বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
প্রকল্প পরিচালক নিয়োগে কাদেরের নিলাম প্রথা

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১০:০৫

বাংলাদেশের খবর
সরকারের সামনে তিন চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, একটি দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা পেরিয়ে দেশ যখন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে স্থিতিশীলতার স্বপ্ন দেখছে, তখন নির্বাচনের রোডম্যাপ এবং সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে নতুন করে ঘনীভূত হচ্ছে সংশয়ের মেঘ। বিশেষ করে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সরকারের সামনে এখন তিন চ্যালেঞ্জ।
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, জামায়াতের নিরপেক্ষতার শর্ত এবং ছোট দলগুলোর সহিংসতার আশঙ্কা- এই তিন সুরকে সামঞ্জস্য করাই এখন সরকারের জন্য বড় পরীক্ষা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জুলাই সনদ যদি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেয়, তাহলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বচ্ছ হবে। অন্যথায়, বাংলাদেশ নির্বাচন-পূর্ব অস্থিরতা ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখোমুখি হতে পারে। সরকার ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও, এর উপদেষ্টা পরিষদের স্বচ্ছতা, কার্যকারিতা এবং চূড়ান্ত লক্ষ্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
মানবজমিন
সমমনা দলগুলোকে যে বার্তা দিচ্ছে বিএনপি
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, লন্ডন বৈঠক ও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের জোট ও দলগুলোকে বার্তা দিচ্ছে বিএনপি। নির্বাচনে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হচ্ছে বিএনপি’র তরফে। এমন বার্তা পেয়ে বিএনপি’র সমমনা দলগুলোও আত্মবিশ্বাসী। নতুন প্রেক্ষাপটে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বার্তাবিনিময় করতে ধারাবাহিক আলোচনা করছেন বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা।
এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এ সব বৈঠকে অংশ নেয়া নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতারা দলগুলোকে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছেন। বৈঠকে নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কিংবা আসন সমঝোতার মাধ্যমে অংশগ্রহণের কথা বলেছেন সমমনা দলগুলোর নেতারা। বিএনপিও ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনের অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছে। কিছু কিছু আসনে সমমনা দলগুলোর নেতারা নির্বাচনী প্রস্তুতিতে বাধার মুখে পড়ছেন এমনটাও জানিয়েছেন কোনো কোনো দলের নেতা। এর জবাবে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, আসন সমঝোতা যদি হয় তাহলে যেসব আসনে সমমনা দল ছাড়া পাবে সেখানে নির্বাচনের আগে সব ধরনের বৈরিতা কেটে যাবে।
যদিও নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কিংবা আসন সমঝোতার মাধ্যমে অংশগ্রহণের বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সামনে এ নিয়ে সমমনাদের সঙ্গে আরও আলোচনা করবে বিএনপি। আলোচনার মধ্যে দিয়েই নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন দলগুলোর নেতারা। এছাড়া নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণ করতে হবে বলে নেতারা মনে করছেন। এজন্য এখনই চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই বলে কোনো কোনো দলের নেতারা বৈঠকে পরামর্শ দিয়েছেন।
নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে বিএনপি’র তরফে ইঙ্গিত দেয়া হয়। লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের বিষয়বস্তুও সমমনা দলের নেতাদের সঙ্গে উপস্থাপন করছেন বিএনপি নেতারা। গত রোববার রাতে বিএনপি’র লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের বৈঠকে সমমনাদের আসনগুলোতে নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি’র বিরোধিতার কথা তুলে ধরেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। এ নিয়ে বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতারা। নির্বাচনের আগে সমমনারা বিএনপি’র কাছ থেকে মনোনয়ন নিয়ে যাওয়ার পরে বৈরিতা থাকবে বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। ওদিকে গণতন্ত্র মঞ্চ নির্বাচনে মঞ্চগতভাবে না কী দলীয়ভাবে অংশ নেবে তা বিএনপি’র পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়। বিষয়টি আলোচনা মাধ্যমে নির্বাচনের আগে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে বিএনপিকে জানান- নেতারা।
যুগান্তর
ভোটের তারিখ ঘোষণার আভাস
