বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
আমরা এখনো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ০৯:৪০

বাংলাদেশের খবর
হাইব্রিড হামলায় কাঁপছে ইসরায়েল
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত গতকাল শনিবার (২১ জুন) নবম দিনে গড়িয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধের কৌশল ও ভয়াবহতা দুই-ই বাড়ছে। ইসরায়েলের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে ইরান। এবার ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি ড্রোনের সমন্বয়ে 'হাইব্রিড' বা মিশ্র হামলা শুরু করেছে, যা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হচ্ছে। এদিকে এ দুই দেশের সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থির করে তুলেছে। ইসরায়েলের পাল্টা হামলা ইরানে প্রাণহানি বাড়াচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতির পরবর্তী গতি নির্ধারণ করবে।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টা না হলে আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়বে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। অন্যদিকে, ইসরায়েল ইরানের সামরিক কমান্ডার ও ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে হামলা অব্যাহত রেখেছে। এই সামরিক উত্তেজনার মধ্যেই তেহরান পারমাণবিক আলোচনা স্থগিতের মতো কঠোর কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে, যা সংকটকে আরও গভীর করেছে। একই সময়ে, তেহরান ও মস্কোর মধ্যে ঘনিয়ে ওঠা সম্পর্ক এবং আরব বিশ্বের নিন্দা এই সংঘাতকে একটি জটিল ভু-রাজনৈতিক সমীকরণে পরিণত করেছে। যুদ্ধের শুরুতে ইরান মূলত ক্ষেপণাস্ত্রনির্ভর হামলা চালালেও, এখন তারা কৌশলে পরিবর্তন এনেছে। শনিবার 'অপারেশন ট্র প্রমিস ৩'-এর ১৮তম পর্বে ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাহেদ-১৩৬ মডেলের আত্মঘাতী ও অ্যাটাক ড্রোনের ঝাঁকের সঙ্গে নিখুঁতভাবে লক্ষ্যভেদী ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বিত হামলা চালিয়েছে। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) দাবি করেছে, এই হামলায় বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও রসদ কেন্দ্রকে নিশানা করা হয়েছে এবং সেগুলো সফলভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
কালের কণ্ঠ
ভোট নিয়ে সংশয়-সন্দেহ কাটেনি
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে—এমন প্রত্যাশায় দেশজুড়ে ভোটের প্রস্তুতি চলমান। প্রতি আসনেই বিএনপির একাধিক প্রার্থী। শেষ পর্যন্ত দলের মনোনয়ন কে পাবেন তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা। জামায়াতে ইসলামী গত বছরই দুই শতাধিক আসনে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করে মাঠে নামিয়ে রেখেছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সারা দেশে ৩০০ আসনের প্রার্থী বাছাই কার্যক্রম চালাচ্ছে। গত শুক্রবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণের তিনটি আসনে প্রার্থী বাছাই উপলক্ষে নেতাকর্মীদের মতামত গ্রহণ অনুষ্ঠান করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আজ রবিবার নির্বাচন কমিশনে দল নিবন্ধনের আবেদন জমা দিতে যাচ্ছে। কিন্তু এসব প্রস্তুতির মধ্যেও এখনো নির্বাচনের সময় নিয়ে সংশয়, সন্দেহ দূর হয়নি বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
তাঁরা বলছেন, নির্বাচনের আগেই গুরুত্বপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী সংস্কার দরকার। এগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো যত দ্রুত একমত হবে, তত দ্রুত নির্বাচন হবে। এ অবস্থায় নির্বাচন কবে হবে তা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। কেউ বলছেন, নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ইচ্ছাটি পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে না।
তিনি রোজার আগে নির্বাচনের বিষয়ে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতির শর্ত দিয়ে ‘হতে পারে’ বলেছেন। তিনি একেক সময় একেক কথা বলেন। আগামী রোজার আগেই নির্বাচন হবে কি না সে নিশ্চয়তা কেবল উনিই দিতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন : নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার গতকাল শনিবার কালের কণ্ঠের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘সংস্কারের প্রস্তাবগুলোর অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, আবার অনেক বিষয়ে হয়নি। আমরা আশাবাদী আরো কতগুলো বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হবে এবং আশা করছি যথাসময়ে জাতীয় সনদে দলগুলো সই করবে এবং তা প্রণয়ন হবে।
সে ক্ষেত্রে রোজার আগেই নির্বাচন সম্ভব। কিন্তু শুধু নির্বাচন হলেই হবে না। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে; যার মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ প্রশস্ত হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন আগেও হয়েছে, কিন্তু তাতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সে কারণে জুলাই অভ্যুত্থান ঘটেছে। আমাদের কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী সংস্কার দরকার। এগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো যত দ্রুত একমত হবে, তত দ্রুত নির্বাচন হবে।’
তাহলে তো নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নিয়ে ‘যদি, কিন্তু’ থেকেই যাচ্ছে—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই। ‘যদি-কিন্তু’ থাকবেই। কারণ নির্বাচন তো এক পক্ষের না।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
দুই কক্ষের সংসদের পথে দেশ
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে দুই কক্ষের সংসদের দিকে যাচ্ছে দেশ। তবে সেটা আগামী সংসদ নাকি এর পরের সংসদ থেকে হবে সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলো এরই মধ্যে নীতিগতভাবে দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষে একমত হয়েছে। জুলাই সনদে বিষয়টি যে স্থান পাচ্ছে তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। ওই সনদে স্বাক্ষর করার কথা দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোর। জুলাই সনদ হবে দলগুলোর একটি অঙ্গীকার।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলো এমন একটি আইনসভা যা দুটি পৃথক কক্ষ নিয়ে গঠিত। যেখানে একটি কক্ষকে উচ্চকক্ষ অন্যটিকে নিম্নকক্ষ বলা হয়। এই ধরনের আইনসভায় আইন প্রণয়নে সমান ক্ষমতার ভারসাম্য বা ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ নিশ্চিত করা হয়। নিম্নকক্ষের সদস্যরা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হন। তাদের হাতেই থাকে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা। তবে আইন কার্যকর করতে উচ্চকক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।
রাষ্ট্রসংস্কার নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও উচ্চকক্ষ ১০০ সদস্যের বিষয়ে দলগুলো একমত হওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে পদ্ধতি নিয়ে রয়েছে নানা মত। চলতি সপ্তাহের আলোচনায় বিষয়টি নিয়ে সব দল একটা সিদ্ধান্তে আসবে বলে জানিয়েছে কমিশন। এদিকে সংসদ সচিবালয় দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ তৈরি করতে প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। কিন্তু এটাও বলব নীতিগতভাবে কিছু দল আপত্তি জানিয়েছে। কিন্তু এটা অধিকাংশই স্বীকার করেছেন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা দরকার। অধিকাংশই ১০০ আসনের উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠার বিষয়ে মত দিয়েছেন।
কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বিএনপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, এনডিএম নিম্নকক্ষের আসন অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসনে নির্বাচনের পক্ষে। অন্যদিকে এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন, জেএসডি, গণঅধিকার পরিষদসহ অধিকাংশ দল সংখ্যানুপাতিকে উচ্চকক্ষের পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াত উভয়কক্ষকে সংখ্যানুপাতিক করার পক্ষে। পাশাপাশি উচ্চকক্ষের নাম নিয়েও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে একমত হলেও পিআর (প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আসন) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিএনপি একমত পোষণ করেনি। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের নির্বাচনের বিষয়ে বোধ হয় এখন আমাদের বিবেচনা করা ঠিক হবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ধারণা এজন্য দিয়েছিলাম যে, দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষাবিদ, ক্রীড়াবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন সেক্টরে যাদের অবদান আছে, যাদের চিন্তাধারা, অবদান জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে তাদের প্রতিনিধিত্ব আকারে এখানে যুক্ত করার জন্যই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথা বিবেচনা করেছিলাম।
যুগান্তর
আমরা এখনো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশের রাজনীতি, সংস্কার, নির্বাচন ও রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা এখনো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে কিনা-এটা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্তের বিষয়। ১২ জুন যুক্তরাজ্য সফরে বিবিসির সাংবাদিক রাজিনি বৈদ্যনাথন তার সাক্ষাৎকার নেন। ইংরেজিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারটির কিছু অংশ বাংলায় অনুবাদ করে প্রকাশ করা হলো।
বিবিসি : আপনার দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলি। আপনি নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। আপনি দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা। আপনি বলেছেন, এ নির্বাচন যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক হয়। কিন্তু একটি সমালোচনা হচ্ছে-আপনি আওয়ামী লীগকে অর্থাৎ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে দিচ্ছেন না। কেন?
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস : আমরা বহুবার এটা ব্যাখ্যা করেছি, আবারও বলছি। প্রথমত, আওয়ামী লীগ না থাকলেও নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে কিনা; সম্প্রতি ঢাকায় জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর খুব ভালোভাবে এটা ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক মানে কোনো নির্দিষ্ট দল নয়, সব মানুষের অংশগ্রহণ। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ ভোট দিতে পারছে, ততক্ষণ এটা অন্তর্ভুক্তিমূলক।
বিবিসি : দেশের অনেক মানুষ এখনো আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে।
অধ্যাপক ইউনূস : তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দিন তারা ভোট দিতে চায় কিনা।
বিবিসি : তারা আওয়ামী লীগকে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে না।
অধ্যাপক ইউনূস : যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ভোটার, তাদের ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা আছে।
বিবিসি : কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে নয়, যদি না আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়।
অধ্যাপক ইউনূস : আমরা এখনো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি
বিবিসি : তাহলে আপনি বলছেন, তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে...
অধ্যাপক ইউনূস : না, আগে একটি বিষয় পরিষ্কার করি-আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। তাদের কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিবিসি : যার মধ্যে নির্বাচন অন্তর্ভুক্ত?
বণিক বার্তা
একীভূত হতে চায় না এক্সিম ও এসআইবিএল
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশের শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক একীভূত করে একটি ব্যাংকে রূপান্তরের যে প্রক্রিয়া চলছে, সেটির সঙ্গে একমত নয় এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)। দেশের শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক একীভূত করে একটি ব্যাংকে রূপান্তরের যে প্রক্রিয়া চলছে, সেটির সঙ্গে একমত নয় এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)। এ দুটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া থেকে বাঁচতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন তারা। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে মামলার প্রক্রিয়াও চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় থাকা ব্যাংকগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, এসআইবিএল ও এক্সিম ব্যাংক। এর মধ্যে প্রথম চারটি ব্যাংকেরই নিয়ন্ত্রণ ছিল এস আলম গ্রুপের হাতে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর এ ব্যাংকগুলোর পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে এক্সিম ব্যাংক ও এসআইবিএল উদ্যোক্তাদের ভাষ্য হলো, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের তুলনায় তাদের অবস্থা বেশ ভালো। তারল্য পরিস্থিতি, খেলাপি ঋণের হার ও মূলধন কাঠামোর দিক থেকেও এ দুটি ব্যাংক শক্তিশালী। দুটি ব্যাংকেরই বৈদেশিক বাণিজ্যের (আমদানি, রফতানি ও রেমিট্যান্স) আকার অনেক বড়। এক্সিম ও এসআইবিএলকে এস আলম গ্রুপের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকা তিনটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করে দেয়া যৌক্তিক নয়।
পাঁচ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করেও একই ধরনের তথ্য মিলছে। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে এ পাঁচ ব্যাংকের মোট বৈদেশিক বাণিজ্য (আমদানি, রফতানি ও রেমিট্যান্স) ছিল ৯৪ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে একাই ৫০ হাজার ৩৮১ কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে এক্সিম ব্যাংক। সে হিসাবে পাঁচ ব্যাংকের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের ৫৩ দশমিক ৩৯ শতাংশই এ ব্যাংকের মাধ্যমে হয়েছে। গত বছর এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে ২৫ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকার রফতানি ও ২৪ হাজার ১৩৯ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। যেখানে একই সময়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মোট বৈদেশিক বাণিজ্য ছিল মাত্র ৭ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। আর গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক গত বছর যথাক্রমে মাত্র ১ হাজার ২৩১ কোটি ও ১ হাজার ১০২ কোটি টাকার বৈদেশিক বাণিজ্য করতে পেরেছে। তবে একই সময়ে এসআইবিএলের বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩৪ হাজার ২১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ শরিয়াহভিত্তিক এ পাঁচ ব্যাংকের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশই করেছে এক্সিম ও এসআইবিএল। বাকি ১০ শতাংশ ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের মাধ্যমে হয়েছে।
