
ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:২৯

বাংলাদেশের খবর
বাজেট ২০২৫-২৬ : লক্ষ্য তিন শূন্য পূরণ
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নির্গমন- এই তিন লক্ষ্য বাস্তবায়নের পাশাপাশি বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়তে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই সমাজ গঠনের রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে এবারের বাজেটে।
বাজেট প্রস্তাবনা বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, 'অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনে একটি উন্নত সমাজ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে আমরা যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছি, তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বনভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ। যার মাধ্যমে আমূল পরিবর্তন হবে এ দেশের মানুষের জীবনমানের এবং মুক্তি মিলবে বৈষম্যের দুষ্টচক্র থেকে।' প্রস্তাবনায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী অর্থবছরে মোট ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে যা জিডিপির ৯ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গতকাল বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে জাতির সামনে এই বাজেট তুলে ধরেন অর্থ উপদেষ্টা। সম্পদের সুষম বণ্টন ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া এবারের বাজেটের অন্যতম লক্ষ্য বলে জানান তিনি। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রাজস্ব আয় ও সরকারি ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে একটা যৌক্তিক ও বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট প্রণয়নও হবে এ বাজেটের অন্যতম উদ্দেশ্য। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করতে জনবল বাড়ানো হয়েছে।
বণিক বার্তা
বেহাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ঋণের বোঝা আরো বাড়বে
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ‘ঋণ করে ঋণ শোধ’ করার যে নীতি বিগত সরকারের মেয়াদে গড়ে উঠেছিল, অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেটেও তা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এ মুহূর্তে সরকারের ঘাড়ে চাপা ঋণের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের মধ্যেই সে বোঝা বেড়ে ২৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হবে বলে প্রাক্কলন করেছে সরকার। আর ২০২৬-২৭ অর্থবছরে এ ঋণ আরো বেড়ে ২৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকায় ঠেকতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি’তে সরকারের ঋণ বৃদ্ধির এ চিত্র তুলে ধরা হয়।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত দেড় দশকের শাসনামলে ঘোষিত বাজেট ছিল অনেকটাই ঋণনির্ভর। প্রতি বছরই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বাড়ানো হয়েছে বাজেটের আকার। তবে আয়ের উৎস সম্প্রসারণ করে নয়, বরং ঋণনির্ভর ঘাটতি বাজেটের মাধ্যমেই এর আকার বড় করা হয়েছিল। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গতকাল যে বাজেট ঘোষণা করেছেন, তাতেও ঋণনির্ভরতা কাটানোর দৃশ্যমান কোনো চেষ্টা দেখা যায়নি।
সংসদ না থাকায় বেলা ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মাধ্যমে বাজেট বক্তব্য দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত এ বাজেটের শিরোনাম দেয় হয় ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়’। পরে রাতেই রাষ্ট্রপতির সচিব ড. হাফিজ আহমেদ স্বাক্ষরিত ‘অর্থ অধ্যাদেশ ২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। জারি করা অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সরকারের আর্থিক প্রস্তাবগুলো কার্যকর করা এবং এ-সংক্রান্ত উদ্দেশ্যগুলো পূরণের জন্য কিছু আইন সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজন। বর্তমানে সংসদ না থাকায় সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করেছেন। তবে প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয়ে অংশীজনসহ সবার মতামতের ভিত্তিতে কোনো ধরনের সংশোধনের প্রয়োজন হলে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে অধ্যাদেশ সংশোধনের ভিত্তিতে আবার জারি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
মানবজমিন
সংযত বাজেটে বড় ঘাটতি
মানজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, নানা দিক বিবেচনায় রেখে সংযত বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অনেকটা গতানুগতিক ধাঁচের এই বাজেটে আগের বছরের মতোই বিশাল ঘাটতি রয়েছে- যা পূরণ করতে হবে অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ঋণ এবং বিদেশি অনুদান থেকে। বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকলেও আগের বাজেটের ধারায়ই বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ব্যক্তি পর্যায়ের করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে কিছু কিছু নিত্যপণ্যের দাম কমানোর প্রস্তাবনার পাশাপাশি সরকারের শুল্ক ও কর আহরণ বাড়ানোর উদ্যোগের কারণে বাড়বে বিভিন্ন পণ্যের দাম। গতকাল অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তৃতা টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।
