
বাংলাদেশের খবর
প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে রোজার আগেই নির্বাচন
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ঈদুল আজহার আগে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আগামী জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য রোডম্যাপ ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছিলেন, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। অবশ্য বর্তমানে দেশে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি আগে থেকেই চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এই নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।
তবে এবার নির্বাচনের তারিখ নিয়ে অনেক ঐকমত্যে এসেছে উভয়পক্ষ। লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে এমনই আভাস মিলেছে।
বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি যৌথ সংবাদ সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক
প্রথম আলো
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট, একমত ইউনূস ও তারেক
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়ে রাজনীতিতে টানাপোড়েন যেভাবে অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছিল, লন্ডন বৈঠকে তা অনেকটা কেটেছে।
গতকাল শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা আসে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে আগামী বছরের রমজান মাসের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে লন্ডন বৈঠক নিয়ে দেশে যে কৌতূহল ও উৎকণ্ঠা ছিল, সেটার সমাপ্তি ঘটেছে।
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপিসহ বিভিন্ন দল। এর মধ্যেই ৬ জুন ঈদুল আজহার আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে সরকারপ্রধানের এই ঘোষণা বিএনপি মেনে নিতে পারেনি। এ নিয়ে দলটির নেতারা প্রকাশ্যেই অসন্তুষ্টির কথা জানান। অবশ্য সরকার–ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময় নির্ধারণের জন্য উপদেষ্টাদের কেউ কেউ জাতির উদ্দেশে ভাষণের আগে অধ্যাপক ইউনূসকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এপ্রিলকে উপযুক্ত মনে করেছিলেন।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের এক সপ্তাহের মাথায় লন্ডন বৈঠকে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে নতুন ঘোষণা এল। ধারণা করা হচ্ছে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোট হতে পারে।
কালবেলা
জুলাইয়ের ৪ দিনে ২৬ ঘণ্টা আকাশে ছিল র্যাবের হেলিকপ্টার
কালবেলার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, পতিত হাসিনা সরকারের গদি টিকিয়ে রাখতে র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে গুলি। সেই গুলিতে ছাদের ওপরে থাকা শিশু, এমনকি ঘরের জানালার কাচ ভেদ করে মানুষ হত্যার অভিযোগ রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) যার প্রমাণও পেয়েছে। গত বছরের ১৮ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেলিকপ্টার ওড়ানোর একটি গোপন নথি এসেছে কালবেলার হাতে। সেখানে দেখা গেছে, এ চার দিনে র্যাবের হেলিকপ্টার ওড়ানো হয়েছে ২৪ বার। এ সময় ২৬ ঘণ্টা ২৫ মিনিট আকাশে ছিল হেলিকপ্টার। সংস্থাটির হিসাবেই এ সময়ে হেলিকপ্টার থেকে ১ হাজার ৫৪২ রাউন্ড গ্যাসগান ও সাউন্ড গ্রেনেড ফায়ার করা হয়েছে। তবে গুলি ছোড়ার বিষয়টি সেখানে উল্লেখ নেই।
নথিপত্রে দেখা গেছে, ১৮ জুলাই রাজধানীতে হেলিকপ্টার ওড়ানো হয়েছে সাতবার। এদিন ৫ ঘণ্টা ৫ মিনিট আকাশে উড়েছে হেলিকপ্টার। এর মধ্যে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটিতে উদ্ধার অভিযানে ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ওড়ানো হয় প্রথম দফায়। এরপর অগ্নিসংযোগ এলাকা রেকি (পরিদর্শন) করতে হেলিকপ্টার ওড়ানো হয় ৩ দফায় ৯০ মিনিট। রাত্রিকালীন টহলের জন্য দুই দফায় ওড়ানো হয় ৭০ মিনিট। সেতু ভবনের উদ্ধার কাজে ওড়ানো হয় ১০ মিনিট। এদিন কোনো গোলাবারুদ ফায়ার করার তথ্য পাওয়া যায়নি।
নথির তথ্য অনুসারে, ১৯ জুলাই হেলিকপ্টার ওড়ানো হয় সাতবার। এদিন সাতবারে ৬ ঘণ্টা ২০ মিনিট ওড়ানো হয়েছে। প্রথম দফায় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট ওড়ানো হয় রেকি ও মব ডিসপার্সমেন্টের উদ্দেশ্যে। একই কারণে আরও ৩ দফা হেলিকপ্টার ওড়ানো হয় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। অগ্নিসংযোগ এলাকা রেকির জন্য ওড়ানো হয় ৪০ মিনিট। রাত্রিকালীন টহলের জন্য ২ দফায় ওড়ানো হয় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। এদিন ৩৪০ রাউন্ড গ্যাসগান ও সাউন্ড গ্রেনেড ফায়ারের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২১৮ রাউন্ড গ্যাসগান ও ১২২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয় ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে। এদিন ১৩টি শটগানের জন্য ২৬০ রাউন্ড বুলেট নেওয়া হলেও সেগুলো ফায়ার করা হয়নি হেলিকপ্টার থেকে। এ ছাড়া চারটি এসএমজির জন্য ২৪০ রাউন্ড বুলেট নেওয়া হলেও সেগুলো অবশিষ্ট দেখা গেছে গোপন প্রতিবেদনে।
২০ জুলাই হেলিকপ্টার ওড়ানো হয়েছে ছয়বার। এদিন ৭ ঘণ্টা ১০ মিনিট হেলিকপ্টার ওড়ানো হয়েছে। প্রথম দফায় দিনে টহলে ৫৫ মিনিট হেলিকপ্টার ওড়ানো হয়। এরপর রেকি ও মব ডিসপার্সমেন্টে দুই দফায় ওড়ানো হয় ২ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। এরপর তেজগাঁও-নারায়ণগঞ্জ-তেজগাঁওয়ে রেকি এবং মা-হসপিটালে উদ্ধারকাজে হেলিকপ্টার ওড়ানো হয় দুই দফায়। প্রথম দফায় ১ ঘণ্টা ও দ্বিতীয় দফায় ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। এরপর রেকি ও মব ডিসপার্সমেন্টে রাজধানীতে ওড়ানো হয় আরও ৩৫ মিনিট। ২০ জুলাই হেলিকপ্টার থেকে ৬৬৪ রাউন্ড গ্যাসগান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫১২ রাউন্ড গ্যাসগান ও ১৫২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড। তবে ৮০ রাউন্ড শটগানের বুলেট ও ৬০ রাউন্ড এসএমজি বুলেট হেলিকপ্টারে থাকলেও সেগুলো ফায়ারের তথ্য নেই। এসব বুলেট অবশিষ্ট দেখা গেছে, কালবেলার হাতে আসা গোপন প্রতিবেদনে।
২১ জুলাই চার দফায় হেলিকপ্টার ওড়ানো হয় ৭ ঘণ্টা ৫০ মিনিট। এদিন প্রথম দফায় গ্রাউন্ড পেট্রোল এয়ার সাপোর্ট, রেকি ও মব ডিসপার্সমেন্টের উদ্দেশ্যে তেজগাঁও-গাজীপুর রোড এলাকায় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট হেলিকপ্টার ওড়ানো হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় রেকি ও মব ডিসপার্সমেন্টে ওড়ানো হয় ১ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। মহাপরিচালকের মিশনে ওড়ানো হয় আরও ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। র্যাব ফোর্সেসের জনবল স্থানান্তরে তেজগাঁও-নরসিংদী স্টেডিয়াম-তেজগাঁওয়ে ওড়ানো হয় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। এদিন র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে ৫৩৮ রাউন্ড গোলাবারুদ ফায়ার করা হয়। এর মধ্যে ২৫৫ রাউন্ড গ্যাসগান ও ২৮৩ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ফায়ার করা হয়। এ ছাড়া হেলিকপ্টারে ২০ রাউন্ড শটগানের বুলেট ও ৬০ রাউন্ড এসএমজি বুলেট থাকলেও সেগুলো ফায়ার করা হয়নি।
সমকাল
জামায়াত-এনসিপি নাখোশ
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, শুধু বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করায় অসন্তুষ্ট জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনও। অন্যদিকে বৈঠককে ইতিবাচক উল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ১২ দলীয় জোট, বাংলাদেশ এলডিপি, খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দল।
জামায়াতে ইসলামী এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে দলটির এক শীর্ষ নেতা সমকালকে বলেছেন, শুধু বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্য দলগুলোকে রাজনৈতিকভাবে অবমূল্যায়ন ও ঝুঁকিতে ফেলা হয়েছে। সর্বদলীয় আলোচনায় নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করা উচিত ছিল।
এনসিপি বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির বর্ধিতাংশে পরিণত হয়েছে। তারা নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। এ অবস্থায় সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা– সংশয় রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দেন তারেক রহমান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। এর আগে সংস্কার ও বিচারের অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
আগামী বছরের ১৭ বা ১৮ ফেব্রুয়ারি পবিত্র রমজান শুরু হবে। লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতির পর ধারণা করা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট হতে পারে। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। গত ৬ জুন তিনি আরেক ভাষণে জানান, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে।
এপ্রিলে তাপপ্রবাহ, পাবলিক পরীক্ষাসহ নানা কারণ দেখিয়ে বিএনপি ও তাদের সমমনারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছিল। বিএনপি আগের অবস্থান থেকে সরে রমজানের আগে বা ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট চেয়েছে লন্ডনের বৈঠকে।
বিএনপিকে ‘তোয়াজে ক্ষুব্ধ’ জামায়াত
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান গত এপ্রিলে দাবি করেছিলেন, রমজানের আগেই যেন ভোট গ্রহণ হয়। পরে দলটি অবস্থান নেয় ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের। প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণা দিলে স্বাগত জানায় জামায়াত।
ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক নিয়ে আগে থেকেই নীরব বিএনপির নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার চেষ্টায় থাকা জামায়াত।
জামায়াতের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা গত রাতে সমকালকে বলেন, জামায়াতই প্রথম বলেছে, রমজানের আগে নির্বাচন হওয়া উচিত। তাই নির্বাচনের যে নতুন সময়সীমা বলা হচ্ছে, এ নিয়ে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু সরকার যেভাবে শুধু বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, তা অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, বিএনপিকে তোয়াজ করতে লল্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে– ঠিক আছে। কিন্তু আলোচনার পর ঢাকায় সর্বদলীয় বৈঠক করে রমজানের আগে ভোটের ঘোষণা দিলে সব দল এবং সরকারের জন্য ভালো হতো।
লন্ডন বৈঠকের পর ঘোষণা দেওয়ায় মানুষের কাছে বার্তা গেল– বিএনপিই একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি। বিএনপির কাছেই ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেবে ইউনূস সরকার। এ বার্তার কারণে অন্য দলগুলো নির্বাচনের মাঠে প্রশাসন ও রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিবন্ধকতায় পড়বে। তিনি বলেন, এক-এগারো সরকারের তথাকথিত ‘সেফ এক্সিট’ পরিকল্পনার কারণেই ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ অস্বাভাবিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল।
সরকার ও বিএনপির যৌথ বিবৃতি নিয়েও নাখোশ জামায়াত। দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, এর মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে– সরকার এবং বিএনপি সমশক্তি। এর পর আর সরকারের নিরপেক্ষতা থাকে না। এ বক্তব্য ড. ইউনূসকে জানাবে জামায়াত।
লন্ডনের বৈঠক নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সমকালকে বলেন, জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় বক্তব্য জানাবে।
যুগান্তর
রোজার আগেই জাতীয় নির্বাচন
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বৈঠকটা শুরু হয়েছিল হাসিমুখে, যার শেষও হয় সেই হাসিতে। সবার মুখে বিজয়ের শেষ হাসি। প্রত্যাশিত সমঝোতায় সফল হলো প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বহুল আলোচিত শুক্রবারের লন্ডন বৈঠক। বৈঠক শেষে দুই পক্ষের যৌথ বিবৃতি ও ব্রিফিং বলে দিচ্ছে সবাই জিতেছে। হারেনি কেউ। জয় হয়েছে বাংলাদেশের। শেষ হলো টানটান উত্তেজনার। হাঁফ ছেড়ে বাঁচল পুরো জাতি। অবসান হলো সব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার। জাতীয় নির্বাচন রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেই হচ্ছে। বিস্তারিত ঘোষণাটা আসবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।
এদিকে ঐতিহাসিক এ বৈঠক থেকে দেশের স্বার্থে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে জীবন বিসর্জন দেওয়া জাতীয় বীরদের প্রতি। একইভাবে স্মরণ করা হয়েছে কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রের জন্য যারা বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জীবনদানসহ নানাভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছেন-তাদের প্রতি। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। বৈঠক শেষে ব্রিফিং থেকে আরও বলা হয়, সংস্কার ও বিচার একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচনের আগে ও পরেও এটি অব্যাহত থাকবে।
বৈঠকের আলোচনা ও সার্থকতা নিয়ে উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে বিএনপি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, বৈঠক সফল, জাতিকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখালেন দুই নেতা। এছাড়া দু-একটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সব দলই বৈঠককে ইতিবাচক আখ্যা দিয়ে বলেছে, নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সংকট নেই, সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটও কেটে গেছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
ভয়ংকর যুদ্ধের দামামা
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ইরানের রাজধানী তেহরানে আকাশপথে সর্বাত্মক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গতকাল স্থানীয় সময় ভোররাত ৩টার পর ‘চিরশত্রু’ ইসরায়েল ইরানে মুহুর্মুহু এ হামলা চালায়। ইরানের প্রতিশোধের ভয়ে দেশ ছেড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। গতকাল রাতে পাল্টা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, দেশটির রাজধানী তেহরানে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) সদর দপ্তরে হামলার পর আগুন জ্বলতে দেখা গেছে মধ্য ইরানের নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায়।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ভেস্তে দিতে ইসরায়েল ইরানে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নাম দিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। অবশ্য পারমাণবিক লক্ষ্যবস্তুর পাশাপাশি তেহরান এবং অন্যান্য শহরের আবাসিক এলাকায় ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিবিসি, আলজাজিরা, রয়টার্স ও ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। হামলার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইসরায়েলে : ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে জবাব দেওয়া শুরু হয়েছে। ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে কয়েক শ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মধ্যেই দেশটির তেল আবিব শহরে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরের পাশে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১৩ এই খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েল হাওম নামের আরেকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের সাতটি জায়গায় ইরান থেকে উড়ে আসা রকেট পড়েছে। ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানিয়েছে, তেল আবিবের মেট্রোপলিটন এলাকার সাতটি জায়গায় হামলা হয়েছে। এরইমধ্যে মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে আহত অন্তত পাঁচজনকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে একজন বেশ খানিকটা আহত হয়েছেন। অপর চারজন হালকা আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের এ আকস্মিক হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিসহ আরও বেশ কয়েকজন সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহতের তালিকায় রয়েছেন কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীও। হামলায় সব মিলিয়ে ৭০ জন নিহত ও ৩ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আইআরআইএনএন নিশ্চিত করেছে, ইসরায়েলি হামলায় সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল বাঘেরি নিহত হয়েছেন। পৃথক হামলায় আইআরজিসির প্রধান মেজর জেনারেল সালামিও নিহত হন। বাঘেরি ইরানের সর্বোচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলায় নিহত দ্বিতীয় উচ্চপদস্থ ব্যক্তি তিনি। এ ছাড়া ‘খাতাম আল-আনবিয়া’ সদর দপ্তরের কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলী রশিদও একই হামলায় নিহত হয়েছেন। পরমাণু বিজ্ঞানী ও ইসলামিক আজাদ ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ-মেহদি তাহরাঞ্চি এবং পরমাণু বিজ্ঞানী ও ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সাবেক প্রধান ফেরাইদুন আব্বাসিও পৃথক হামলায় নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সংবাদকর্মীরা জানান, তারা নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর লাশ দেখতে পেয়েছেন।
বণিক বার্তা
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ইরানের একাধিক পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনার ওপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ভূরাজনৈতিক এমন উত্তেজনার কারণে ইরান থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে গতকাল পণ্যটির দাম ৭ শতাংশের বেশি বেড়ে কয়েক মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। খবর রয়টার্স।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম গতকাল ব্যারেলে ৫ ডলার ১০ সেন্ট বা প্রায় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৭৪ ডলার ৪৬ সেন্টে। গতকাল জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে সর্বোচ্চ ৭৮ ডলার ৫০ সেন্টে পৌঁছেছিল, যা ২৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। অন্যদিকে মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম গতকাল বেড়েছে ৫ ডলার ১০ সেন্ট বা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ব্যারেলপ্রতি মূল্য স্থির হয়েছে ৭৩ ডলার ১৫ সেন্টে। পণ্যটির দাম দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৭ ডলার ৬২ সেন্টে পৌঁছেছিল, যা ২১ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। গতকাল ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম ২০২২ সালের পর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। সে সময় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পণ্যটির দামে ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা দিয়েছিল।
ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ও সামরিক কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। দেশটি এটিকে একটি দীর্ঘমেয়াদি অভিযান হিসেবে ঘোষণা করেছে। যার লক্ষ্য তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ থেকে বিরত রাখা। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় নাতাঞ্জের পারমাণবিক স্থাপনাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো তেজস্ক্রিয় বা রাসায়নিক দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সুইডেনভিত্তিক বহুজাতিক ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এসইবির বিশ্লেষক ওলে হভালবাই বলেন, ‘বর্তমানে মূল উদ্বেগ হরমুজ প্রণালি প্রভাবিত হবে কিনা তা নিয়ে। এটি একটি কৌশলগত জলপথ, যার মাধ্যমে বিশ্বের মোট জ্বালানি তেল ব্যবহারের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বা দৈনিক ১ কোটি ৮০ থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল আমদানি-রফতানি করা হয়। যদিও এখন পর্যন্ত এর ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জেপি মরগানের বিশ্লেষকরা বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে বা অঞ্চলটির বড় জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশগুলোর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১২০-১৩০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। এটি এরই মধ্যে দেয়া বিভিন্ন পূর্বাভাসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
মানবজমিন
নির্বাচন হতে পারে ১২ই ফেব্রুয়ারি
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আগামী বছরের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে এমন আলোচনা হয়েছে। আসছে রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন সব প্রস্তুতি শেষ হলে রমজানের আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে। বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে সরকার প্রধান সম্মত হয়েছেন।
লন্ডন বৈঠকের পর ভোটের তারিখ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বৈঠক শেষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান জানিয়েছেন শিগগিরই নির্বাচন কমিশন তারিখ ঘোষণা করবে। এরই মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়েও আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে।
আগামী বছরের ১৭ই ফেব্রুয়ারি চাঁদ দেখা সাপেক্ষে পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে। নির্বাচন করতে হলে তার কয়েকদিন আগেই ভোটগ্রহণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে রোজার আগের সপ্তাহে ভোটের সম্ভাব্য তারিখ হতে পারে ১২ই ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার। আগেও একাধিক নির্বাচন বৃহস্পতিবার হয়েছে। ১২ই ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হলে রোজার আগে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পরের দুইদিন শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় এই দুইদিন ভোট গ্রহণের সুযোগ নেই। এরপরে নির্বাচন হলে রোজার আগে নির্বাচন কমিশনের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা যাবে না। প্রয়োজনে ১২ই ফেব্রুয়ারির আগের কোনো একদিনও ভোট গ্রহণ হতে পারে।
- এটিআর