Logo

নির্বাচিত

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

যে কারণে চামড়ার দামে ধস

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৯:৩১

যে কারণে চামড়ার দামে ধস

বাংলাদেশের খবর
সংক্রমণ বাড়ছে, প্রস্তুত হচ্ছে হাসপাতাল
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশে করোনা উদ্বেগের পর্যায়ে না হলেও নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। প্রতিবেশী তিনটি দেশে সংক্রমণ কিছুটা বেশি হওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আবারও করোনা পরীক্ষা চালুর পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে কোভিড শয্যা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

প্রাথমিকভাবে যেসব মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে আরটি-পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেখানে সীমিত পরিসরে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফর বলেন, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত দেশে করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন ১৫৮ জন। আর জুন মাসের প্রথম ১০ দিনে শনাক্ত হয়েছেন ৫৪ জন। এর অর্থ, সংক্রমণে উল্লেখযোগ্য কোনো পার্থক্য নেই। তবে প্রতিবেশী দেশগুলোতে সংক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। তিনি আরও জানান, তারা ইতোমধ্যে ২৮ হাজার দ্রুত করোনা শনাক্তকরণ কিট পেয়েছেন। আজ (গতকাল) ১০ হাজার আরটি-পিসিআর কিট পাচ্ছেন। এসব কিট কাল-পরশুর মধ্যে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে পৌঁছানো হবে। 

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ১৭ লাখ টিকা বিভিন্ন টিকাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে আগেই। টিকা আগের নিয়মেই দেওয়া হবে। ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ, দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগা মানুষ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, এমন মানুষ টিকা পাবেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো দেশেও করোনাভাইরাসের নতুন একটি উপধরনে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। এটি ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ভাইরাসজনিত সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনাভাইরাসের কয়েকটি নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট এরই মধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধে দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরের আইএইচআর ডেস্কগুলোয় নজরদারি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়গুলো জোরদার করার বিষয়ে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসাধারণের করণীয় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে- জনসমাগম যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন এবং উপস্থিত হতেই হলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন। হাঁচি বা কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন। ঘন ঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ ধরবেন না। আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।

যুগান্তর
নির্বাচনই প্রধান এজেন্ডা
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঐতিহাসিক বৈঠক হতে যাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ডরচেস্টার হোটেলে বৈঠকটি হবে রুদ্ধদ্বার। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টার ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক। এ কারণে বৈঠকের এজেন্ডা নিয়ে জনমনে আরও বেশি চাঞ্চল্য ও উৎসাহ তৈরি হয়েছে। তবে দুই পক্ষের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র যুগান্তরকে জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এবং ইতোমধ্যে দুই তরফ থেকে এ বিষয়ে প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনার প্রধান বিষয় হবে জাতীয় নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনা। এজন্য সরকার এপ্রিল থেকে সরে এলে, বিএনপিও ডিসেম্বর থেকে সরে আসবে। সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করাই আলোচনা-সমঝোতার প্রধান বিষয় হয়ে দেখা দিতে পারে।

