Logo

নির্বাচিত

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

‘আ.লীগের ভুল ছিল, আজকের অবস্থা ভুলেরই শাস্তি’

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১০:১০

‘আ.লীগের ভুল ছিল, আজকের অবস্থা ভুলেরই শাস্তি’

বাংলাদেশের খবর
সবার দৃষ্টি লন্ডনে
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, লন্ডনে আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই বৈঠক নিয়ে দেশজুড়ে চরম আগ্রহ ও কৌতূহল দেখা দিয়েছে। অনেকেই একে বলছেন 'ঐতিহাসিক বৈঠক'। কেউ বলছেন, 'এটাই হতে পারে রাজনীতির নতুন পথচলার সূচনা'। তাই জাতি এখন লন্ডনের দিকে তাকিয়ে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বৈঠক বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য হতে পারে একটি মাইলফলক। নির্বাচনের সময়সূচি, সংস্কার এবং জুলাই সনদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সমঝোতা হলে দেশ এগিয়ে যাবে। আর যদি এই আলোচনা ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশ একটি গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে, যা কারও জন্যই কাম্য নয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচনকালীন জটিলতা এবং ভবিষ্যৎ সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে সৃষ্ট গভীর সংকট নিরসনে, এই বৈঠককে কেন্দ্র করে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আগ্রহ ও কৌতূহল তৈরি হয়েছে। দুই পক্ষের নেতারাই একটি ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমে দেশের জন্য মঙ্গলজনক সমাধান খুঁজে বের করতে আশাবাদী।

আলোচনার কেন্দ্রে নির্বাচন ও সংস্কার এই বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্ধারণ। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বছরের এপ্রিলে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে সোচ্চার। দুই পক্ষের এই বিপরীতমুখী অবস্থান দেশে এক ধরনের রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করেছে। সূত্র জানিয়েছে, এই বৈঠকে উভয় পক্ষই নিজ নিজ

প্রথম আলো
ভোটের সময় পুনর্বিবেচনার কথা বলবে বিএনপি
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়-বিতর্কের মধ্যেই আজ লন্ডনে মিলিত হচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটি হবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতার প্রথম সাক্ষাৎ বা বৈঠক। গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও নির্বাচনের সময়সহ বহু অমীমাংসিত বিষয় সামনে রেখে এ বৈঠককে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে আজ শুক্রবার সেখানকার সময় সকাল নয়টায় যখন অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের সঙ্গে এ সাক্ষাৎ হবে, তখন বাংলাদেশের সময় হবে বেলা দুইটা। তবে কত সময় ধরে আলোচনা চলবে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সরকারি ও বিএনপির সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই বৈঠকে দুই পক্ষের আরও কেউ কেউ উপস্থিত থাকতে পারেন। ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে লন্ডনে পৌঁছেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির আরও কয়েকজন নেতাও থাকতে পারেন। তবে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমান একান্তে কিছু সময় কথা বলবেন বলে বিএনপি ও সরকারি সূত্র থেকে জানা গেছে।

বৈঠক শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে লন্ডনে আমীর খসরু মাহমুদ ব্রিফিং করতে পারেন বলেও জানা গেছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে লন্ডনে অবস্থানরত তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘একটা ওয়ান টু ওয়ান মিটিং হবে। এ ক্ষেত্রে উনারা (ইউনূস ও তারেক) যদি মনে করেন আরও কেউ থাকবেন, সেটা দুই লিডারই ডিসাইড করবেন।’

বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির দিক থেকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হবে, সে সম্পর্কে তারেক রহমানকে দলের স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে কিছু মতামত দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, নির্বাচনের সময়। প্রধান উপদেষ্টা ঈদুল

মানবজমিন
এই প্রথম বিধ্বস্ত হলো বোয়িং ৭৮৭
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ভারতে এবারই প্রথম বিধ্বস্ত হয়েছে বোয়িং ৭৮৭ সিরিজের কোনো বিমান। বৃহস্পতিবার দুপুরে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মাথায় বিধ্বস্ত হয়ে একটি  মেডিকেল শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে আছড়ে পড়ে বিমানটি। যাতে একজন ব্যতীত আরোহীদের সকলেই প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির বেসরকারি বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের ওই ফ্লাইটটি বৃটেনের রাজধানী লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের কয়েক মিনেটের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র বাণিজ্য বিষয়ক সংবাদদাতা জোনাথন জোসেফস বলেছেন, আহমেদাবাদের আগে কখনও বোয়িং ৭৮৭ বিমান এভাবে বিধ্বস্ত হয়নি। প্রায় ১৪ বছর আগে এই মডেলটি বাজারে এনেছিল মার্কিন বিমান সংস্থা বোয়িং।

মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে ড্রিমলাইনার মডেলের বিমানে ১০০ কোটি যাত্রী পরিবহনের মাইলফলক পৌঁছায় মার্কিন এই কোম্পানি। সেই উপলক্ষে বোয়িং বলেছিল, তাদের তৈরি ১ হাজার ১৭৫টি বোয়িং ৭৮৭ বিমান ৫০ লাখ উড্ডয়ন পরিচালনা করেছে। এসব বিমান আকাশে উড়েছে তিন কোটি ঘণ্টা। আহমেদাবাদে বিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনা বোয়িংকে এত বড় ধাক্কা দিলো এমন এক সময়ে, যখন সংস্থাটি ৭৩৭ বিমান একের পর এক বিধ্বস্ত হওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আহমেদাবাদের ঘটনার পরে এক বিবৃতিতে বোয়িং কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা ভারতে বোয়িং ৭৮৭ বিমান বিধ্বস্তের ব্যাপারে প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে।

এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা চলছে। এয়ার ইন্ডিয়ার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পরেই আকস্মিকভাবে নিচে নামতে শুরু করে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি প্রায় ৬২৫ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর পর হঠাৎ নিচে নামতে থাকে। বিমান বিধ্বস্তের কিছুক্ষণ পর ওই ফ্লাইটে থাকা যাত্রীদের তালিকা প্রকাশ করেছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত এআই ১৭১ ফ্লাইটে ১৬৯ ভারতীয় নাগরিক, ৫৩ বৃটিশ নাগরিক, কানাডীয় এক নাগরিক ও পর্তুগালের সাতজন নাগরিক ছিলেন। এক বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া বলেছে, আহমেদাবাদের সরদার প্যাটেল বল্লভভাই বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় দুপুরে উড্ডয়নের পরপরই দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে এআই ১৭১ ফ্লাইট।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
বৈঠক হবে ওয়ান টু ওয়ান রুদ্ধদ্বার
বাংলাদেশে প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঐতিহাসিক বৈঠক। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে আজকের এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে। দেশের এই দুই শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্বের মধ্যে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার ‘ওয়ান টু ওয়ান’ রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে। এক সপ্তাহ ধরে দেশে-বিদেশে মানুষের মাঝে যে চাঞ্চল্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে তার অবসান হতে যাচ্ছে আজকের এই বহুলপ্রত্যাশিত বৈঠকের মধ্য দিয়ে।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্ব। আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ডসহ আরও অনেক পুরস্কার জয়ের মাধ্যমে দেশের সম্মান ও সুনাম বয়ে এনেছেন তিনি। অন্যদিকে তারেক রহমান বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের একজন শীর্ষ নেতা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারান্তরিন এবং অসুস্থ হওয়ার পর তাঁর নেতৃত্বেই দলটি সুসংহত হয়েছে এবং সারা দেশে একটি শক্তিশালী জনভিত্তি তৈরি করেছে। তারেক রহমান বর্তমানে একজন বিচক্ষণ এবং সুবিবেচনাপ্রসূত নেতৃত্ব। তাঁর প্রজ্ঞা ও সুদৃঢ় নেতৃত্বের স্বাক্ষর এখন সর্বজনবিদিত। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রত্যাশা ‘দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেবে এই বৈঠক’।

সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এবং ইতোমধ্যে দুই পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। আলোচনার মুখ্য বিষয় হচ্ছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনার প্রধান বিষয় হবে জাতীয় নির্বাচনের সময় এগিয়ে নিয়ে আসা। এজন্য উভয় পক্ষই ছাড় দিয়ে মাঝামাঝি একটা সময় বেছে নিলেই নির্বাচনের ভোট গ্রহণের সময়-সংক্রান্ত সমস্যার সুন্দর ও সম্মানজনক সমাধান হতে পারে পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা। এ ক্ষেত্রে সরকার এপ্রিল (২০২৬) মাস থেকে সরে এলে, বিএনপিও ডিসেম্বর (২০২৫) থেকে সরে আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময় নির্ধারণের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করাটাই আলোচনা ও সমঝোতার প্রধান বিষয় হতে পারে।

