
বাংলাদেশের খবর
আগে নির্বাচন, পরে সংস্কার
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, গণতন্ত্রের পথ নির্বাচন। সেই নির্বাচনের জন্য জুলাই-আগস্টে আমাদের প্রথম বিজয় হয়েছে। আমাদের সেই আন্দোলন কিন্তু থেমে যায়নি। আমরা বিজয়ের দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছি। তাই সংস্কারের নামে নির্বাচন নিয়ে হেলাখেলা চলবে না। সংস্কারের যদি ঐকমত্য না হয়ে থাকে, তবে সেই সংস্কার করবে দেশের জনগণ। আপনারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) সংস্কার করার কে? নির্বাচনের মাধ্যমে সেই করবে।
আর তারেক রহমানের নেতৃত্বে হবে আগামীর নতুন বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মহাসমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ফরিদপুর বিভাগের সমন্বয়ে 'তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা' শীর্ষক এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না সভাপতিত্ব করেন এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির সঞ্চালনা করেন। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকার) মাথা থেকে নিচ পর্যন্ত পচন ধরেছে। এরা আওয়ামী লীগের চেয়েও বেশি ক্ষতি করছে।
বণিক বার্তা
টানাপড়েন ও বয়কটের আহ্বান সত্ত্বেও ভারতের পণ্য আমদানি কমেনি বাংলাদেশে
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক টানাপড়েন, কূটনৈতিক দূরত্ব ও ব্যবসায়িক নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থিতিশীল রয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি কমেনি, বরং সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা বেড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দিকে বাংলাদেশ ভারত থেকে প্রায় ১১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় বেশি। ভারতের প্রধান রফতানি পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে তুলা, খাদ্যশস্য, খনিজ ও জ্বালানি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রধানত তৈরি পোশাক রফতানি হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক টানাপড়েন থাকলেও দুই দেশের অর্থনীতি এতটাই একে অপরের উপর নির্ভরশীল যে এ সম্পর্ক সহজে ভাঙা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় পণ্যের চাহিদা, ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক ঘনিষ্ঠতা এবং পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থার বাস্তবতা এ বাণিজ্য টিকিয়ে রাখছে।
ব্যবসায়ীরা শঙ্কা প্রকাশ করলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরলে বাণিজ্য আরো মজবুত হবে। দুই দেশের আন্তঃনির্ভরশীলতা ও বিশ্বায়নের বাস্তবতায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক এখনো দৃঢ় রয়েছে, যা ভবিষ্যতেও ধরে রাখার চেষ্টা হওয়া উচিত।
প্রথম আলো
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতেই হবে
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত এবং এ জন্য দেশবাসী ও তরুণ প্রজন্মকে প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি ঢাকার নয়াপল্টনে আয়োজিত 'তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ'-এ লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, নির্বাচন নিয়ে সরকার সময়ক্ষেপণ করছে এবং সংস্কারের আড়ালে নানা উদ্দেশ্য লুকানো রয়েছে। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি নতুন ভোটার কোনো জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি, যা তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার প্রমাণ।
তিনি আরও বলেন, অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তিন মাসের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব হয়েছে, তাহলে এখন কেন সম্ভব নয়? তাই অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় আগ্রহী, তারা যেন পদত্যাগ করে জনগণের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেয়। সমাবেশে বিএনপির ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের হাজারো কর্মী অংশ নেয়, যার ফলে রাজধানীর বড় অংশে যানজট ও জনদুর্ভোগ তৈরি হয়।
অন্যান্য নেতারাও সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচন বিলম্বের অভিযোগ তুলে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানান। এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজনৈতিক চাপ তৈরির একটি কৌশল নিয়েছে বিএনপি—এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
আজকের পত্রিকা
বাংলা ইংরেজি গণিতে দক্ষতায় বিপর্যয়
আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে দক্ষতা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।
২০১৯ সালের তুলনায় অষ্টম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ফলাফল আশঙ্কাজনকভাবে খারাপ হয়েছে। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিতে ৪৭ শতাংশ, বিজ্ঞানে ৪৮ শতাংশ, ইংরেজি ও বাংলায় ২২ শতাংশ শিক্ষার্থীর দক্ষতা খারাপ বা খুবই খারাপ পর্যায়ে। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অবস্থা তুলনামূলক ভালো হলেও তারাও আগের বছরের তুলনায় পিছিয়ে গেছে।
গবেষণা বলছে, করোনা মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নতুন শিক্ষাক্রম চালু, শিক্ষাবর্ষ বিলম্বে শুরু হওয়া এবং শিক্ষক সংকট এই অবনতির প্রধান কারণ। অনেক বিদ্যালয়ে গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের উপযুক্ত শিক্ষক না থাকায় অন্য বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে ক্লাস করানো হচ্ছে, যার ফলে শিখনমান কমছে।
মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বাংলা ও ইংরেজিতে ভালো করেছে এবং শহরের শিক্ষার্থীরা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় সব বিষয়ে এগিয়ে। বিভাগভিত্তিক ফলাফলে খুলনা এগিয়ে, আর সিলেট সবচেয়ে পিছিয়ে আছে। শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শিখন ঘাটতি দূর করতে দ্রুত যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
নয়তো শিক্ষার্থীদের মৌলিক বিষয়ের জ্ঞান আরও দুর্বল হয়ে পড়বে, যা ভবিষ্যতের জন্য বড় হুমকি।
মানবজমিন
২৪ দিনে হাজারের বেশি পুশইন
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ চলতি মাসের শুরু থেকে বাংলাদেশে পুশইন শুরু করেছে। ৪ঠা মে থেকে ২৪ দিনের মধ্যে তারা দেশের ১৭টি জেলার সীমান্ত দিয়ে ৯৭৫ জনকে এবং সুন্দরবন হয়ে আরও ৭৮ জনকে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ এই ঘটনায় চারবার কূটনৈতিকভাবে প্রতিবাদ জানালেও ভারত এখনো কোনো সাড়া দেয়নি। বরং গতকালও নতুন করে সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ৮২ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে। বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, যাদের পুশইন করা হয়েছে, তাদের অনেকেই ভারতে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। কেউ কেউ কারাবন্দিও ছিলেন।
এমনকি, কিছু ব্যক্তির ভারতীয় নাগরিক হওয়ার প্রমাণও মিলেছে। ভারত কোনো আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই এদের পুশইন করছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আইন ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে। কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি সমাধানে চেষ্টার পাশাপাশি বিজিবিও সীমান্তে টহল ও নজরদারি বাড়িয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ কখনোই পুশব্যাক করে না, তবে যারা প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক, তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। ভারত যেন অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে—বাংলাদেশ সে আহ্বান জানিয়ে গেছে।
সমকাল
হাসপাতালে লঙ্কাকাণ্ড আহত ১৫, সেবা বন্ধ
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে আহত ভর্তি রোগীদের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে পাঁচ চিকিৎসকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। বুধবার সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা এই ঘটনায় চিকিৎসা সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন, অনেকে না চিকিৎসা নিয়েই ফিরে যান। শুধু জরুরি বিভাগ খোলা ছিল, অন্য সব সেবা বন্ধ ছিল।
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ সাত দিনের ছুটিতে যান এবং নিরাপত্তার কথা বলে হাসপাতাল বন্ধের সুপারিশ করেন। সংঘর্ষের পেছনে কারণ ছিল কিছু ভর্তি রোগীর বিষপান ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা।
কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতির কারণে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি শুরু করেন। এতে শত শত রোগীর অপারেশন ও চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানান, দুপুরে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ড এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জুলাই আন্দোলনের আহতরা অভিযোগ করেন, চিকিৎসা না পেয়ে অবহেলা ও দুর্ব্যবহার সহ্য করতে হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, কিছু রোগী ছুটি পেলেও হাসপাতাল ছেড়ে যাননি এবং আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন, এতে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ও উচ্চপর্যায়ে বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে।
কালের কণ্ঠ
পুরনো মডেলেই করের জাল
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর বাড়তি চাপ আসছে। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি অনেক পণ্যে নতুন করে ভ্যাট বসানো হচ্ছে। ব্যক্তিগত আয়কর স্ল্যাবে কিছুটা পরিবর্তন এনে মধ্যবিত্তের করহার দ্বিগুণ করে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।
আগে যেখানে সাত লাখ ২০ হাজার টাকায় কর দিতে হতো আট হাজার টাকা, এখন তা বেড়ে হচ্ছে ১০ হাজার ৫০০ টাকা। সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব এসেছে। যদিও প্রথমবার রিটার্ন দাখিলকারীদের জন্য ন্যূনতম কর এক হাজার টাকা ধরা হয়েছে।
নানান পণ্যের ওপর বাড়ছে কর ও ভ্যাট, যেমন মোবাইল ফোন, ফ্রিজ, এসি, ব্লেন্ডার, কুকার, এলপিজি সিলিন্ডার ইত্যাদি। বাড়ি তৈরির খরচও বাড়বে কারণ সিমেন্ট, লিফট ও নির্মাণসামগ্রীর ওপর কর বাড়ানো হচ্ছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে স্বস্তিও আছে, যেমন আবগারি শুল্কের সীমা বাড়িয়ে এক লাখ থেকে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে, ফলে সাধারণ আমানতকারীরা কিছুটা সুবিধা পাবেন। এছাড়া কিছু নিত্যপণ্যে উৎস কর কমানো হয়েছে, যেমন চাল, ডাল, তেল ইত্যাদির ওপর।
সব মিলিয়ে বাজেটটি পুরনো কর কাঠামো বজায় রেখে রাজস্ব আদায়ে জোর দিচ্ছে, কিন্তু এতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির দৈনন্দিন খরচ ও সঞ্চয়ের ওপর বড় চাপ তৈরি হবে। জনগণ আশার আলো দেখতে চাইলেও আপাতত তেমন সুখবর নেই।