বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
আবু সাঈদ হত্যার নির্দেশদাতা হাসিনা

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৯

বাংলাদেশের খবর
ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জে বিএনপি
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘণ্টা বাজছে। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বইছে নির্বাচনি হাওয়া। তবে এই হাওয়ার বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এখন ত্রিমুখী সংকটের মুখোমুখি।
এই তিনটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ওপরই নির্ভর করছে দলটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ। প্রথম চ্যালেঞ্জটি দলের একেবারে ভিতরে। এটি হলো ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন এবং দলের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জটি অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে। তৃতীয় এবং সম্ভবত সবচেয়ে জটিল চ্যালেঞ্জটি হলো ইসলামপন্থি দলগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ মেলানো। এই তিনটি কাঁটাপূর্ণ পথ বিএনপি কীভাবে পাড়ি দেয়, তার ওপরই দেশের আগামী দিনের রাজনীতির অনেক কিছু নির্ভর করছে।
প্রথম চ্যালেঞ্জ : দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও ত্যাগীদের
মূল্যায়ন: বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে গেছে। বিশেষ করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বহু নেতাকর্মী জেল, জুলুম এবং নির্যাতনের
বণিক বার্তা
পুরনো বন্দোবস্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ১ জুলাই দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সাধারণত এদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা থাকেন উৎসবমুখর। কিন্তু গত বছর দিনটিতে শিক্ষার্থীদের মনে ছিল চাপা ক্ষোভ। কেননা ২০২৪ সালের ৫ জুন সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে সর্বোচ্চ আদালত কোটা বহালের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ রায়কে কেন্দ্র করেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বদলে টিএসসি এলাকায় জমায়েত হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর একটি মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে, নীলক্ষেত-সায়েন্স ল্যাব ঘুরে শাহবাগে সমাবেশে মিলিত হয়। ওই সমাবেশে ঘোষিত চার দফার মধ্যে কোটা প্রথার বাইরে সবচেয়ে জোরালো দাবি ছিল ‘দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে’।
এক বছর আগের এই দিনে তরুণ শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে যে স্লোগান উঠেছিল, সেটিই পরবর্তী ৩৬ দিনে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার পতন ঘটায়, যে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে প্রাণ হারিয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ। হাত, পা, চোখ হারানোসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ হাজার ছাত্র-জনতা। এ আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে গত বছরের ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে এ তরুণ সেদিন বলেছিলেন, ‘মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা দাবির সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এক দফাটি হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এ সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদের বিলোপ।’ জাতিকে আশার আলো দেখিয়ে নাহিদ ইসলামের ঘোষণা ছিল, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে চাই, যেখানে আর কখনো কোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্র-ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে।’
তরুণদের নেতৃত্বে ‘মার্চ টু ঢাকা’ ও গণভবন ঘেরাও কর্মসূচির মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বছর ঘুরে আবারো ফিরে এল জুলাই। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে তরুণরা গুলির মুখে দাঁড়িয়েছিলেন, গত এক বছরে তার কতটা বাস্তবায়ন হলো সেটি নিয়ে খোদ আন্দোলনকারীদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। বৈষম্য ও অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে তরুণরা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই গত এক বছরে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। এমনকি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী তরুণরা নানা গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্তও হয়ে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও এখনো বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা পুরনো বন্দোবস্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে আঁকড়ে থাকা ঘুস, দুর্নীতি ও আমলাতন্ত্রেরও অবসান হয়নি। শেখ হাসিনার দিয়ে যাওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট শেষ দিন পর্যন্ত টেনে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট ঘোষণা করেছে, সেটাও আগের সরকারের মতো গতানুগতিক বলে সমালোচনা রয়েছে। বাজেট প্রণয়নসহ অর্থনীতির নীতি কৌশল প্রণয়নে এখনো প্রাধান্য পাচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপিয়ে দেয়া শর্ত। এ শর্ত পূরণ করতে গিয়ে দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বেকারত্ব, বৈষম্য ও দারিদ্র্য আরো জেঁকে বসছে। আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়ার জন্য পতিত হাসিনা সরকারই বাছবিচার ছাড়া এসব শর্ত মেনে নিয়েছিল।