এছাড়া চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার, বিচার, জুলাই চার্টারসহ (জুলাই সনদ) নানা ইস্যু একে একে আলোচনায় উঠে আসবে। এমনকি নির্বাচিত পরবর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতীয় সংসদে অন্তর্বর্তী সরকারের সব কর্মকাণ্ড অনুমোদন দেওয়াসহ এ সংক্রান্ত অনেক কিছু আলোচনায় আসবে বলে বিশ্লেষকদের অনেকে অভিমত দিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা মনে করেন, দ্বিপাক্ষিক এ ঐতিহাসিক আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে চলমান রাজনীতিসহ অনেক কিছু বিপদগামী হতে পারে। তবে কেউ কেউ এমনও বলেছেন, দেশের সার্বিক স্বার্থে এ বৈঠকের সার্বিক আলোচনা, মতবিরোধ ও সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা ঠিক হবে না। বরং সেটি পর্যায়ক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে বাস্তবায়িত হতে পারে। কিন্তু আগে প্রকাশ করা হলে নানামুখী ষড়যন্ত্র বিস্তার লাভ করবে এবং দেশ ও জনস্বার্থের অনেক ভালো উদ্যোগও ভেস্তে যেতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘বৈঠকের ফলাফল ইতিবাচকই হবে বলে বিশ্বাস করি। আলোচনার মাধ্যমে একটা সমঝোতায় দুই পক্ষ পৌঁছাবে বলে মনে করি। এতে দেশের জন্য মঙ্গল হবে, রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে, নবদিগন্তের সূচনা হবে। কিন্তু এই আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ব্যর্থ হলে বহুবিধ সংকট দেখা দেবে। তবে সবাই বিশ্বাস করতে চায়, আলোচনার মধ্যে মতবিরোধ হতেই পারে, কিন্তু পরিশেষে দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে গিয়ে উভয়পক্ষ ছাড় দেবে এবং অনেক বিষয়ে সমাধান আসবে। পুরো জাতি এমনটিই প্রত্যাশা করে। এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায়, এটা নতুন কোনো বিষয় নয়। যেহেতু আমরা আলোচনায় যাচ্ছি, এখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। সে পর্যন্ত আমাদের চুপ থাকতে হবে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গোটা জাতি আজ লন্ডনের দিকে তাকিয়ে। বিশ্বাস করি-এটি হবে ঐতিহাসিক বৈঠক এবং এ বৈঠকের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে।’ তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ডিসেম্বরে নির্বাচনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে বিএনপি। যৌক্তিক সময়েই নির্বাচন হবে বলে জাতি প্রত্যাশা করে। আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনসহ সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।’

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, শুধু বিএনপি নয়, পুরো জাতি এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে। বৈঠকের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের পথ সুগম হবে বলে প্রত্যাশা সবার। সেক্ষেত্রে উভয়দিক থেকেই কিছুটা ছাড় দিতে হবে। তারা বিশ্বাস করতে চান, বৈঠক শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তারেক রহমান হাসিমুখে বেরিয়ে আসবেন। তাদের সেই প্রত্যাশিত হাসিই বলে দেবে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী বৈঠকের সমাপ্তি ঘটেছে। অতঃপর ফলাফল দেখে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে বিএনপি।

সাবেক মন্ত্রী ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনের দিনক্ষণের ধোঁয়াশা কেটে যাবে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে পতিত স্বৈরশাসকের উসকানি এবং সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, আশা করছি এই বৈঠকের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু সমাধান আসবে।

সমকাল
রোজার আগে নির্বাচনে জোর দেবে বিএনপি
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক মহল তো বটেই, সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার লন্ডনের হোটেল ডোরচেস্টারে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে বৈঠকটি হওয়ার কথা রয়েছে। 

এই বৈঠকে আগামী সংসদ নির্বাচনের পথনকশা (রোডম্যাপ) নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের পাশাপাশি দেশের অনেক সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে বিএনপির নেতারা আশা করছেন। বৈঠকে সংস্কার, ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার ও জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের সঙ্গে দূরত্বও অনেকটা কমে আসবে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। 

নেতারা জানান, এই বৈঠকের মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যেরও একটা দরজা খুলবে। আন্তর্জাতিক মহলে একটা বার্তাও যাবে– বিএনপি ও সরকার একসঙ্গে পথ চলছে। বৈঠকে বসার মানেই হলো এখানে একটা ইতিবাচক দিক আছেই।

এদিকে বৈঠক সামনে রেখে গত মঙ্গলবার লন্ডন গেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। যদিও তিনি বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না। ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ বৈঠক হবে। তবে তিনি বিগত দিনে সরকারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোয় দলের অবস্থান, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের যৌক্তিকতাসহ সংস্কার, গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির অবস্থান বিষয়ে তারেক রহমানকে সহায়তা করবেন। ডিসেম্বরে না হলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থাৎ রোজার আগে যাতে নির্বাচনটা হয়, সে বিষয়টিতে তারেক রহমান জোর দিতে পারেন।  

জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে টানাপোড়েন বাড়তে থাকে। আদতে এপ্রিলে নির্বাচন হবে কিনা, কিংবা নির্বাচন কবে হবে– তা নিয়ে বিএনপিতে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়। এর মধ্যেই ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকটি নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে এ বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রস্তাবিত বৈঠকটিকে অত্যন্ত ইতিবাচক উন্নয়ন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই বৈঠকের মাধ্যমে গঠনমূলক আলোচনার পথ তৈরি হবে, যা রাজনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক হবে। এটি বর্তমান সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য আশার আলো জ্বালাবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গতকাল সমকালকে বলেন, ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। অন্যদিকে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাদের মধ্যকার অনুষ্ঠিত বৈঠকে অনেক কিছুরই সমাধান হতে পারে। এটা আমরা বিশ্বাস করি। বর্তমানে যে একটা অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটারও সমাধান আসতে পারে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সমকালকে বলেন, লন্ডনের বৈঠক নিয়ে শুধু বিএনপি নয়, পুরো দেশবাসী আশান্বিত। এখান থেকে আগামী দেশ বিনির্মাণে অনেক বড় সিদ্ধান্ত আসতে পারে। 

এই বৈঠক নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গোটা জাতি লন্ডনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বিশ্বাস করি, এটি হবে ঐতিহাসিক বৈঠক। এর মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে। ডিসেম্বরে নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ডিসেম্বরে নির্বাচনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে বিএনপি। যৌক্তিক সময়েই নির্বাচন হবে বলে জাতি প্রত্যাশা করে। আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনসহ সব সমস্যা সমাধান সম্ভব।  

বিএনপি শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, দুই নেতার এই প্রথম সাক্ষাতের গুরুত্ব অনেক বেশি। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনের সময়, নির্বাচনপরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডা, তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রাসঙ্গিকতাসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হতে পারে। এ বৈঠকে অনেক সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি কিছু বিষয় সহজ হয়ে যেতে পারে। 

নেতারা বলেন, নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি যে নানা ষড়যন্ত্র, সেটি তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি যে ড. ইউনূসের অধীনেই নির্বাচন চায় এবং তার হাত ধরেই যে দেশের গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটুক তাও প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হবে। বৈঠকে ড. ইউনূসকে জানানো হবে, নির্বাচনের জন্য সর্বোত্তম সময় হচ্ছে আগামী ডিসেম্বর। তবে ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থাৎ রোজার আগে নির্বাচন হলে সব ষড়যন্ত্র কাটিয়ে উঠে গণতন্ত্রের রাস্তায় পথচলা শুরু হতে পারে। অন্যদিকে সরকার ঘোষিত এপ্রিলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে কী কী সমস্যায় পড়তে হতে পারে তাও তুলে ধরবেন তারেক রহমান।

সংস্কার প্রশ্নে শুরু থেকেই বিএনপি এই সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। নিরবচ্ছিন্নভাবে তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিচ্ছে। এ অবস্থায় যেসব সংস্কারে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে, ড. ইউনূসকে সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে বলবেন তারেক রহমান। বিএনপির অবস্থান হচ্ছে, ঐকমত্য হলেও যেসব সংস্কারে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন, সেটা নির্বাচিত সংসদ করবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মতৈক্য সৃষ্টিতে উদ্যোগ নিতে সরকারপ্রধানকে আহ্বান জানাবেন তিনি। আর যেসব সংস্কারে ঐকমত্য হয়নি, সেগুলো পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ করবে। 

বাংলাদেশ প্রতিদিন
লন্ডন বৈঠকেই সমাধান!
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, কাল শুক্রবার সকালে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে সব রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হবে বলে আশা করছে উভয় পক্ষ। সরকার ও বিএনপি ছাড়াও দেশের অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রত্যাশা একটি ফলপ্রসূ বৈঠক। দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে আগামীকালের বৈঠককে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছেন। তাদের প্রত্যাশা, এ বৈঠকের মধ্য দিয়েই রাজনৈতিক সব মতপার্থক্য ও দূরত্ব দূর হবে। আলোচনায় সব সমস্যার সমাধান হবে এবং যৌক্তিক সময়েই অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী কমিটির একাধিক সদস্যের মতে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক ফলপ্রসূ হলে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি, প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের উদ্যোগ এবং জুলাই সনদসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির মধ্যে যে মতপার্থক্য ও দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা অনেকটাই কমে আসতে পারে। বৈঠককে কেন্দ্র করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ইতোমধ্যে লন্ডন পৌঁছেছেন। তিনিও বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে দলীয় প্রতিনিধিদলে অংশ নিতে পারেন। তবে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের মূল বৈঠকটি হবে কার্যত ‘ওয়ান টু ওয়ান’। রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে দুজন ছাড়া আর কেউ থাকবেন না। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক রাজনীতিতে সুবাতাস আনবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, গোটা জাতি এখন লন্ডনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা বিশ্বাস করি, এটি হবে একটি ঐতিহাসিক বৈঠক এবং এ বৈঠকের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে। যৌক্তিক সময়েই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনসহ সব সমস্যা সমাধান সম্ভব।

আগামীকাল স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টায় লন্ডনের হোটেল ডোরচেস্টারে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকের আয়োজন মূলত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেই করা হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, লন্ডন থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ‘ওয়ান টু ওয়ান’ একটি বৈঠকের চেষ্টা করা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। তিনজন উপদেষ্টা এই প্রক্রিয়া ও যোগাযোগের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরের কর্মসূচি নির্ধারণের পর গত সোমবার মূলত বিএনপির পক্ষ থেকে চূড়ান্তভাবে ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হয় সরকারের আহ্বানে। ঢাকা ও লন্ডনের সূত্রগুলো জানায়, তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির দিক থেকেও সাক্ষাৎ ও বৈঠক নিয়ে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার কারণে বৈঠকটি হতে যাচ্ছে।

গত সোমবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকের মতামতের ভিত্তিতেই আগামীকালের এ বৈঠকে বিএনপির অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বৈঠকটিকে বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য বড় একটা টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে দেশের অনেক সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

কালের কণ্ঠ
ঋণখরায় ব্যবসা-বিনিয়োগ স্থবির
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা চলছে। ডলার সংকট, বিদ্যুৎ-জ্বালানির সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্যোক্তাদের আস্থাহীনতার পাশাপাশি এই স্থবিরতার বড় কারণ ঋণের উচ্চ সুদহার। কঠোর মুদ্রানীতির কবলে পড়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধিতে বড় ধাক্কা লেগেছে। এতে পুরনো ব্যবসার সম্প্রসারণ যেমন থমকে গেছে, তেমনি নতুন বিনিয়োগ ঠেকেছে তলানিতে।

আর বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিল্পোৎপাদনও। চলমান অস্থিরতায় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের বিক্রিতেও ধস নেমেছে। চাকরি হারাচ্ছেন কর্মীরা, বাড়ছে বেকারত্ব। শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত না হওয়ায় নতুন বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। আর মাত্রাতিরিক্ত সুদ দিয়ে ব্যবসা করাও সম্ভব নয় বলেও মত দেন তাঁরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, এপ্রিলে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.৫০ শতাংশ, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৪০ শতাংশ কম। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ব্যাংকগুলোর বেসরকারি ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ২১ হাজার ৮২২ কোটি, যা মার্চ মাসে ছিল ১৭ লাখ ১৯ হাজার ৫১২ কোটি টাকা।

এর আগের মাস মার্চে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭.৫৭  শতাংশ, যা জুলাই-আগস্টের পটপরিবর্তনের পর টানা আট মাস ধরে নিম্নমুখী প্রবণতায় ছেদ টেনেছিল। আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬.৮২ শতাংশ। তার আগের মাস জানুয়ারিতে এ খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.১৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধির যে তথ্য আছে, তার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২১ সালের মে মাসে কভিড মহামারির মধ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ৭.৫৫ শতাংশে নেমেছিল। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ছিলেন ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে বিনিয়োগ হচ্ছে না। বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান কমে যাবে। দারিদ্র্য বিমোচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, সাম্প্রতিককালে দেশের বেসরকারি খাতের অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। ব্যাংক ঋণই ব্যবসায়ীদের প্রধান ভরসা। কিন্তু সেখানে সুদহার বেশি। বিকল্প অর্থায়নের উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের অবস্থাও ভালো না।

ব্যাংকের উচ্চ সুদহারও বেসরকারি ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও ব্যাংকাররা। বর্তমানে ব্যাংকগুলো ঋণ দিচ্ছে ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ সুদে। আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে ৯ শতাংশের ওপর থাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণেই ঋণের সুদহার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মানবজমিন
যে কারণে চামড়ার দামে ধস
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, সাভারের হেমায়েতপুরের ২০০ একর জমিতে গড়ে ওঠা চামড়া শিল্প নগরের কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। শিল্পপার্কে দেড়শ’র অধিক কারখানার মধ্যে উৎপাদনে আছে ১৩০-১০৪টি। এর  মধ্যে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সনদ আছে ৮টি ট্যানারির। সনদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে আরও ৭টি মতো। কিন্তু সিইটিপি পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় বাকিগুলোর সদন অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চামড়ার ভালো দাম পাচ্ছেন না বলে দাবি ট্যানারি মালিকদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ কর্তৃপক্ষ গঠনের মাধ্যমে সমন্বিত পরিকল্পনায় কয়েক বছরেই মিলতে পারে সুফল। তাদের মতে, সিইটিপির উন্নয়ন, এলডব্লিউজি সনদ পাওয়া, কাঁচা চামড়ার উন্নত সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মতো বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হলে চামড়ার দাম ভালো পাওয়া যাবে। 

এদিকে সাভারের চামড়া শিল্প নগরে ত্রুটিপূর্ণ সিইটিপি নির্মাণে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ঈদ পরবর্তী শিল্পনগরী পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধলেশ্বরী নদীকে বাঁচিয়ে চামড়ার বিশ্ববাজার ধরতে সাভারের শিল্পনগরীতে নতুন আরেকটি কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ করবে সরকার। 

জানা গেছে, ১৯৫০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাজধানীর হাজারীবাগ ছিল ট্যানারি শিল্পের বৃহৎ ঠিকানা। কিন্তু ট্যানারি শিল্প এলাকায় ছিল না আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। আবার লোকালয়ের কাছে হওয়ায় এর দূষণ বিপর্যস্ত করছিল স্থানীয়দের, দূষিত হচ্ছিল বুড়িগঙ্গা। হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প সরাতে ২০০৩ সালে সাভার চামড়া শিল্পনগরীর প্রকল্প হাতে নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। মোট ১২ দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয় এ নগরী। পরে হাজারীবাগ থেকে ২০১৭ সালে সাভারের হেমায়েতপুরের চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তর করা হয় ট্যানারিগুলো। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া নিশ্চিত হয়নি। দুই দশকের চেষ্টাতেও গড়ে তোলা যায়নি মানসম্পন্ন শিল্প পার্ক। তরল বর্জ্য পরিশোধনে স্থাপিত সেন্ট্রাল এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (সিইটিপি) পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়ায় দূষিত পানি যাচ্ছে সরাসরি ধলেশ্বরী নদীতে। 