সচিবালয় থেকে সরবরাহ করা হয় বাজেট ডকুমেন্ট। সাধারণত রাজনৈতিক সরকারের সময় জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হয় এবং সংসদেই বাজেট পাস হয়। এবার প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের পর উপদেষ্টা পরিষদের সভায় বাজেট পাস হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যবিত্তের জন্য দুঃসংবাদ রয়েছে। কারণ ফ্রিজ, এসি, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন, কসমেটিক্স পণ্য, ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের মতো পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বাজেটে বেশ কিছু স্বস্তির খবরও আছে। ব্যাংকে জমানো ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হবে না।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩.৬ শতাংশ। এটি বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে সংকোচনমূলক বাজেট।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার এমন এক সময়ে বাজেট ঘোষণা করেছে যার এক বছরের মধ্যে একটি জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। রাজনৈতিক সরকারগুলোর আমলে ভোটারকে তুষ্ট করতে নির্বাচনবান্ধব বাজেটের দিকে নজর থাকে বেশি। কিন্তু এবারের ঘোষিত বাজেটে এ ধরনের কোনো প্রকল্প নেই। আবার জনসাধারণকে স্বস্তি দিতে পারে এমন কোনো উদ্যোগও নেই।
বাজেট কিছুটা ব্যতিক্রমধর্মী: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে কিছুটা ব্যতিক্রম আখ্যায়িত করে এ বাজেটে মানুষকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা বিগত বাজেটের চেয়ে ছোট আকারের বাজেট আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাব করছি। প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে আমরা চেষ্টা করেছি সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। তাই প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান তুলে ধরার পরিবর্তে আমরা এবারের বাজেটে প্রাধান্য দিয়েছি মানুষকে। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নাগরিক সুবিধা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিশে*জোর দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চতুর্থ শিল্প-বিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমাগত যে সব সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার সুবিধা ভোগ এবং যে সব চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে তা মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগ দেয়া হয়েছে।
এর আগে সোমবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে উপদেষ্টা পরিষদের বিশে*বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বিশে*বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন শেষে তাতে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর বাজেট ডকুমেন্টস নিয়ে রামপুরার বিটিভি ভবনে যান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানে রেকর্ড করা হয় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপনা, যা বিকাল ৩টায় সমপ্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এই বাজেট প্রস্তাব পাস হবে ৩০শে জুন। ১লা জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এবারের বাজেটটি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর বাজেটের তুলনায় ভিন্ন।
কালবেলা
ফরমায়েশের ঝাঁপি, বোঝা বাড়ার ভয়
কালবেলার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার এক কঠিন সময়ে গতকাল সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। প্রস্তাবিত এই বাজেটে মোটা দাগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপ সামাল দিয়ে জনমনে স্বস্তি দেওয়ার একটা প্রাণপণ চেষ্টা করা হয়েছে। তবে কঠিন অর্থনৈতিক বাস্তবতায় প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে সরকারের আয় অর্থাৎ রাজস্ব প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি মেটাতে গতানুগতিকভাবে দেশীয় উৎস থেকেই বেশি অর্থের সংস্থানের কথা বলা হয়েছে। ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার সংস্থান করা হবে অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ঋণ ও সঞ্চয়পত্র থেকে। এর মধ্যে কেবল ব্যাংক খাত থেকেই নেওয়া হবে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। যেখানে বর্তমানে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশের নিচে। বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আভাস, আগামী অর্থবছরও দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের ঘরেই থাকবে। ফলে এই বাজেট কতটা বাস্তবায়নযোগ্য, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