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের একজন আখতার হোসেন। বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব পদে থাকা এ তরুণ রাজনৈতিক নেতা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী এক বছরে অর্জন আছে, তবে প্রত্যাশার এখনো অনেক বাকি। আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। নতুন রাজনৈতিক কাঠামো, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলেছিলাম। কিন্তু বৈষম্যহীন বাংলাদেশ এখনো অর্জিত হয়নি। নতুন বন্দোবস্তের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার নানা সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছে। যেগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।’
মানবজমিন
এক বছরেও হয়নি শহীদ ও আহতদের চূড়ান্ত তালিকা
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, চব্বিশের এই দিনেই সূচনা হয়েছিল রক্তাক্ত এক বিপ্লবের। অপ্রতিরোধ্য তারুণ্যের প্রতিবাদী শক্তি উপড়ে ফেলেছিল চরম ফ্যাসিবাদী শাসনের মসনদ। প্রবল গণ-অভ্যুত্থানে স্বাধীন দেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো শাসক বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের ঝড় এলোমেলো করে দেয় দেশের রাজনীতির মাঠ। ফ্যাসিবাদী শাসন উৎখাতের এই আন্দোলনে জীবন দিতে হয়েছে হাজারো মানুষকে। কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর বেপরোয়া বুলেটে আহত হন ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
আওয়ামী লীগের পোষ্য ক্যাডার বাহিনীর আক্রমণেও হতাহত হয়েছেন অনেকে। জুলাই-আগস্টের এই গণ- অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদ ও আহতদের তালিকা করার উদ্যোগ নেয়। আহতদের চিকিৎসা ও শহীদ পরিবারকে সহায়তার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু গণ- অভ্যুত্থানের সূচনার এক বছর সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয়নি। হয়নি আহতদেরও সঠিক তালিকা। এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন অনেক জুলাই যোদ্ধা। তাদের কেউ কেউ আবার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পাওয়ারও অভিযোগ করে আসছেন।
জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে এখন পর্যন্ত তাদের তালিকায় আহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৯৩ জন। আর নিহত ৮৫৪ জন। কিন্তু এই হিসাবের বাইরে আরও হাজারখানেক আহত রয়েছেন। নিহতদের তালিকায়ও উঠে আসেনি সবার নাম। বেওয়ারিশ হিসাবে ঢাকার বিভিন্ন কবরস্থানে অনেক শহীদের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তাদের অনেকের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। পূর্ণাঙ্গ তালিকা কবে হবে তারও কোনো ঠিক নাই। ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, কিছুদিনের মধ্যে আরও কয়েকজন শহীদের নাম গেজেট আকারে প্রকাশ করে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ সহকারী বাবুল মানবজমিনকে বলেন, জুলাই-আগস্টে নিহত ৬ জনের মরদেহ এখনো মর্গে পড়ে আছে। দীর্ঘদিন থেকে এই মরদেহগুলোর কোনো সুরাহা হয়নি।
জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের গণ-অভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের দলনেতা মো. মশিউর রহমান (যুগ্ম সচিব) মানবজমিনকে বলেন, জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনো প্রস্তুত করা হয়নি। আন্দোলনে শহীদদের তালিকায় কিছু নাম অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। অতি সম্প্রতি একটি গেজেটের মাধ্যমে ১৫ থেকে ২০ জনের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ছাড়াও আহতদের তালিকা চূড়ান্তকরণে কিছুটা সময় লাগবে। যেহেতু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস সার্ভারে নতুন করে নাম এন্ট্রি বন্ধ আছে, আবার অনেক আবেদন এমআইএস সার্ভারে পেন্ডিং অবস্থায় আছে। সবমিলিয়ে উচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত হবে যে নতুন করে আহতদের নাম নিবেন কিনা। জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের মাসিক ভাতা দেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এখানে অনেক সংখ্যক লোকদের জন্য ভাতা দেয়ার সিস্টেম চালু হচ্ছে। সুতরাং আমাদের আরেকটু সময় নিতে হবে। জুলাই মাস থেকেই ভাতা দেয়া শুরু না হলেও, যাদের ভাতা দেয়া হবে তাদেরকে জুলাই থেকেই কাউন্ট করা হবে। তবে আগস্ট থেকে ভাতা দেয়া শুরু হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদেরকে ২ মাসের ভাতা অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের ভাতা একসঙ্গে দেয়া হবে।
যুগান্তর
আবু সাঈদ হত্যার নির্দেশদাতা হাসিনা
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এ হত্যাকাণ্ডের প্রধান নির্দেশদাতা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর মামলার এজহারভুক্ত প্রধান আসামি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদ বাচ্চুসহ চারজন ঊর্ধ্বতন অবস্থানে থেকে যৌথভাবে আবু সাঈদকে হত্যার নির্দেশনা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এএসআই আমীর হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য সদস্যদের মাধ্যমে গুলি চালিয়ে আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়।
এ সময় কমপক্ষে চারজন আন্দোলনকারী আহত হন। এছাড়া অন্য ২৬ আসামি তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে এ হত্যাকাণ্ড, আক্রমণ ও নির্যাতনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ ও সহায়তা করেন। হত্যাকাণ্ড ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পরিবর্তনে বাধ্য করেন আসামিরা।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগে (ফরমাল চার্জ সংক্রান্ত প্রতিবেদন) উঠে এসেছে এসব তথ্য। সোমবার অভিযোগটি ট্রাইব্যুনাল-২-এ দাখিল করা হয়। শুনানি শেষে সেটি আমলে আনেন আদালত। এছাড়া বেরোবির সাবেক উপাচার্যসহ পলাতক ২৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে লেথাল উইপন (মারাত্মক মারণাস্ত্র) ব্যবহার করা হয়েছে। প্রথমে শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিয়েছেন পুলিশের আইজিপিকে, আইজিপির মাধ্যমে পুলিশের সব কমান্ডিং-অধস্তন যত কমান্ড আছে, তাদের কাছে গেছে। সেখানে বলা হয়েছে প্রাণঘাতী অস্ত্র বা লেথাল উইপন ব্যবহার করে ছাত্রদের হত্যা করার জন্য। সেই নির্দেশের ধারাবাহিকতায় আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়েছে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আবু সাঈদ ১৬ জুলাই হাতে একটি মাত্র লাঠি নিয়ে আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। সেদিন সাঈদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে গুলি করার ভিডিও সংবাদমাধ্যমে প্রচার হলে ছাত্র-জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
সেদিন থেকেই সারা দেশে তীব্র গতিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন থেকে সারা দেশে ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করা হয়। এর ধারাবাহিকতার পরিণতিতে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়। পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকালে ট্রাইব্যুনাল-২-এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে ৩০ জনকে আসামি করা হয়। এতে সাক্ষী করা হয়েছে ৪৬ জনকে। সঙ্গে জব্দতালিকা, ভিডিও, অডিও, পত্রিকা, বই, প্রতিবেদন ও সিসিটিভি ফুটেজ জমা দেওয়া হয়। শুনানি শেষে আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। মামলার ৩০ আসামির মধ্যে পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
কালের কণ্ঠ
দ্রব্যমূল্যে হাঁসফাঁস মানুষের
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ঈদের পর থেকে চালসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন। গত এক মাসে সব ধরনের চাল, আলু, দেশি পেঁয়াজ, টমেটো, বেগুন, করলা ও সোনালি মুরগি—এই সাত পণ্যের দাম খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৩৩ শতাংশ বেড়েছে। পণ্যের দাম নতুন করে বাড়লেও আয় না বাড়ায় ক্রেতা অসহায়। কিনতে গিয়ে পকেটের বারোটা বেজে যাচ্ছে তাদের।
কোনো কারণ ছাড়াই নতুন করে চালের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে মিনিকেট হিসেবে পরিচিত সরু চালের দাম খুচরায় কেজিতে এক লাফে ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। এটি মূল্যস্ফীতিকে নতুন করে উসকে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।
মোটা চালের দামও কেজিতে নতুন করে তিন থেকে পাঁচ টাকা বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। এতে ভোক্তাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, গত দুই সপ্তাহে মিল পর্যায়ে মিনিকেট চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এর প্রভাবে খুচরা ও পাইকারিতেও দাম বেড়েছে।
চালকল মালিকদের দাবি, বাজারে মিনিকেট চালের ধানের সংকটের কারণে বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারের মজুদ নীতিমালার তোয়াক্কা না করে অসাধু মজুদদার ও করপোরেট চাল ব্যবসায়ীরা বেশি পরিমাণে ধান কিনে মজুদ করে রেখেছেন। কৃষকের ধান সাধারণ মিলারদের হাতে নেই বললেই চলে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। তাঁরা বলছেন, বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সক্রিয়তা ধারাবাহিক নয়।
কালবেলা
দুদকের জালে তানভীরসহ ৩৬ প্রেস মালিক
কালবেলার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপায় ৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বহিষ্কৃত নেতা গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরসহ ৩৬ প্রেস মালিকের বিষয়ে তথ্য চেয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। তবে পুরো কেনাকাটা ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত এনসিটিবির সাবেক চেয়ারম্যান, সচিব, সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) এবং বিতরণ ও উৎপাদন নিয়ন্ত্রকসহ পাঁচজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। এদিকে, দুদকের এমন উদ্যোগের পর মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এনসিটিবির একটি সূত্র বলছে, গত ২৪ জুন বই ছাপায় নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার, দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, অতিরিক্ত বই ছাপিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এবং শুল্কমুক্ত কাগজ আমদানির নামে ৩৩ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুদক। তারা অনুসন্ধানের জন্য ছয় ধরনের তথ্য চেয়ে এনসিটিবিকে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে দরপত্রের কার্যাদেশ, চুক্তিপত্র, বই গ্রহণ, প্রিন্টার্সদের সঙ্গে চুক্তির পরও তৃতীয় কোনো পক্ষের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে কি না—এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র, মুদ্রণকারীদের বিল পরিশোধ, আমদানিকৃত মুদ্রণ কাগজের পোর্ট ডেমারেজ, নিম্নমানের পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ এবং ৩৬টি প্রেস মালিকদের গত ১০ বছরের কাজের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে। এরই মধ্যে এনসিটিবি এসব তথ্য দুদকে পাঠিয়েছে।