ওদিকে গত বছরের ৫ই আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিবেশ নিয়ে সরব থাকা কয়েকজন বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু তারা দায়িত্ব নেয়ার ১০ মাসেও এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি বলে অভিাযোগ সংশ্লিষ্টদের। 

এলডব্লিউজি সনদ দরকার: বিশ্বের বড় ব্র্যান্ডগুলোর কাছে ভালো দামে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য বিক্রি করতে হলে বৈশ্বিক সংস্থা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ থাকতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে মাত্র ৮টি প্রতিষ্ঠানের এলডব্লিউজি সনদ রয়েছে। বাংলাদেশ মূলত এমন সব বাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে যেখানে ব্র্যান্ড মূল্য নেই। বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, চামড়ার তরল ও কঠিন বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে এলডব্লিউজি সনদের জন্য অডিটরকে ডাকতে পারি। কিন্তু হচ্ছে না। চামড়া খাতের উন্নয়নে বিশেষ কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হলেও, তা বাস্তবতার মুখ দেখেনি।

বণিক বার্তা
রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠানামা করছে ১১ মাস ধরে
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই উৎস রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়। চলতি অর্থবছরে এ দুটি খাতেই বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর মধ্যে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। আর প্রায় ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে রফতানি আয়ে। তবে প্রধান এ দুই উৎসের উচ্চ প্রবৃদ্ধিও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে পারছে না। গত ১১ মাস বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (বিপিএম৬) অনুযায়ী, গত ২৯ মে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৭ কোটি বা ২০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। যদিও চলতি অর্থবছরের শুরু তথা ২০২৪ সালের ১ জুলাই এর পরিমাণ ২১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার ছিল। সে হিসাবে গত ১১ মাসে রিজার্ভ না বেড়ে উল্টো ১ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার কমে গেছে। যদিও এ সময়ে কেবল রেমিট্যান্স হিসেবেই দেশে ৬ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার বেশি এসেছে। আর রফতানি আয় বেশি এসেছে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার।

এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় বাবদ বেশি আসা প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার গেল কোথায়? এ প্রশ্নের জবাব মিলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যালান্স অব পেমেন্ট (বিওপি) তথা দেশের সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যের পরিসংখ্যানে। অর্থনীতির খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিবেদনে দেখা যায়, রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ে বড় প্রবৃদ্ধির সাফল্য প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই), বিদেশী অনুদান এবং মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি বিদেশী ঋণ খরায় ম্লান হয়ে গেছে।

আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এফডিআই কম এসেছে ৩৭ কোটি ডলার। একই সময়ে ১৮৬ কোটি ডলারের অনুদানও (ফরেন এইড) কম এসেছে। আর মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি বিদেশী ঋণ কম এসেছে ১৩৬ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে যেকোনো দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ তিন খাতে (এফডিআই, অনুদান ও ঋণ) ৩ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার কম এসেছে। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ২ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বেশি আমদানি করা হয়েছে। বিদেশী ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ও সেবা খাতের ব্যয়ও এ সময়ে বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, গত দুই-তিন বছর ডলারের জন্য যে হাহাকার ছিল সেটি এখন কেটে গেছে। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে পরিশোধ করা হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ বিদেশী ঋণ, সেবার মাসুল ও বকেয়া ঋণপত্রের (এলসি) দায়। এ কারণে রেমিট্যান্স ও প্রবাসী আয়ে বড় প্রবৃদ্ধির পরও রিজার্ভ বাড়েনি। তবে গত তিন বছরে যেভাবে রিজার্ভের ক্ষয় হয়েছিল, সেটি বন্ধ হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এখন নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী আমদানির এলসি খুলতে পারছেন। এমনকি বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার পরও স্থিতিশীল রয়েছে ডলারের দর। দেশের অর্থনীতির জন্য এগুলো ভালো নিদর্শন।

  • এটিআর

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর