা জানান, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ইশরাক হোসেনই বৈধ মেয়র, কিন্তু এখনো তাকে শপথ নিতে দেওয়া হয়নি। শনিবার বিক্ষোভকারীরা নগর ভবনের সামনে থেকে সচিবালয়ের দিকে লংমার্চ করলেও পুলিশি বাধায় ফিরে আসতে হয়। তারা নানা স্লোগানে ইশরাককে দ্রুত শপথ পড়ানোর দাবি জানান।
নগর ভবনে অবস্থানরত বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সাধারণ কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটাধিকার উপেক্ষা করছে এবং ইশরাককে আটকে রাখতে নানা কৌশল নিচ্ছে। তারা বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবেই তারা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে দেখতে চান।
রাক্ষুসে ব্যাংক পরিচালকরা অধরা
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে এক ভয়াবহ লুটপাটের চিত্র উঠে এসেছে। ব্যাংকের পরিচালকরা 'রক্ষক হয়ে ভক্ষক'-এর মতো সাধারণ মানুষের আমানতের টাকা নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। তারা বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে যোগসাজশ করে নামে-বেনামে, জাল কাগজে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। এই টাকা ফেরত আসেনি। এতে ব্যাংকগুলো এখন চরম সংকটে, অথচ অভিযুক্ত পরিচালকরা অনেকেই বিদেশে পালিয়ে আর বিলাসী জীবন কাটাচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ৫৮টি ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ প্রায় দুই লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা, যা গত আট বছরে ১৬০ শতাংশ বেড়েছে। ইসলামী ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণই প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাংক খাতের দুর্বল নীতি, স্বচ্ছতার অভাব ও জবাবদিহির সংকটেই এই দুর্নীতি ঘটেছে।
কিছু পরিচালক নিজের ব্যাংক থেকে না পেরে অন্য ব্যাংক থেকে নামধারী বা বেনামি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। কেউ কেউ আত্মীয়, ড্রাইভার বা সহকারীর নামে প্রতিষ্ঠান খুলে টাকা নিয়েছেন। আইনি জটিলতায় মামলা বা শাস্তি হচ্ছে না বললেই চলে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে সৎ উদ্যোক্তারা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
৬০০০ লাইসেন্সকৃত অস্ত্রের হদিস নেই
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় ১৯ হাজার ৫৯৪টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়। পরে গণ-অভ্যুত্থানের পর এসব লাইসেন্স বাতিল করা হয় এবং অস্ত্র থানায় জমা দেয়ার নির্দেশ আসে। কিন্তু ১৩ হাজার ৩৪৯টি অস্ত্র জমা পড়লেও ছয় হাজার ২৪৫টির কোনো হদিস মেলেনি।
অনেকেই ইচ্ছা করে বা আত্মগোপনে থেকে অস্ত্র জমা দেননি, কিছু অস্ত্র লুট হয়ে গেছে। বিশেষ করে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও গণভবন থেকে পাঁচ হাজার ৭৫৩টি অস্ত্র ও ছয় লাখের বেশি গুলি লুট হয়। এর মধ্যে এখনো উদ্ধার হয়নি প্রায় ১৪০০টি অস্ত্র ও লক্ষাধিক গোলাবারুদ। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, লুট হওয়া অস্ত্র অনেক চরমপন্থি ও শীর্ষ সন্ত্রাসীদের হাতে চলে গেছে। তারা এসব অস্ত্র দিয়ে অপরাধ, দখল, খুনসহ নানা কাজ করছে।
একাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্ত হয়ে ফের সন্ত্রাসী দল গঠন করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উদ্ধার না হওয়া অস্ত্রগুলো সমাজের জন্য বড় হুমকি। এগুলো রাজনৈতিক সহিংসতা ও নির্বাচনে ব্যবহার হতে পারে। অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে পুলিশের ধীরগতির কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। দ্রুত চিরুনি অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার না হলে আইনশৃঙ্খলার বড় সংকট তৈরি হতে পারে।
ডব্লিউএইচওর মানদণ্ড ছাড়াই টিকা ব্যবহার
আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে সরকার বিনামূল্যে টিকা দিচ্ছে। শুরুর দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রি-কোয়ালিফায়েড বিদেশি টিকা দেওয়া হলেও, গত এক দশক ধরে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান উৎপাদিত দেশীয় 'র্যাবিক্স-ভিসি' টিকা ব্যবহৃত হচ্ছে।