বৈদেশিক বাণিজ্যের এ ধারাবাহিকতা চলতি বছরও অব্যাহত আছে। গত মে পর্যন্ত চলতি বছর ১৮ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার বৈদেশিক বাণিজ্য করেছে এক্সিম ব্যাংক। একই সময়ে এসআইবিএলের বৈদেশিক বাণিজ্য ছিল ৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে মে পর্যন্ত ফার্স্ট সিকিউরিটি ৮০২ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ৬৫৮ কোটি ও ইউনিয়ন ব্যাংক ১৪৩ কোটি টাকার বৈদেশিক বাণিজ্য করতে পেরেছে।
কালবেলা
টাকার জোরে চাকরিতে ফেরার চেষ্টায় জাল সনদের শিক্ষকরা
কালবেলার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জাল সনদের কারণে চাকরি হারানো ৬৭৬ জন শিক্ষককে পুনর্বহালে চলছে তোড়জোড়। ২০২৪ সালে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করা এই শিক্ষকদের ভুয়া সনদ শনাক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। এরপর বন্ধ করা হয় তাদের বেতন-ভাতা। তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর চাকরি হারানো এসব শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহালের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। হঠাৎ তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের এই প্রক্রিয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরির পাশাপাশি বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অভিযোগ উঠেছে, একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বিপুল অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বরখাস্ত এসব শিক্ষককে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ করছে।
এরই মধ্যে চাকরিচ্যুত এসব শিক্ষককে চাকরিতে পুনর্বহালের প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র কালবেলাকে নিশ্চিত করেছে। গত ১৫ মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে এক সভায় চাকরিচ্যুত ওই শিক্ষকদের তালিকা সংগ্রহ করতে বলা হয়। এরপর জোরেশোরে পুনর্বহালের কাজ শুরু করে ডিআইএ। ওই শিক্ষকদের তথ্য পাঠানোর জন্য গণবিজ্ঞপ্তি ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছে ডিআইএ।
চাকরিচ্যুত এসব শিক্ষকের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার পেছনে মন্ত্রণালয় ও ডিআইএর যুক্তি, বেশিরভাগ শিক্ষকই ২০-২২ বছর ধরে শিক্ষকতা করেছেন। হঠাৎ চাকরিচ্যুতিতে তাদের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অনেকেই আদালতের মাধ্যমে বেতন-ভাতা ফেরত পেয়েছেন, আবার আর্থিক সংকটের কারণে অনেকে আদালতেও যেতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে বরখাস্ত এসব শিক্ষক মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চাচ্ছেন। কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মনে করছেন, তাদের চাকরিচ্যুতির প্রক্রিয়াটি যথাযথ ও আইনানুগ হয়নি। তবে জাল সনদ শনাক্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা বলেন, শতভাগ আইনের মধ্যে থেকে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। এখন মানবিক দিক বিবেচনায় যদি চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে অতীতে যারা জাল সনদের কারণে চাকরি হারিয়েছেন বা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তারাও একই ধরনের আবেদন করতে শুরু করবেন। এতে শিক্ষা প্রশাসনে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নথি অনুযায়ী, ডিআইএ ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে প্রাথমিকভাবে ৮১৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর জাল সনদ চিহ্নিত করে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দপ্তর ও সনদ ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ থেকে সনদ যাচাই করা হয়। একাধিক বৈঠকে তা যাচাই-বাছাই শেষে মোট ৬৭৮ জনের সনদ জাল হিসেবে প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে নিবন্ধন সনদ সঠিক প্রমাণিত হওয়ায় দুজন শিক্ষককে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। জাল সনদ চিহ্নিত হওয়াদের মধ্যে ৫১০ জনের নিবন্ধন সনদ, ১২৩ জনের কম্পিউটার, ১৫ জনের সাচিবিক বিদ্যা, ৫ জনের গ্রন্থাগার বিজ্ঞান, ৫ জনের বিডিএস, একজনের বিএড এবং ১৭ জনের অন্যান্য সনদ জাল বলে প্রমাণিত হয়। এসব শিক্ষককের চাকরিচ্যুত এবং বেতন-ভাতা বন্ধের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
দেশ রূপান্তর