দুদকের সেই চিঠির সূত্র ধরে কালবেলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুদক ছয় ধরনের তথ্য চাইলেও মূলত তদন্ত করছে বই ছাপানোর জন্য প্রিন্টার্সদের সঙ্গে চুক্তির পরও তৃতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে ১০ হাজার টন কাগজ আমদানি করার বিষয়টি। এজন্য এনসিটিবির কাছে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র এবং চুক্তিপত্র হয়ে থাকলে সেসবের রেকর্ড চাওয়া হয়েছে। চুক্তির মাধ্যমে আলোচিত এনসিপি নেতা গাজী সালাহউদ্দিন তানভীর ৩৩ কোটি টাকা কমিশন বাণিজ্য করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার পর তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি করার সুযোগ না থাকলেও এনসিটিবি সেটি করেছে বলে জানিয়েছে দুদক।
এনসিটিবির বিতরণ শাখার কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে কালবেলা। তারা জানিয়েছেন, চলতি বছরের বই ছাপায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। এর মধ্যে বড় দুর্নীতি ছিল ২৮ শতাংশ শুল্ক মওকুফে ১০ হাজার টন কাগজ ও আর্টকার্ড আমদানিতে। এতে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া বাজারে কাগজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ১ লাখ ৫ হাজার টাকার কাগজ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে। এ সংকটের সুযোগে নির্ধারিত কিছু পেপার মিল থেকে কাগজ কিনতে বাধ্য করা হয় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এতে গড়ে টনপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা কমিশন বাণিজ্য করে চক্রটি। এই চক্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন এনসিপির সমালোচিত নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীর। তাকে দাপ্তরিক সহযোগিতা করেন এনসিটিবির তৎকালীন চেয়ারম্যান এ কে এম রিয়াজুল হাসান, সচিব শাহ মুহাম্মদ ফিরোজ আল ফেরদৌস, সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) রিয়াদ চৌধুরী এবং বিতরণ ও উৎপাদন নিয়ন্ত্রক।
প্রথম আলো
বাদীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়নি, ৪ আসামির রিমান্ড আবেদন
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হওয়ার পরদিনই ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভুক্তভোগীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগমুহূর্তে তিনি ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে অস্বীকৃতি জানান। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা ছাড়াই তাঁকে মুরাদনগরে ফিরিয়ে আনা হয়। গতকাল সোমবার পর্যন্ত সেই পরীক্ষা হয়নি।
আইনজীবীরা বলছেন, ধর্ষণের প্রমাণ অনেকাংশে ডাক্তারি পরীক্ষার ওপর নির্ভরশীল। ভুক্তভোগী যদি ডাক্তারি পরীক্ষা না করেন, তাহলে মামলাটি বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্যে গেলে ঘটনা প্রমাণ করা খুবই কষ্টকর হবে। পুলিশের ভাষ্য, আইন অনুযায়ী নির্যাতনের শিকার নারী ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে না চাইলে বাধ্য করার সুযোগ নেই।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মুরাদনগর উপজেলার একটি গ্রামে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলী নামের এক ব্যক্তি আটক ও পিটুনির শিকার হন। এ সময় ভুক্তভোগী নারীকেও বিবস্ত্র অবস্থায় মারধর করেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক, যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে
সমালোচনার ঝড় ওঠে। ধর্ষণ এবং বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হাত-পা ভেঙে ফেলার কারণে ফজর আলী বর্তমানে পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিজের ইচ্ছা ও পরিবারের সিদ্ধান্তেই ডাক্তারি পরীক্ষা করাননি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেউ আমারে চাপ দিসে না। নিজেই ডাক্তারি পরীক্ষা করাইসি না। আমরার ঘরের লোকেরা নিজেরার সিদ্ধান্তে এইডা করছি। পুলিশে আমারে লইয়্যা গেছিলো, মেডিকেলে যাওনের পর নিজেরা সিদ্ধান্ত লইছি পরীক্ষা করাইতাম না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগীর এক স্বজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার মেয়েটির স্বামী এসব ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। এরই মধ্যে কয়েকবার ভুক্তভোগী মেয়েটিকে বলেছে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। দুই সন্তানের জননী মেয়েটিও অনেক আতঙ্কে আছে নিজের সংসার টেকানো নিয়ে। তার স্বামী বলেছে এসব পরীক্ষার কোনো দরকার নেই। মেয়েটি নিজের সংসারটা যেন টিকে থাকে, এ জন্য স্বামী যা বলে, সেটাই বলছে।’