তবে এই টিকার ডব্লিউএইচওর অনুমোদন নেই, যদিও এটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের শরীরে ব্যবহারের টিকার জন্য ডব্লিউএইচওর মান থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দেশের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান টিকার ক্ষেত্রে এখনো সেই মান অর্জন করতে পারেনি, ফলে ডব্লিউএইচও স্থানীয় টিকাকে প্রি-কোয়ালিফিকেশন দিচ্ছে না। ২০১৫ সালে জাতীয় কমিটির অনুমোদন ছাড়াই এই দেশীয় টিকা ব্যবহার শুরু হয়। টিকা নিরাপদ দাবি করলেও এখন পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে তা যাচাই হয়নি।
২০২৩ সালে ছয় লাখের বেশি মানুষ এই টিকা নেয়। বর্তমানে সরকার কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের মাধ্যমে বিশেষ বরাদ্দে টিকা কিনছে, কারণ আগের অপারেশনাল প্ল্যান শেষ হয়ে গেছে। তবে র্যাবিক্স-ভিসি টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় থাকায় নমুনা বিদেশে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্যে এই কর্মসূচি চলছে।
নড়বড়ে নাটবল্টু বিমানে
দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ২৫শে অক্টোবর সৈয়দপুর থেকে ঢাকাগামী একটি বিমানের চাকা মাঝ আকাশে খুলে পড়েছিল। ঠিক সাত বছর পর, ২০২৪ সালের মে মাসে একই ঘটনা ঘটে কক্সবাজার-ঢাকা রুটে একই মডেলের (ড্যাশ-৮) উড়োজাহাজে।
দুইবারই বিমানে ৭১ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন, যারা পাইলটের দক্ষতায় প্রাণে বেঁচে যান। বারবার এই ধরণের দুর্ঘটনার পেছনে বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের অব্যবস্থা ও দুর্নীতি দায়ী বলে জানা যায়। একাধিকবার ভিভিআইপি ফ্লাইট, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর উড়োজাহাজেও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গেছে। পুরনো, জোড়াতালি দেওয়া উড়োজাহাজ ও ত্রুটিপূর্ণ নাটবল্টু নিয়ে বিমানের ভেতরের একটি চক্র লিজের নামে আয় করছে।
অথচ এই সব বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীরা বারবার ব্যর্থ হলেও শাস্তি পান না; বরং নানা উপায়ে ফিরে আসেন। পাইলটরা বারবার ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিলেও বিমানের সুনাম ও বদনাম একসাথে বহন করছে এই সংস্থা।
পাইলট জামিল বিল্লাহর নেতৃত্বে সাম্প্রতিক দুর্ঘটনাতেও সবাই নিরাপদে ছিলেন। বিমানের দুর্নীতি আর পাইলটদের দক্ষতা এক পাল্লায় মাপা যায় না বলে মত দিয়েছেন একজন পরিচালক। দুর্বল ব্যবস্থাপনার ভেতরেও পাইলটদের সাহসিকতা ও দায়িত্বশীলতা মানুষের আস্থা টিকিয়ে রেখেছে।
বিরান নগরীর পথে ঢাকা
নয়া দিগন্তের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, গত তিন দশকে ঢাকা শহর থেকে প্রায় ৫৬ শতাংশ গাছপালা হারিয়ে গেছে। বর্তমানে শহরের মাত্র দুই শতাংশ জায়গায় পরিবেশবান্ধব গাছ ও লতাগুল্ম আছে।
ফাঁকা জায়গা এবং সবুজায়ন কমে যাওয়ায় ঢাকা রূপ নিচ্ছে এক বিরান নগরীতে। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে বাড়ছে দালানকোঠা, কমছে গাছ ও খোলা জায়গা। শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা তীব্র তাপপ্রবাহের ঝুঁকিতে পড়েছে। পরিবেশবিদদের মতে, ঢাকায় কমপক্ষে ২০ শতাংশ সবুজ এলাকা দরকার হলেও বর্তমানে তা অনেকটাই কমে গেছে। প্রতি বছর তিন বর্গমিটার করে খোলা জায়গা কমছে। পাশাপাশি প্রতি বছর এক শতাংশ এলাকার তাপমাত্রা বাড়ছে।
বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, জলাবদ্ধতা, যানজটসহ নানা পরিবেশগত সমস্যা শহরটিকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। ঢাকার তাপমাত্রা এখন গ্রামাঞ্চলের চেয়ে গড়ে তিন দশমিক পাঁচ ডিগ্রি বেশি। ছায়া বা গাছ ছাড়া এই গরম থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন। পরিবেশবিদরা বলছেন, বৃক্ষ সংরক্ষণ ও সবুজায়নের জন্য এখনই আইন ও মাস্টারপ্ল্যান জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা মত দেন, ঢাকার পরিবেশ রক্ষায় জলাশয়, খালি জায়গা ও সবুজ এলাকা ফিরিয়ে আনা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তা না হলে ঢাকার বসবাসকারী কোটি মানুষ আরও ভয়াবহ পরিবেশগত সংকটে পড়বে।
- এটিআর