এ ছাড়া চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার, গণহত্যাসহ অপরাধীদের বিচার, জুলাই চার্টারসহ (জুলাই সনদ) নানা ইস্যু আলোচনায় স্থান পাবে। এমনকি পরবর্তী নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন জাতীয় সংসদে অন্তর্বর্তী সরকারের সব কর্মকাণ্ড অনুমোদনের বিষয়সহ আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত। তাঁরা মনে করেন, দ্বিপক্ষীয় এই ঐতিহাসিক আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে চলমান রাজনীতিসহ অনেক কিছু জটিলাকার ধারণ করতে পারে। এমনকি বিপদগামী হতে পারে বাংলাদেশ। আবার কেউ কেউ বলেছেন, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এই বৈঠকের সার্বিক আলোচনা, মতবিরোধ ও সিদ্ধান্ত প্রকাশ করাটা কোনোক্রমেই ঠিক হবে না। বরং সেটি পর্যায়ক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন করা হতে পারে। কারণ আগেভাগেই এসব প্রকাশ করা হলে নানামুখী ষড়যন্ত্র বিস্তার লাভ করবে এবং দেশ ও জনস্বার্থে নেওয়া অনেক ভালো উদ্যোগও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।

এ বিষয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায়, এটা নতুন কোনো বিষয় নয়। যেহেতু আমরা আলোচনায় যাচ্ছি, সে পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘শুধু বিএনপি নয়, সমগ্র জাতি আজ এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনের পথ সুগম হবে বলে প্রত্যাশা সবার। আমাদের বিশ্বাস, বৈঠক শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হাসিমুখে বেরিয়ে আসবেন। তাঁদের সেই প্রত্যাশিত হাসিই বলে দেবে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী বৈঠকের সমাপ্তি ঘটেছে। অতঃপর ফলাফল দেখে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে বিএনপি।’

যুগান্তর
‘আ.লীগের ভুল ছিল, আজকের অবস্থা ভুলেরই শাস্তি
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের বর্তমান পরিণতি দেখে ‘খুব মন খারাপ’ সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের। তিনি কাছের মানুষদের প্রায়ই বলেন, গত ১৬ বছরে ‘আমাদের অনেক ভুল ছিল। তা না হলে এমনটা কেন হলো? ভুল ছিল বলেই আজকের এই পরিণতি। আজকের অবস্থা হয়তো আমাদের ভুলেরই শাস্তি।’ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ২০১২ সালে যখন স্পিকার ছিলাম তখনই বলেছি, ‘সরকার স্বৈরাচারী হলে জনগণ বেশিদিন সায় দেবে না।’ বর্তমানে কার্যত নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগকে আগামী দিনে রাজনীতি করতে হলে তাদের অতীতের ভুল শোধরাতে হবে বলেও মনে করেন দলটির শাসনামলে টানা ১০ বছর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা আবদুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান আবদুল হামিদের শ্যালক ডা. আনম নওশাদ খান। গত ৭ মে রাতে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যাওয়ার সময় তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন। প্রায় এক মাস পর রোববার গভীর রাতে (রাত ১টা ২৫ মিনিটে) থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৯৯ ফ্লাইটে তারা ফিরেছেনও একই সঙ্গে। ৮২ বছর বয়সি অসুস্থ ভগ্নীপতিকে কাছে থেকে দেখাশোনা করছেন নওশাদ খান। তার সঙ্গে আবদুল হামিদের চিকিৎসা ও শারীরিক অবস্থার পাশাপাশি কথা হয় আওয়ামী লীগের বিগত দিনের রাজনীতি এবং সামনের দিনের রাজনীতির সুযোগ সম্পর্কে আবদুল হামিদের ভাবনার বিষয়ে। নওশাদ খান জানান, তিনি (আবদুল হামিদ) পুরোপুরি পারিবারিক আবহেই আছেন। রাজনৈতিক কোনো যোগাযোগ এখন নেই। সেই ধরনের শারীরিক অবস্থাও তার নেই বলে জানান তার শ্যালক নওশাদ খান।

৫ আগস্টের পর ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের। তার নিজের বা শেখ হাসিনা-কোনো পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের যোগাযোগের চেষ্টাও করা হয়নি। এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ও কথাবার্তা হয় না। তবে নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন দেশ ও রাজনীতি সম্পর্কে। নিয়মিত পড়েন খবরের কাগজ। সুযোগ পেলে খবর দেখেন টেলিভিশনেও। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনাসহ দলটির শীর্ষ নেতারা প্রায় সবাই হয় পলাতক, নয়তো জেলে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার চলছে। বর্তমানে দেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। নির্বাচন কমিশন নিবন্ধনও স্থগিত করেছে।

কালের কণ্ঠ
লন্ডন বৈঠকে সবার চোখ
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশবাসীর মনোযোগ এখন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের দিকে। আজ শুক্রবার লন্ডনের দ্য ডরচেস্টার হোটেলে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাজ্য সফররত ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই হোটেলেই অবস্থান করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই বৈঠককে রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন।

বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, নির্বাচনের সময় ঘোষণা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এবং বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের মধ্যে যে টানাপড়েন এবং সার্বিকভাবে যে অচলাবস্থা চলছে সে বিষয়ে এই বৈঠকে একটা সমাধান আসবে। সরকার ও দলগুলোর মধ্যে বিদ্যমান দূরুত্ব কমে আসার সূচনা হিসেবেও দেখা হচ্ছে সম্ভাব্য এই বৈঠকটিকে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগেই বলে রেখেছেন, “প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমরা আশা করি এই বৈঠক বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলমান চ্যালেঞ্জগুলো নিরসনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।

যদি সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে, তবে এই বৈঠক দেশের রাজনীতিতে একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। অনেক সমস্যার সমাধান হতে পারে। অনেক কিছু সহজ হয়ে যেতে পারে। নতুন ডাইমেনশন তৈরি হতে পারে এ বৈঠকে। নতুন একটা দিগন্তের উন্মোচন হতে পারে।”

বিএনপি, তাদের সমমনা দলগুলো এবং বাম গণতান্ত্রিক জোট এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু গত সোমবার যুক্তরাজ্য যাওয়ার আগে গত শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ঈদুল আজহার ভাষণে ড. ইউনূস বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ঘোষিত এই সময় সম্পর্কে বিএনপি তাৎক্ষণিকভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানায়। দলটির পক্ষে রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা, আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে বলা হয়, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কথা বললেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত অগ্রাহ্য করে নিজেদের নিরপেক্ষতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

সমকাল
আলোচনার কেন্দ্রে নির্বাচনের সময়
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আলোচিত বৈঠক আজ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। লন্ডনের হোটেল ডোরচেস্টারে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এ বৈঠক হওয়ার কথা।   

বিএনপি ও সরকারের সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপসহ অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে। ড. ইউনূসের দিক থেকে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন যেমন আলোচনার টেবিলে থাকবে, তেমনি তারেক রহমানের দিক থেকে গুরুত্ব পাবে নির্বাচনের তারিখ, রোডম্যাপসহ সরকার ও প্রশাসন-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো। তবে রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো পক্ষই আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ করেনি। 

অবশ্য বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখার একটি সূত্র জানায়, বৈঠকের আলোচ্যসূচি নির্ধারণের জন্য লন্ডন সফররত প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধির সঙ্গে তারেক রহমানের প্রতিনিধি দলের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। গত বুধবার এ আলোচনা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবারও তারেক রহমানের একজন প্রতিনিধি সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করেছেন বলে এক ভিডিও বার্তায় জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। 

বিএনপির সূত্র জানায়, সরকার ও তারেক রহমানের প্রতিনিধির আলোচনায় বৈঠকের আলোচ্য বিষয় হিসেবে নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনার বিষয়টি ছিল। পাশাপাশি সংস্কার, বিচার ছাড়াও জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে কথা হয়। দু’পক্ষই এর মাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার ও বিএনপির যে মতপার্থক্য আছে, তা কমিয়ে আনার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে।

চার দিনের সফরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। আর ২০০৮ সাল থেকে সপরিবারে লন্ডনে অবস্থান করছেন তারেক রহমান। সেখান থেকে তিনি বিএনপিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গত সোমবার সরকার ও বিএনপির তরফ থেকে আজকের বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ বৈঠক নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ কৌতূহল তৈরি হয়েছে। ফলে সবার চোখ এখন লন্ডনের এ বৈঠকের দিকে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এ বৈঠককে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন। 

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল সমকালকে বলেন, বৈঠকটি যেহেতু শীর্ষ পর্যায়ের, অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ই উঠে আসবে। বিশেষ করে আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময় এগিয়ে নিয়ে আসার বিষয়টি আসবে। আলোচনায় আসবে সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার বিষয়ও। তিনি বলেন, সরকার ও প্রশাসনে এখনও স্বৈরাচারের দোসরদের অবস্থানের বিষয়টি আলোচনায় স্থান পাবে। এ ছাড়া দেশে আইনের শাসন ও আদালতের রায় মেনে চলার ওপরেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। সংস্কারের বিষয়ও উঠতে পারে। 

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা আশা করছি, শীর্ষ পর্যায়ের এই আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে জাতীয় ভিত্তিতে একটা গ্রহণযোগ্য ফয়সালা বা সিদ্ধান্ত হবে। এটা আমাদের প্রত্যাশা; জাতিরও প্রত্যাশা তা-ই।’

  • এটিআর

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর