বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
তৎপর রাশিয়া, শেষ দেখবে ইরান

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৯:৫৯

বাংলাদেশের খবর
বন্ধ হচ্ছে না মব, দায় এড়াতে পারবে না সরকার
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে মব সৃষ্টির মাধ্যমে আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বাংজাউয়া বিরাজ করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময় হুঁশিয়ারি দিলেও বন্ধ হচ্ছে না মবের রাজত্ব। রাজনীতিবিদরা বলছেন, এ দেশে মবোক্রেসির হোতা পতিত আওয়ামী লীগ।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে বা তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার করতে হবে। বিচার ব্যতিরেকে 'মব' সৃষ্টি বা জনতার হাতে আইন তুলে নেওয়ার ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর দৃষ্টান্ত। এতে সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। এভাবে মব সৃষ্টির ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে এটি ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মবোক্রেসির মাধ্যমে সমাজে বিশৃঙ্খলা, আইনের শাসনের প্রতি এক ধরনের অনীহা তৈরি হচ্ছে। যারা মব সৃষ্টি করছে, তাদের কেন আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না? রোববার দুপুরে ভয়ভীতি দেখিয়ে জনগণের ভোট ছাড়া নির্বাচন করার অভিযোগে সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিএনপি। এই মামলার কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় 'মব' সৃষ্টি করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার উত্তরার বাসা ঘেরাও করে স্থানীয় কিছু 'জনতা'। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হেফাজতে নেয় উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
মানবজমিন
তৎপর রাশিয়া শেষ দেখবে ইরান
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। কেউ জানে না এই যুদ্ধের শেষ কোথায়? উভয় পক্ষের হামলাই তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। সোমবার দিনভর ইসরাইলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরান। এতে দেশটির একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বেশ কয়েকটি এলাকা। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে তেল আবিবের বহু ভবন ও সড়কে আছড়ে পড়ছে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র। পক্ষান্তরে ইরানের একাধিক বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ইসরাইলি হামলার খবর পাওয়া গেছে। তেল আবিব দাবি করেছে তারা ইরানের ৬টি বিমানবন্দর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এ লড়াই সহসাই থামবে এমন লক্ষণ নেই। ইরান জানিয়েছে, তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের শেষ দেখে ছাড়বে তারা। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদে বলেছেন, যত সময় লাগুক এ লড়াই চালিয়ে যাবে ইরান। এদিকে তেহরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইরানের জনগণকে সরাসরি সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইরানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের হামলা অবৈধ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। রুশ প্রেসিডেন্টের কাছে সহায়তা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। চিঠিতে রাশিয়া যেন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ নেয় সে বিষয়ে আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। বৃটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি বলেছে, ইরানকে কোনোভাবেই পারমাণবিক কার্যক্রম চালাতে দেয়া হবে না। ইরান জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া তাদের অধিকার।
এ ছাড়া তেহরানে পরমাণুকেন্দ্রগুলোতে মার্কিন হামলার বিরুদ্ধে অপেশাদার আচরণের জন্য জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্থগিতের কথা বিবেচনা করছে ইরান। এ বিষয়ে দেশটির পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। বহু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক বলছেন, একতরফাভাবে এমন হামলার ফলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ন্যায্যতা পেয়েছে ইরান। এদিকে হরমুজ প্রণালিতেও শুরু হয়েছে উত্তেজনা। তেল ও গ্যাসবাহী একাধিক জাহাজ রুট পরিবর্তন করে গন্তব্যে গিয়েছে বলে খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক মিডিয়া। বিশ্ববাজারে তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে। বিশ্ব জুড়ে নিজ নাগরিকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। বিশেষ করে কাতারে অবস্থিত মার্কিন নাগরিকদের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছে দেশটি। এদিকে সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের একটি এলাকায় মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলার খবর পাওয়া গেছে। যদিও কারা বা কোথা থেকে এই হামলা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বণিক বার্তা
কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলা
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, কাতার ও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রতিশোধ নিতেই গতকাল রাতে ইরাকের বেশ কয়েকটি মার্কিন ঘাঁটি ও কাতারের রাজধানী দোহার আল-উদেইদ এয়ার বেজে ‘অ্যানাউন্সমেন্ট অব ভিক্টরি’ নামে সামরিক এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছে তেহরান। এ ঘটনায় কাতারের পাশাপাশি কুয়েত, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, জর্ডান, সিরিয়া, লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সবক’টি দেশ তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। এ পরিস্থিতিতে জ্বালানি সরবরাহ ও দেশগুলোয় থাকা প্রবাসীদের নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে বাংলাদেশ।
এদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতার সরকার। দোহা বলছে, এটি কাতারের সার্বভৌমত্ব, আকাশসীমা ও জাতিসংঘ সনদের সরাসরি লঙ্ঘন। রাষ্ট্র হিসেবে কাতার এ স্পষ্ট আগ্রাসনের জবাবে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় থেকে সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার সংরক্ষণ করে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, ‘কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে এবং ঘাঁটি বা শহরে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’
ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছে, এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের আগের হামলার প্রতিশোধ। এ হামলা ভ্রাতৃপ্রতিম কাতার বা দেশটির জনগণের বিরুদ্ধে নয়। আবাসিক এলাকা থেকে দূরের মার্কিন ঘাঁটিতে এ হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে বলছে, এ হামলা বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ কাতার বা তার সম্মানিত জনগণের জন্য কোনো হুমকি তৈরি করে না। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান কাতারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের উষ্ণ ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে কূটনৈতিক চ্যানেলে সতর্ক করেছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নিউইয়র্ক টাইমস ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইরান হামলার আগে কাতারকেও অবহিত করে, যার ফলে কাতার আকাশপথ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়।
এ পূর্ব সতর্কতার উদ্দেশ্য ছিল ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি এড়ানো। নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, ইরান এ কূটনৈতিক সমন্বয় করেছে ‘জনগণের প্রাণনাশ এড়াতে’। হামলার সময়টাও এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল যাতে ঘাঁটিতে সেনা উপস্থিতি কম থাকে।
প্রথম আলো
সরকার বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় আবারও আলোচনায় ‘মব ভায়োলেন্স’। রাজধানীর উত্তরার বাসায় ঢুকে গত রোববার একদল লোক নূরুল হুদাকে বের করে আনেন, জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করে পুলিশে সোপর্দ করেন। জুতা দিয়ে নূরুল হুদাকে আঘাত ও ডিম নিক্ষেপের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা গেছে, ঘটনার সময় সেখানে পুলিশও উপস্থিত ছিল।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলবদ্ধভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা বেড়েছে। ঘটনার পর সরকারকে বিবৃতি দিতে দেখা গেছে। নূরুল হুদার ঘটনার পরও বিবৃতি দিয়েছে সরকার। গত রোববার রাতে সরকারের বিবৃতিতে ‘অভিযুক্ত ব্যক্তির ওপর আক্রমণ ও তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা বেআইনি, আইনের শাসনের পরিপন্থী ও ফৌজদারি অপরাধ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সরকার শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না। ইংরেজি ‘মব’ শব্দের অর্থ ‘উচ্ছৃঙ্খল জনতা’। এ উচ্ছৃঙ্খল জনতা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে সহিংসতার ঘটনা ঘটালে তাকে মব ভায়োলেন্স বলা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি চাইলেই কি আরেকজনকে ধরে নিয়ে পুলিশে দিতে পারেন, শারীরিক বা মানসিকভাবে হেনস্তা করতে পারেন, লাঞ্ছিত করতে পারেন, কাউকে মারধর করতে পারেন কিংবা হুমকি দিতে পারেন? উত্তর হচ্ছে, পারেন না।
বিচারব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে সমাজে-রাষ্ট্রে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা। বাংলাদেশে আইন আছে, আদালত আছে। সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, ‘কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাইবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাইবে না কিংবা কাহারও সহিত অনুরূপ ব্যবহার করা যাইবে না।’ দেশের বিদ্যমান বিচারব্যবস্থায় কোনো নাগরিক যদি কোনো কারণে সংক্ষুব্ধ হন, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অন্যায় আচরণের শিকার হন, এর প্রতিকারের জন্য তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। বিচার করার একমাত্র এখতিয়ার আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আদালতের।
সমকাল
হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ, হিমশিম চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। এসব রোগীর বড় অংশ আসছে ঢাকার বাইরে থেকে। ঢাকার বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৮৫ জন চিকিৎসাধীন। বাড়তি রোগীর সামাল দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ে ৩৯২ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই যদি কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ বছর ৮ হাজার ১৫০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে জুনের ২৩ দিনে সেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৮০৫ জন। মে মাসে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৭৭৩ জন। সে হিসাবে আগের মাসের তুলনায় জুনের ২৩ দিনেই রোগী হয়েছে দ্বিগুণের বেশি। এদিকে জানুয়ারি থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে জুনের প্রথম ২৩ দিনে ১১ জনের মৃত্যু হয়।
জুনের ৩ হাজার ৮০৫ রোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৪ দশমিক ৭১ শতাংশ রোগী মিলেছে বরিশাল বিভাগে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরে ১৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩ শতাংশ এবং ঢাকা মহানগরের বাইরে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ রোগী পাওয়া গেছে। বাকি ১৭ দশমিক ১২ শতাংশ অন্য বিভাগে।
রাজধানীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড), শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে শয্যার চেয়ে বেশি রোগীর সেবা দিচ্ছে।
ঢামেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় ২০ শয্যার আলাদা ওয়ার্ড করা হয়েছে। সেখানে বর্তমানে ৬৮ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত মাসে এই হাসপাতালে রোগী ছিলেন ৩৩ জন। জুনের শুরু থেকে রোগী বাড়ছে।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, শয্যা সংকট, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি ও অতিরিক্ত রোগীর চাপ সবকিছু মিলিয়ে হাসপাতালগুলোর সার্বিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফারুক আহাম্মদ জানান, অনেক সময় এক শয্যা দুই রোগীকে রাখতে হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি সাধ্যমতো সেবা দিতে, তবে এই চাপ আরও বাড়লে সামাল দেওয়া কঠিন হবে।
ঢামেক হাসপাতালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে শুরু করে মেডিসিন ওয়ার্ড পর্যন্ত উপচে পড়া ভিড়। ডেঙ্গু রোগীর অধিকাংশই জ্বর, বমি ও শরীরে ব্যথা নিয়ে আসছেন। জরুরি বিভাগে একসঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী অপেক্ষায় রয়েছেন। হাসপাতালের বরান্দায় অন্তত ১৫ জন রোগীকে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। মেডিসিন ওয়ার্ডের এক নার্স বলেন, তিন দিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। পুরোনো রোগী ছাড়তে না পারায় নতুনদের জায়গা দিতে পারছি না।
কামরুল হাসান নামের এক রোগীর বাবা আতিকুর রহমান বলেন, দুপুর থেকে হাসপাতালে ঘুরছি। কোথাও শয্যা পাচ্ছি না। ছেলের জ্বরের সঙ্গে রক্তপাত শুরু হয়েছে, খুব ভয় পাচ্ছি। শেষে বারান্দার একটা খালি জায়গায় বসিয়ে রেখেছি। ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করছেন, কিন্তু এত রোগীর ভিড়ে সময় মতো সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দীর্ঘ সময় লাগছে।
যুগান্তর
সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল কোথায়
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে ধরতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের এক দায়িত্বশীল উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, হাবিবুল আওয়ালকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে (ডিবি) কার্যালয়ে আনা হচ্ছে। যদিও ডিবির পক্ষ থেকে রাতেই বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। এমন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন মহলের প্রশ্ন তাহলে হাবিবুল আওয়াল কোথায়?
এদিকে এ প্রসঙ্গে সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) সাংবাদিকদের বলেন, কাজী হাবিবুল আউয়ালকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। তাকে গ্রেফতারের যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হাবিবুল আউয়াল লোকচক্ষুর অন্তরালে অবস্থান করছিলেন। রোববার সন্ধ্যায় অপর সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে গ্রেফতারের পর আলোচনায় আসে তার নাম। নূরুল হুদার কমিশন আলোচনায় ছিল ২০১৮ সালে ‘দিনের ভোট রাতে’ সম্পন্ন করে। আর কাজী আউয়ালের কমিশন বিতর্কিত ছিল ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের দলীয় ও একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করে। এছাড়া বিএনপিকে নির্বাচনে আনা হবে কিনা-এমন প্রশ্নে তার বেশ কিছু নেতিবাচক বক্তব্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়।
জানতে চাইলে ডিবির যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আইনের আওতায় আনতে জোরালো তৎপরতা চালাচ্ছি। রোববার রাতে তাকে ধরতে দুই দফায় অভিযান চালিয়েছিলাম। প্রথমে খবর পাই তিনি বসুন্ধরা এলাকার একটি বাসায় আছেন। সেখানে আমাদের টিম যাওয়ার পর জানতে পারে, কিছুক্ষণ আগেই তিনি ওই বাসা ত্যাগ করেছেন। পরে আরেকটি এলাকায় তার অবস্থানের তথ্য পাওয়ার পর সেখানেও অভিযান চালানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে পাওয়া যায়নি।’
ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘রোববার রাতে বসুন্ধরা এলাকায় আরেকটি অভিযান চালিয়ে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুল মাওলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যেহেতু হাবিবুল আওয়ালকে ধরতে একই এলাকায় অভিযান চালানো হয়, এ কারণে অনেকেই মনে করেছিল আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। তবে তাকে গ্রেফতারে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। যখনই পাওয়া যাবে, তখনই তাকে গ্রেফতার করা হবে।’
কালের কণ্ঠ
বিপুচক্রে পাচার কয়েক বিলিয়ন ডলার
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দীর্ঘ ১১ বছর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে নসরুল হামিদ বিপু ও তাঁর ভাই-বন্ধু মিলে কয়েক বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছেন। পাচারের অর্থ দিয়ে তাঁরা বিভিন্ন দেশে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। বিপু ও তাঁর ছোট ভাই ইন্তেখাবুল হামিদ অপু, ঘনিষ্ঠ বন্ধু রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল), মামা কামরুজ্জামান চৌধুরীসহ অন্য আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের দুর্নীতির তথ্য বের হচ্ছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন দেশে বিপুর অর্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বারমুডা, মাল্টা, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, মোনাকো, সাইপ্রাস ও তুরস্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি কম্পানি খুলে ওই কম্পানির মাধ্যমে বিপু হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই কম্পানি প্রতিষ্ঠাকালে বিপু তাঁর নিজের যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত বাসভবনের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন।
পাঁচ বেডরুমের ওই বাসার বাজারমূল্য ৩৬ লাখ ১৭ হাজার ৪১৫ মার্কিন ডলার। সেখানে শরীফ হায়দার নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিপুর স্ত্রী সীমা হামিদকে নিয়ে পাথ ফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ট্রেড করপোরেশনের লাইসেন্স নেন। এই করপোরেশনের আওতায় মোবিল গ্যাস স্টেশনসহ দেড় ডজনের মতো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ফ্লোরিডায় অবস্থিত ওই গ্যাস স্টেশনটি কেনা হয় কয়েক মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।