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বহুল আলোচিত ও প্রত্যাশিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিষয়টি শিগগির জনগণের সামনে আরও স্পষ্ট হতে পারে। বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠকের মধ্য দিয়ে এমন আভাস মিলেছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিইসি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কয়েকজন এমনটিই মনে করেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমকে কোনো তরফ থেকে ব্রিফ করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক হয়। বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ‘সব প্রস্তুতি শেষ করা গেলে ২০২৬ সালের পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও (ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে) নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে বলে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।’ লন্ডনের বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘সঠিক তারিখ নির্ধারণে আমরা কোনো সমস্যা দেখছি না। কেউ দেখলে তা ভুল দেখছেন। নির্বাচন কমিশন শিগগিরই একটা তারিখ ঘোষণা করবে।’
এদিতে ১৫ জুন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলে ইসি সরকারের ‘ভাব’ বুঝতে পারবে। তখন নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বাংলাদেশ প্রতিদিন
প্রকল্প পরিচালক নিয়োগে কাদেরের নিলাম প্রথা
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ‘ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’। এ প্রকল্পটি একনেকে পাস হয় ২০১৪ সালে। ওই বছরের মার্চে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে সড়ক বিভাগ। এ ধরনের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয় একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে। যে কমিটির চেয়ারম্যান থাকেন সচিব। কিন্তু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাদ সাধলেন। তিনি জানিয়ে দিলেন, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেবেন তিনিই। সাতজনের সংক্ষিপ্ত তালিকা এবং জীবন বৃত্তান্ত দেওয়া হলো তার (ওবায়দুল কাদের) টেবিলে। দুই দিনের মধ্যেই ঠিকাদাররা যোগাযোগ শুরু করলেন তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে। ডিপিপিতে এ প্রকল্পের ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ৭৫৭ কোটি টাকা। পরে তিন ধাপে বাড়িয়ে প্রকল্প ব্যয় নির্ধারিত হয় ১৩৭৫ কোটি টাকা। সাতজনের মধ্যে একজন প্রকল্প পরিচালক হওয়ার জন্য ১০ কোটি টাকা দিতে রাজি হন। একজন ঠিকাদার এই অর্থ পরিশোধ করেন। শর্ত হলো, প্রকল্পের কাজ তাকে দিতে হবে।
শেষ পর্যন্ত ‘প্রকল্প পরিচালক’ হিসেবে নিয়োগ পান ওই সর্বোচ্চ ঘুষ দিতে সম্মত হওয়া ব্যক্তি। ওবায়দুল কাদেরের রাজত্বে সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগে এভাবেই প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ হতো। সাড়ে ১২ বছরের বেশি সময় ওবায়দুল কাদের সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন। যেহেতু তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি। কাজেই এ দুই মন্ত্রণালয়ের তিনি ছিলেন সব ধরনের জবাবদিহির ঊর্ধ্বে। তাকে কোনো মন্ত্রী বা আমলা প্রশ্ন করতে পারতেন না। আর এ সময় অদ্ভুত দুর্নীতির নেশায় আসক্ত হয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদেরের দুর্নীতি কেবল কমিশনবাণিজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। কমিশনবাণিজ্যের পাশাপাশি ওবায়দুল কাদের তার মন্ত্রণালয়ের নিয়োগের ক্ষেত্রেও মহাদুর্নীতি করেছেন। গত সাড়ে ১২ বছরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মোট প্রকল্প হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৬৬৭টি। এ সময় সেতু বিভাগে প্রকল্প হয়েছে ৫৭২টি। এসব প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকদের দেওয়া হতো অফুরন্ত ক্ষমতা।
প্রকল্প পরিচালকরাই ডিপিপি তৈরি করতেন। সেই ডিপিপি পাস করানো হতো। কোন বিষয়ে ডিপিপি তৈরি করা হবে সেটি বলে দিতেন ওবায়দুল কাদের। এসব প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করতে হতো ওবায়দুল কাদেরের অনুমতি নিয়ে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করার ক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদের অগ্রিম টাকা নিতেন। ধরা যাক, একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হলো ১০০ কোটি টাকা।
প্রথমেই ডিপিপি তৈরির ক্ষেত্রে প্রকল্পের ব্যয় ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হতো। এরপর প্রকল্প পরিচালকের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগ অভ্যন্তরীণভাবে প্রকল্প পরিচালক বাছাই প্রক্রিয়ার আয়োজন করত। সেই নির্বাচন কমিটির প্রধান ছিলেন ওবায়দুল কাদের। যারা প্রকল্প পরিচালক হতে আগ্রহী তাদের মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫ শতাংশ আগেই জমা দিতে হতো। অগ্রিম ৫ শতাংশ টাকা জমা না দিলে তিনি প্রকল্পপ্রধান হতে পারতেন না। ফলে প্রকল্পপ্রধানের স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগে। নিয়ম করে দেওয়া হয়েছিল যে, প্রকল্পপ্রধানের যারা সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত হবেন, তাদের সবাইকে ওবায়দুল কাদেরের সিন্ডিকেটের যে সদস্য আছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
কালের কণ্ঠ
সরকারি চাকুরেদের ১৫ বছরেই স্বেচ্ছা অবসর
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরির ২৫ বছর নয়, ১৫ বছরেই স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে পারবেন। জনপ্রশাসন সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ড. আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর কমিশনের এমন সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার। গত ১৮ জুন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ বাস্তবায়ন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, ফ্যাসিস্ট সরকারের গত ১৫ বছরে তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। তাঁদের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন জেলার পুলিশ সুপারসহ (এসপি) নির্বাচনকালীন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।
বিতর্কিত এই তিন নির্বাচনে বিশেষ ভূমিকা রাখা যেসব কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগকেই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। যাঁদের চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর হয়নি, তাঁদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। সরকার তাঁদের বসিয়ে বেতন দিচ্ছে। এ ধরনের কর্মকর্তাদের অবসরে পাঠাতেই মূলত মুয়ীদ কমিশনের এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।
কালবেলা
কথায় কথায় থানা ঘেরাও
কালবেলার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, চাঁদাবাজির মামলায় চট্টগ্রামে চান্দগাঁও থানা ইসলামী আন্দোলনের নেতা হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তবে দলটির নেতাকর্মীরা মামলাটি মিথ্যা দাবি করে তাকে ছাড়াতে থানা ঘেরাও করে অবস্থান নেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত ওই আসামিকে ছেড়ে দেয়। গত ২০ জুন এ ঘটনা ঘটে। এর আগে ১১ জুন কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগে রিনা খাতুন নামে এক নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় মামলার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে, তাদের ছেড়ে দিতেও থানা ঘেরাও করা হয়।
সর্বশেষ গত বুধবার খুলনায় মামলার আসামি এক পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধর করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়। কিন্তু তাকে মামলায় গ্রেপ্তার না দেখানোয় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তর ঘেরাও করেন দলটির নেতাকর্মীরা। তারা টায়ার জ্বালিয়ে এবং সদর দপ্তরের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যুক্ত কর্মকর্তারা বলছেন, একটা সময় কোনো জাতীয় ইস্যুতে থানা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি দেখা যেত, তাও ছিল অনেকটা প্রতীকী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ‘পান থেকে চুন খসা’র মতো ঘটনায়ও মব সৃষ্টি করে থানা ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটছে। নানা দাবি আদায়ের পাশাপাশি এজাহারভুক্ত আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার মতো দাবি জানিয়েও এ ধরনের কর্মসূচি চলছে। এ ধরনের কর্মসূচি ‘মামা বাড়ির আবদারে’ পরিণত হয়েছে। যদিও থানা ঘেরাও করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা আইনত অপরাধ।
সাম্প্রতিক সময়ে নানা দাবিতে ঘেরাওয়ের শিকার অন্তত পাঁচটি থানার অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তুচ্ছ ঘটনায় থানা ঘেরাওয়ের মতো ঘটনায় থানার নিয়মিত কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। সেবাপ্রত্যাশীরা আতঙ্কিত হন এবং সেবাবঞ্চিত হন। এই আতঙ্কটা নানা কারণে থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে। তারা বলছেন, থানা ঘেরাওয়ের মতো কার্যক্রম আইনত অপরাধ হলেও এর বিরুদ্ধে তারা সবক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থাও নিতে পারেন না।
কালবেলার কাছে থাকা গত ছয় মাসের পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেছে, নানা আবদারে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি দলের অঙ্গসংগঠন, ছাত্র সংগঠন, সাধারণ ছাত্র, শ্রমিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ-স্বজনরাও থানা ঘেরাওয়ের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তবে খুব কম ঘটনাতেই আইনগত ব্যবস্থা নিতে পেরেছে পুলিশ; বরং ঘেরাওকারীদের দাবি মেনে নিয়েছে কিংবা তা মানতে বাধ্য হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে সারা দেশে অন্তত ৪৩ বার থানা ঘেরাওয়ের মতো ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে পাঁচবার, ফেব্রুয়ারিতে সাতবার, মার্চে ৯ বার, এপ্রিলে ১০ বার, মে মাসে সাতবার এবং চলতি জুনে পাঁচবার থানা ঘেরাওয়ের মতো ঘটনা ঘটেছে। বারবার থানা ঘেরাও এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম কালবেলাকে বলেন, ‘থানা
দেশ রূপান্তর
নির্বাচন ধ্বংসে তিন সিইসি
দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে ‘একতরফা’, ২০১৮ সালে ‘রাতের ভোট’ ও ২০২৪ সালে ‘ডামি’ নির্বাচন বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে বহুল আলোচিত-কলঙ্কিত। অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান রক্ষার নামে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল। বলা হচ্ছে, এ তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাকে রীতিমতো ‘ধ্বংস’ করেছেন। নির্বাচনের ওপর জনগণের আস্থা চুরমার হয়েছে। বিতর্কিত তিন নির্বাচন পরিচালনায় তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মূলত ক্ষমতাসীনদের আজ্ঞাবহ।
তবে বিশেষজ্ঞরা তিন সিইসিকে সব দায় দিতে নারাজ। তারা বলছেন, শুধু এ তিন কমিশন নয়, এর আগের নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা বা কর্মকাণ্ড নিয়েও কিছু প্রশ্ন উঠেছে। তবে এ তিন কমিশনের মতো হয়তো তারা খোলাখুলি করেননি, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধেও কিছু অভিযোগ ছিল নির্বাচন ম্যানিপুলেশন করার। দেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, তার কয়েকটি বাদে প্রায় সবই ছিল বিতর্কিত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিতর্কের সৃষ্টি হয় ওই তিন নির্বাচন ঘিরে।
সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন, কেএম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় সাবেক দুই সিইসিকে এরইমধ্যে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এ তিনজনের প্রত্যক্ষ ভূমিকার ফলেই টানা নির্বাচনী জয় নিশ্চিত করে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের দিকে এগিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশিষ্টজনদের মতে, এ তিন সিইসি ও তাদের কমিশনাররাই ছিলেন সেই রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের অন্যতম স্তম্ভ, যাদের সহায়তায় দেশে গণতন্ত্র ক্রমেই পরিণত হয়েছিল একদলীয় বাস্তবতায়। তবে তাদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তারা।
জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে বিএনপির করা মামলায় গত বুধবার সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে তোলা হয়। তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। এর আগে গত রবিবার সাবেক সিইসি কেএম নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেদিন রাজধানীর উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক তাকে বের করে নিয়ে আসে। পরে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করে পুলিশে সোপর্দ করে। ওই মামলায় গত সোমবার নুরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। তবে সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন এখনো গ্রেপ্তার হননি।
বণিক বার্তা
আমদানি-রফতানি বিঘ্নিত হওয়ায় উদ্বেগে ব্যবসায়ীরা
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে গত মে মাসে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কাজ বন্ধ রেখে শুরু করেন কলমবিরতি। চরমভাবে ব্যাহত হয় দেশের আমদানি কার্যক্রম। লাগাতার এ আন্দোলনে পিছু হটে সরকার। আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের আশ্বাসে স্থগিত হয় আন্দোলন। কিন্তু ঈদুল আজহার ছুটির পর এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ ইস্যুতে ফের মাঠে নেমেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রাজস্ব আহরণের কাজে নিয়োজিত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ সংস্থাটির কর্মীদের আন্দোলনের কারণে দেশের অর্থনীতিতে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থার শঙ্কা।
দেশের অর্থনীতি এমনিতেই মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আহরণ না হওয়ায় ধার নিয়ে ব্যয় মেটাতে হচ্ছে সরকারকে। তার ওপর এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রভাবে বন্দর ও কাস্টমসে আমদানি-রফতানি বিঘ্নিত হওয়ায় উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে তারা পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান চান।
সরকারকে দ্রুত সংকট সমাধানের তাগিদ দিয়ে বিএসআরএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমের আলীহুসাইন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘শিল্পের কাঁচামালের একটি নিরবচ্ছিন্ন আমদানি চেইন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাস্টমস কার্যক্রম বন্ধ থাকলে নতুনভাবে শুল্কায়ন বাধাগ্রস্ত হয়ে সময়মতো চালান খালাস করা সম্ভব হবে না, এতে খরচ বাড়বে এবং বাজারে সরবরাহ বিঘ্নিত হবে। এ পরিস্থিতি এড়াতে আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই দ্রুত এ সংকটের সমাধান নিশ্চিত করার, যেন উৎপাদন ব্যবস্থাকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দেয়া না হয়।’
এনবিআর পৃথক্করণের জন্য গত ১৩ মে অধ্যাদেশ জারির পরদিন থেকে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ডাকে এনবিআর ভবনে আংশিক কলমবিরতি পালন করা হয়। এরপর থেকে তারা ধারাবাহিকভাবে এ কর্মসূচি চালিয়ে যান। এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিল ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে অপসারণসহ চার দাবিতে ২১ মে থেকে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে পৃথক্করণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের কথা জানানো হয়। পাশাপাশি জারি করা অধ্যাদেশে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার কথা বলা হয়। এ ঘোষণার পর সেদিনই এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয়। তবে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কাজ না করার লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয় ওই সময়। ফলে ঈদুল আজহার ছুটির পর আবারো আন্দোলনের কারণে এনবিআর অস্থির হয়ে ওঠে।
- এটিআর