দেশের প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর শর্ত রয়েছে আইএমএফের। এরই আলোকে আগামী অর্থবছরে প্রত্যক্ষ কর আহরণে জোর দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, যার কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে করমুক্ত আয়সীমা আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে না বাড়িয়ে পরবর্তী দুই অর্থবছরে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে তিনি। উল্টো আয়করের ৫ শতাংশের স্ল্যাব তুলে দিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন। এতে মধ্যবিত্তের করের বোঝা বাড়বে। এ ছাড়া কর ব্যবস্থা সহজ করার জন্য ৩৩ খাতে আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হয়েছে। এতে রিটার্ন দাখিল আরও কমে যাবে বলে মনে করেন খোদ রাজস্ব আহরণকারী সংস্থার কর্মীরা। বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা দেশের প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থাকে আধুনিক, ন্যায্য, করদাতাবান্ধব ও বিনিয়োগবান্ধব করার ঘোষণা দেন। আর আইএমএফের চাপে এরই মধ্যে সরকার রাজস্বনীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন আলাদা করে দুটি বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করেছে। যদিও আন্দোলনের মুখে বাস্তবায়নে কিছু সময় নিচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা। এমন বাস্তবতায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে এনবিআর থেকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের প্রস্তাব করেছেন। বর্তমান বাস্তবতায় এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সক্ষমতা এনবিআরের নেই বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন কালবেলাকে বলেন, ‘যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করাই হবে চ্যালেঞ্জ। আমাদের এখন প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা নেই। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখনো শেষ হয়নি, মাত্র চলছে। আমাদের ট্যাক্সের জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে, তা পূরণ করতে আমাদের সক্ষমতা নেই। এজন্য সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এনবিআরের যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা দরকার।’
কালের কণ্ঠ
কঠিন হবে ব্যবসা-বিনিয়োগ
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আস্থাহীনতায় বিনিয়োগ তলানিতে। উচ্চ সুদের কারণে কাঙ্ক্ষিত ঋণ পাচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। ডলারের উচ্চ দরে আমদানিতে বাড়তি খরচ। এর মধ্যে করের বোঝা চাপানো হলেও বেসরকারি খাতের জন্য স্বস্তির বার্তা নেই প্রস্তাবিত বাজেটে।
উল্টো আমদানি পণ্যের বাজার বানানো আর স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষার বদলে বরং দেশে উৎপাদিত পণ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পরও এ রকম বহু পণ্যের শুল্ককর কমিয়ে অসম প্রতিযোগিতা তৈরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে ডলার সংকট আরো জটিল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। কারখানা বন্ধ হচ্ছে একে একে। কিন্তু এসব কারখানা চালু ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর কর্মপরিকল্পনা নেই।
ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রকৃত স্থানীয় শিল্পের উন্নয়নে নীতি সহায়তা দেওয়ার উল্লেখযোগ্য কোনো দিকনির্দেশনা নেই। অন্যদিকে সরকারের পরিচালনা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। পুঁজিবাজারে আস্থাহীনতা চরমে। এর জন্য নেই কাঙ্ক্ষিত নীতি সহায়তা ও প্রণোদনা।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তৃতায় স্বীকার করেছেন, বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরি। এ জন্য বিনিয়োগের পথে বিদ্যমান অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করে তা দ্রুততম সময়ে দূর করার চেষ্টা করবেন। এটি বলে তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনের সাফল্যের কথা বলেছেন। অথচ এই সম্মেলনে মাত্র ১৫ কোটি ডলারের বিনিয়োগের সমঝোতা সই হয়েছে। আর স্টার্টআপ শপআপের ১১ কোটি ডলারের বিনিয়োগ এসেছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
নতুন বাংলাদেশে পুরোনো বাজেট
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, চরম আর্থিক সংকট এবং বিশৃঙ্খলা সত্ত্বেও অতীতের সরকারের মতোই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকার বিশাল আকারের বাজেট ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। যেখানে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। যদিও এ বাজেটের মোট আকার চলতি বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। মানুষের আয় বৃদ্ধি ও জীবনমান উন্নয়নের তেমন কোনো বিশদ পরিকল্পনার উল্লেখ নেই প্রস্তাবিত বাজেটে। যদিও বাজেট বক্তৃতার শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়’।
অতীতের সরকারগুলোও এ রকম বৈষম্যহীন সমাজ ও সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করে এসেছিল যুগ যুগ ধরে। অথচ প্রকৃত অর্থে সে সময়ে মানুষের জীবনমানের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। বদলায়নি সমাজব্যবস্থা, উন্নয়ন হয়নি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের। কমেনি অনিয়ম-দুর্নীতিও। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত বাজেটের মাধ্যমে দেশের মানুষের জীবনমানের তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অবশ্য এবার ধান, গম, আলু, পিঁয়াজ, রসুন, মটরশুঁটি, ছোলা, মসুর ডাল, আদা, হলুদ, শুকনো মরিচ, ভুট্টা, মোটা আটা, আটা, লবণ, চিনি, ভোজ্য তেল, কালো গোলমরিচ, দারচিনি, বাদাম, লবঙ্গ, খেজুর, ক্যাসিয়াপাতা, কম্পিউটার ও কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ এবং সব ধরনের ফলের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তবে এসব নিত্যপণ্যের ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের যে সিন্ডিকেট রয়েছে, তা ভাঙার কোনো কৌশল বাজেটে নেওয়া হয়নি।
একইভাবে মোবাইল ফোন, ওয়াশিং মেশিন, প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্র, এলপিজি সিলিন্ডার, চকলেটসহ আরও কিছু পণ্যে নতুন করে কর বাড়ানো হয়েছে। এতে শহর কিংবা গ্রামে বসবাসকারীদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে। গতকাল বাংলাদেশ টেলিভিশনে দেওয়া বক্তৃতার মাধ্যমে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য নতুন বাজেট ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে এবারের বাজেট বক্তৃতার পরিসর আগের তুলনায় অনেক ছোট। বর্তমান সরকার অরাজনৈতিক হওয়ায় নেই কোনো রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষও।তবে বাজেটের আকার যা কমানো হয়েছে তা বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এজন্য চলতি বাজেটে বিশাল আকারের ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের মতো বিশাল লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে; যা অতীতের সরকারগুলোও এভাবেই দিয়ে এসেছিল। এ ছাড়া ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার বিশাল ঘাটটি অর্থায়নে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়া হবে। আমাদের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করবে।’ ডুবন্ত ব্যাংক ও সামগ্রিক আর্থিক খাতের সংস্কারে যেসব কার্যক্রম চলমান রয়েছে সেগুলো কবে নাগাদ শেষ হবে তারও কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানানো হয়নি প্রস্তাবিত বাজেটে। ২০২৬ সালের নভেম্বরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ এলডিসি তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবে। এর ফলে বৈশ্বিকভাবে রপ্তানির বাজারে বাংলাদেশকে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সেই চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করা হবে তারও কোনো নির্দেশনা নেই বাজেটে।
টানা কয়েক বছর ধরে দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ ১০ শতাংশের কাছাকাছি। দুই মাস ধরে কিছুটা কমলেও এখনো সেটা ২ অঙ্কের ঘর ছুঁইছুঁই করছে। অথচ এক বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপ ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। অতীতের সরকার যেটা বছরের পর বছর বলে এসেছে কিন্তু বাস্তবে তা কমাতে পারেনি। আবার আর্থিক খাতের দুরবস্থার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবার মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ অর্জিত হবে বলে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
যুগান্তর
করজালে নিরুত্তাপ বাজেট
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আমেরিকান বিনিয়োগকারী রবার্ট কিয়োসাকির অভিমত- ‘একটি আর্থিক সংকট পেশাদার বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি দুর্দান্ত সময় এবং গড় বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ভয়ংকর সময়’। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ অর্থনৈতিক সংকটে দাঁড়িয়ে প্রথম বাজেট দিতে গিয়ে কিছুটা রবার্ট কিয়োসাকির পথে হাঁটার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কতটা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে পারবেন-তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
তবে কোষাগারের নাজুক পরিস্থিতি উত্তরণে তিনি নজর দিয়েছেন কর ও ভ্যাটে। রান্নাঘরের সামগ্রী, গৃহস্থালি ও প্লাস্টিকের তৈরি পণ্যসহ বেশ কিছুতে চাপিয়ে দেন বাড়তি ভ্যাটের বোঝা। এতে অনেকটা চাপের মুখে পড়বেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। পাশাপাশি সম্প্রসারণ করেছেন করজালের পরিধি। এসি-ফ্রিজসহ বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর বৃদ্ধি করায় এসব পণ্যে দাম বেশি গুনতে হবে ভোক্তাদের।
এছাড়া শিল্প খাতে কর অব্যাহতির সুবিধায় লাগাম টেনে দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। ২০২৫ সালের জুনে যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর অব্যাহতির সুবিধার মেয়াদ শেষ হবে, নতুন করে প্রতিষ্ঠানগুলো এই বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে না। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে যেসব প্রতিষ্ঠান কর অব্যাহতি পাচ্ছে এবং হ্রাসকৃত হারে কর দেওয়ার সুবিধা ভোগ করছে-এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও বাতিল করা হয়েছে।
অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেননি সালেহউদ্দিন আহমেদ। তবে তিনি আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়ন, মার্কিন প্রশাসনের শুল্ক আরোপ ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, বিগত মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি হ্রাসের প্রবণতা দেখা গেলেও তা এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। মার্কিন প্রশাসনের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্কের নেতিবাচক প্রভাবও আমাদের অর্থনীতির ওপর পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, সম্প্রতি যে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করা হয়েছে, তার কোনো নেতিবাচক প্রভাব আপাতত বাজারের ওপর পড়ার সম্ভাবনা না থাকলেও, এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হচ্ছে। এসব ঝুঁকি মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বৈষম্যহীন ও টেকসই ভিত্তি নিশ্চিত করা এখন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
সমকাল
সংস্কারের বৈঠকেও নির্বাচনের সময় নিয়ে আলোচনা
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, সংস্কারের সুযোগ হাতছাড়া না করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ২৮ রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
দলগুলো নিয়ে আজ একই স্থানে শুরু হবে সংস্কারের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ। প্রথম দিনে ৭০ অনুচ্ছেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, সংসদের নিম্নকক্ষে নারী আসনের নির্বাচন এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটির গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হবে।
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো আগের অবস্থানই পুনর্ব্যক্ত করেছে বলে গতকালের বৈঠক সূত্র সমকালকে জানিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদ, সিপিবি, বাসদ, ১২ দলীয় জোট, বাংলাদেশ জাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্তত ৯টি দল একই দাবি জানিয়েছে।
অন্য অনেক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনে রাজি। এর আগেই সংস্কার সম্পন্ন হতে হবে– এ শর্ত দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছে, জুলাই সনদ সই হওয়ার পর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময়সূচি, অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনকে সমর্থন জানিয়েছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল ও জোটের ৩৪ প্রতিনিধির ২৬ জন বক্তৃতা করেন। বিকেল ৪টায় শুরু হয়ে আড়াই ঘণ্টা চলে বৈঠক।
সুযোগ যেন হারিয়ে না যায়
প্রধান উপদেষ্টা নিজেই ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি। তিনি বৈঠকের শুরুতে বলেন, ‘এখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা হচ্ছে; সংস্কারকে রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে গাইড করবে, কোথায় নিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সংস্কারের। প্রথমে ছয়টি কমিশনকে ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এর পর ঐকমত্য গঠনে আলাদা কমিশন করা হলো। তা ফলপ্রসূ হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর আনন্দসহ সহযোগিতায়। সবাই বসলে নিশ্চয় ভালো কিছু আসবে। শেষ পর্যন্ত সবাই মিলে জুলাই সনদ করব।’
দ্বিতীয় পর্বে কী হবে, তা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, অনেক বিষয়ে আমরা কাছাকাছি এসে গেছি। আরেকটু হলেই ঐকমত্যের তালিকায় আরেকটি সুপারিশ যুক্ত হয়; এ সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি। যেটুকু দূরত্ব ছিল, তা ঘুচিয়ে এনে যত ঐকমত্যের বিষয় আছে, তাতে যেন আরও কিছু যোগ করতে পারি। জাতীয় একটি সনদ হবে। জাতি হিসেবে গর্বিত হিসেবে যেন দাঁড়াতে পারি। বিভক্তীকরণের রাজনীতি সৃষ্টি নয়; দেশের উন্নয়ন-মঙ্গলের জন্য, ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য, যাতে চমৎকার একটি জুলাই সনদ করতে পারি। সমাপনী বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মূল জিনিস হলো ঐক্য ধরে রাখা, যাতে জুলাই সনদ সমৃদ্ধ করতে পারি। জাতি যেন দেখতে পারে, যারা এখানে আছি, তারা কী কী বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছি।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ছয় মাস মেয়াদি ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। গতকালের বৈঠকে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “কমিশনের মেয়াদ আগস্টে শেষ হচ্ছে। এর আগেই জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করতে কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ পবিত্র দায়িত্ব পালনে অবশ্যই সফল হতে হবে।”
প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন
সম্পর্কিত
পঠিত
মন্তব্য করুন