যুক্তরাষ্ট্রকে তুলোধুনো চীন-রাশিয়ার
দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে সরে এসে সম্প্রতি প্রকাশ্য সংঘাতে জড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান-ইসরায়েল। গতকাল শনিবার সংঘাত শুরুর নবম দিনেও একে অপরের হামলা অব্যাহত ছিল দুই দেশের। তবে ক্রমশ উত্তেজনা বাড়তে থাকা এই সংঘাত কপালের ভাঁজ বাড়িয়েছে বিশ্ব সম্প্রদায়ের। চলমান এই সংঘাতের প্রেক্ষাপটে গত শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসেছিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। তবে সেখানে গঠনমূলক আলোচনা তো দূরের কথা, বৈঠকটি পরিণত হয়েছিল এক উত্তপ্ত বাদানুবাদের মঞ্চ। যেখানে ইরান ও তাদের মিত্র রাশিয়ার তীব্র বাক্যবাণে বিধ্বস্ত হয়েছে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসবাদ ও সংঘাতের জন্য ইসরায়েল ও তার মিত্রদের অভিযোগের তীর ছিল ইরানের দিকে।
বৈঠকে দেওয়া বক্তৃতায় জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি ইসরায়েল ও তার মিত্রদের তেহরানে আগ্রাসনের সমর্থনে অতর্কিত হামলা এবং অস্তিত্বের হুমকির যুক্তিকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের অজুহাত’ বলে বর্ণনা করেন। আমির সাঈদ ইসরায়েলকে এমন একটি দেশ হিসেবে আখ্যা দেন, যারা নিরপরাধ মানুষ হত্যা করে ও অন্যান্য দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করে।
বক্তব্যের সময় ইসরায়েলি হামলায় নিহত শিশুদের ছবি তুলে ধরেন তিনি। জবাবে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেন, ইরান ভুক্তভোগী সেজে নাটক করছে। তিনি ইরাভানিকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা কী করে আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে এমন একটি পরিকল্পনার পরিণতি থেকে রক্ষা চাওয়ার সাহস করেন, যে পরিকল্পনা গণহত্যার জন্য তৈরি? যদিও নিজেদের দাবির সপক্ষে কখনোই কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি ইসরায়েল।
ব্যক্তিগত আক্রমণ ও দোষারোপে ভরা বৈঠকটিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে আঙুল তুলে বলেন, ইরানের পারমাণবিক বোমা বানানোর কথা ভিত্তিহীন গুজব। এ গুজব ছড়িয়ে পশ্চিমারা আসলে ইসরায়েলি আগ্রাসনে সহযোগিতা করছে। এরা ভয়াবহ অস্ত্রের মতোই বিপজ্জনক। চীনের প্রতিনিধি ফু কং কিছুটা নমনীয় ভঙ্গিতে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
তবে আইএইএ বা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি কিছু বলেননি তিনি। তবে বৈঠকে চমকপ্রদ এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত ডরোথি শে। মুখ ফসকে তিনি শুরুতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন। পরে অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই নিজ বক্তব্য সংশোধন করে তিনি বলেন, এই সংঘাতের জন্য ইরান দায়ী। আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত ডরোথি শে বলেন, ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস ও দুর্ভোগ ছড়িয়েছে। পরে সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজ বক্তব্য সংশোধন করেন।
প্রথম আলো
পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে, আলোচনায় অগ্রগতি নেই
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা বন্ধের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। সংঘাত বন্ধে বিভিন্ন পর্যায়ে চলছে কূটনৈতিক তৎপরতা। জরুরি অধিবেশন হয়েছে জাতিসংঘে। চলমান সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের বিষয়ে ইরান কিছুটা আগ্রহ দেখালেও হামলা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বেপরোয়া ইসরায়েল। এমন পরিস্থিতিতে সংঘাত নিরসনের আলোচনায় কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
গতকাল শনিবার সংঘাতের নবম দিনেও ইরানের দুই সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। হামলা হয়েছে ইরানের একটি পরমাণু স্থাপনায়। তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়েছে ইরানও। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে দেশটির একাধিক বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান অগ্রসর হচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
এ সংঘাত থামাতে কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যে গতকাল তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। শহরটিতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্যদেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেখানে আরাগচি জানান, ইরানে ইসরায়েলের হামলা বন্ধ হলেই কেবল তেহরানের কূটনৈতিক সমাধানের পথে ফেরা সম্ভব।
এতে আপত্তি রয়েছে ইসরায়েলের। দেশটির নেতাদের দাবি, ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে। এ সক্ষমতা ধ্বংসের যে লক্ষ্য নিয়ে তারা হামলা শুরু করেছে, তা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত থামাবে না। এ হামলার শুরু থেকেই ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে উল্লেখ করে গতকাল আরাগচি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের আলোচনায় ফেরা সম্ভব নয়।
ইরানের পরমাণু প্রকল্পগুলো নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের ওই আলোচনা চলছিল। ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর তা স্থগিত করে তেহরান। ইরানকে ওই আলোচনায় ফেরানোর লক্ষ্যে গত শুক্রবার জেনেভায় আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান। ওই আলোচনা ‘গঠনমূলক’ হয়েছে বলে দুই পক্ষই জানালেও শিগগিরই সংঘাত বন্ধের বিষয়ে কোনো আশার কথা শোনাতে পারেনি। শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশন থেকেও ইতিবাচক কোনো সংবাদ আসেনি।
সংঘাত বন্ধের কূটনৈতিক সমাধানে অগ্রগতির জন্য ইরানের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে বলে মনে করেন তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোহরেহ খারাজমি। আল–জাজিরাকে তিনি বলেন, পশ্চিমাদের ওপর ইরানের কোনো আস্থা নেই। তারা একদিকে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসছে, অপর দিকে হামলার জন্য ইসরায়েলকে সবুজসংকেত দিয়ে যাচ্ছে। কূটনীতি যেন সফল হয়, সে জন্য ইরানের সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানাতে হবে।
মানবজমিন
পোশাকখাতে নয়া চ্যালেঞ্জ
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক, ভারতের বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং চলমান ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ পোশাক শিল্পের জন্য নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এসব বাধায় শিল্পের স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিকে গুরুতর হুমকির মুখে ফেলেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান নানা কারণে বন্ধ হয়েছে। এতে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে বেকার হয়েছেন অর্ধশতাধিক শ্রমিক। তবে কিছু নতুন কারখানাও চালু হয়েছে। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও শিল্প পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ অবস্থা দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে বলে শঙ্কা অর্থনীতিবিদ এবং খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের।
উদ্যোক্তারা বলছেন, শিল্পকারখানায় গ্যাসের অভাবে উৎপাদন নেমেছে প্রায় অর্ধেকে। এ অবস্থায় জ্বালানি বিভাগ নতুন করে এলএনজি আমদানি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আমদানিকৃত এলএনজির ওপর নির্ভরশীলতা পরিস্থিতি আরও সংকটময় করে তুলছে। এরমধ্যে নতুন করে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে।
জানা গেছে, গত ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে শিল্পের মালিকের সম্পর্ক, রাজনৈতিক পরিচয়, অর্থনৈতিক দুর্নীতির কারণে গত সাড়ে ১০ মাসে দেশের শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৪২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় এসেছে। ঊর্ধ্বমুখী সুদহারে নতুন শিল্পকারখানা স্থাপন না হওয়ায় কমেছে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি। শিল্প পুলিশের তথ্যানুযায়ী, প্রধান তিন শিল্প এলাকা গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী এবং সাভার-ধামরাই এলাকায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানা বন্ধ হওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন ৬০ হাজারের বেশি কর্মী।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেছেন, শিল্পবিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিল্পকারখানা গলাটিপে মেরে ফেলা হচ্ছে। গ্যাস সংকটে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। চলতি মূলধন সংকুচিত হয়েছে।
বিজিএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ইসরাইল ও ইরানের যুদ্ধ আমাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে তার প্রভাব সবার ওপর পড়বে। পোশাক শিল্পও এর প্রভাব থেকে বাদ যাবে না। এদিকে, শুক্রবার মৌলভীবাজারে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ইরান ও ইসরাইলের চলমান যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যদিও প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগেভাগেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। নিজেদের সক্ষমতা দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে সরকার।