বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
রূপপুর চালু হলে বিদ্যুতে ভারতনির্ভরতা কমবে বাংলাদেশের

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৯

বাংলাদেশের খবর
পিঠ বাঁচাতে দৌড়ঝাঁপ
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আন্দোলনে নামা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের ওপর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ জোরালো করেছে সরকার। এরই মধ্যে পাঁচ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। আরও জ্যেষ্ঠ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু। এমন অবস্থায় দৌড়ের ওপর আছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। যে যেভাবে পারছেন পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন; নির্দোষ দাবি করে কান্নাকাটি করছেন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে। অথচ সপ্তাহখানেক আগেও তারা ছিলেন দাপুটে। একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, 'একদিনে তো আমরা কমপ্লিট শাটডাউনে যাইনি। সেটা ছিল আমাদের অসহায়ত্বের প্রতিবাদ। কিন্তু এখন যেভাবে টার্গেট করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাতে এনবিআর ব্যবস্থাপনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার
করেছি। কিন্তু সরকার যে অবস্থানে (কঠোর) গেছে সেটা হওয়ার কথা ছিল না। কখন কার চাকরি যায়, কী ব্যবস্থা হয় সেটা নিয়ে আমরা সারাক্ষণ আতঙ্কে আছি। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সরে এসেছি। সরকারেরও উচিত নমনীয় হওয়া।' এদিকে, আন্দোলন প্রত্যাহারের এখনো সপ্তাহ পার হয়নি। সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে রাজস্ব প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আন্দোলন-সমঝোতায় যুক্ত থাকা ব্যবসায়ী নেতারাও বিব্রত হচ্ছেন।
সরকার গত দুদিনে এনবিআরের এক কমিশনার ও চার সদস্যকে শাস্তির আওতায় এনেছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার জাকির হোসেনকে (১ জুলাই) বরখাস্ত করা হয়েছে 'সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শুল্ক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার' অভিযোগে। পরদিন (২ জুলাই) অবসরে পাঠানো হয় এনবিআরের চার সদস্য-ড. মো. আবদুর রউফ (মুসক নীতি), হোসেন আহমদ (শুল্ক নীতি ও আইসিটি), আলমগীর হোসেন (কর) এবং বরিশাল কর অঞ্চলের কমিশনার শাব্বির আহমেদকে।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) থেকে পৃথক চারটি আদেশে বলা হয়েছে, "সংশ্লিষ্টদের চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় 'জনস্বার্থে' তাদের 'সরকারি চাকরি আইন ২০১৮'-এর ৪৫ ধারায় অবসরে পাঠানো হলো। তারা অবসরকালীন সব সুবিধা পাবেন।"
নতুন করে এনবিআরের পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এর আগে আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ-ঘুষের বিনিময়ে কর ফাঁকির সুযোগ করে দেওয়া, অতিরিক্ত কর ফেরত দিতে বিলম্ব ঘটানো ও অবৈধ সম্পদ অর্জন, এসব তদন্তের মূল বিষয়বস্তু।
বণিক বার্তা
রূপপুর চালু হলে বিদ্যুতে ভারতনির্ভরতা কমবে বাংলাদেশের
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালুর প্রায় দ্বারপ্রান্তে। রাশিয়ার সহায়তায় নির্মিত এ কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ চালু হলে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে, যা দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে যোগ করবে নতুন মাত্রা। শুরুতে উৎপাদনে আসবে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার প্রথম ইউনিট। প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়ন কেবল সরবরাহই বাড়াবে না, বরং বিদ্যুৎ আমদানিতে কমিয়ে আনবে ভারতনির্ভরতা। সেই সঙ্গে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর অতিনির্ভরতা কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন এ খাতের বিশেষজ্ঞরা।
দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা সাড়ে ১৫ হাজার থেকে সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। আর এ সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বড় নির্ভরতা রয়েছে ভারতের ওপর। প্রতিবেশী দেশটি থেকে ২ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি রয়েছে, যা দেশের মোট চাহিদার ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর এ বিদ্যুতের বড় অংশই জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। তবে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার রূপপুরের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা গেলে ভারত থেকে আমদানি বিদ্যুতের ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার খোজিন চলতি বছরের মধ্যেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আনার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে এলে আমাদের গ্রিডে বড় ধরনের সক্ষমতা যুক্ত হবে। শুরুতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট যুক্ত হলেও পরবর্তী সময়ে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট হবে। এটা বিরাট সক্ষমতা। এ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার পর বিপিডিবি যদি উত্তরাঞ্চলে ব্যবহার করে তাহলে দুটো বিষয় দেখা যেতে পারে—প্রথমত, ওই অঞ্চলে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে বড় অংশ সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে আমদানিনির্ভরতার বিকল্প উৎস তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে আদানি কিংবা জিটুজির বিদ্যুৎ বিকল্প অপশন হবে। দ্বিতীয়ত, জ্বালানি তেলের পরিবর্তে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর প্রবল যে চাপ রয়েছে তা কমে আসবে।’
মানবজমিন
জুলাই অভ্যুত্থানে স্বামীর মৃত্যু, দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত মা
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ছোট্ট দুই সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিন চলছে। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে যুদ্ধ করছি। আমার জীবনে তখন থেকে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। আমার সুখের সংসার শেষ হয়ে গেছে। বড় ছেলে সারাক্ষণ ওর বাবার জন্য কাঁদে। মেয়েটা তো তখন আমার গর্ভে ছিল। এখন নিজেদের অসহায় মনে হয়। আমাদের খবর কেউ রাখছে না। সবাই ব্যস্ত সবার সুবিধা ভোগে। কী হবে আমার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ? এভাবে কথাগুলো বলছিলেন ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে ১৯শে জুলাই গুলিতে শহীদ হওয়া ইমনের স্ত্রী মুলসুমা আক্তার লাকি। অভাব-অনটনে সংসার চালাতে না পেরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নিয়েছেন তিনি। ছোট্ট দুই সন্তান ও শাশুড়িকে নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। গণ-অভ্যুত্থানের পরে সরকারি-বেসরকারি সহায়তাও পাননি যথাযথ।
শহীদ ইমনের স্ত্রী মুলসুমা মানবজমিনকে বলেন, ১৯শে জুলাই তার মৃত্যুর এক বছর হবে। আমার দুই সন্তান নিয়ে যুদ্ধ থামছে না। যাদের অনেক কষ্ট তাদের খবর না রেখে সবাই ব্যস্ত নিজেদের সুবিধা নিতে। অর্থের অভাবে দুই-তিন মাসের ঘর ভাড়া আটকে যায়। সন্তানদের যত্ন ঠিকভাবে নিতে না পারায় তারা কিছুদিন পর পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওদের রেখে আমাকে কাজে চলে যেতে হয়। আমি খুব সুখেই ছিলাম, যেদিন থেকে আমার স্বামী মারা গেছে সেদিন থেকে আমার জীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় সন্তান পৃথিবীতে আসে। সে তার বাবাকে কোনোদিনও দেখতে পারবে না। আমার অবুঝ বাচ্চাদের বাবা হত্যার বিচার চাই। একজন নারীর স্বামী মারা গেলে শুধু সেই বুঝে কতো ঝড় তার ওপর দিয়ে যায়। এত অল্প বয়সে আমার সন্তানরা তাদের বাবাকে ও আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি। আমার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে। দুই সন্তানকে তো বাঁচিয়ে রাখতে হবে। মা হিসেবে তো সন্তানদের কষ্ট সহ্য করতে পারি না। রায়েরবাগ থেকে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জে গিয়ে কাজ করতে হয়।
তিনি বলেন, স্বামী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ছিল আমার সংসার। ছয় বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। ছিল ভিটে-বাড়িহীন অভাবের সংসার। ভাগ্য পরিবর্তনে দু’জনে কিশোরগঞ্জ থেকে চলে আসি ঢাকায়। পোশাক কারখানায় চাকরি নেই। ভাগ্যের চাকা কিছুটা পরিবর্তন হলেও আমার সুখের সংসারে নেমে এসেছে অন্ধকার। সে যখন মারা যান তখন আমি সন্তানসম্ভবা ছিলাম। এ বছরের মার্চে আমার কোলজুড়ে আসে এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান। এই শিশু সন্তানকে রেখে আমি আবার কাজে যোগ দেই।
মুলসুমা বলেন, আমার দুই সন্তান নিয়ে কোথায় থাকবো? কীভাবে পড়াশোনা করাবো সন্তানদের। এসব চিন্তায় দিশাহারা হয়ে পড়ছি। সরকারি-বেসরকারিভাবে অল্প কিছু সহযোগিতা পেয়েছি। কাগজপত্র অনেক জায়গায় জমা দিয়েছি। যে টাকা পেয়েছি সে টাকা দিয়ে এতদিন চলেছি। বর্তমানে অনেক ধার-দেনা করে চলতে হচ্ছে। ওদের বাবা মারা যাওয়ার পর কিশোরগঞ্জে চলে গিয়েছিলাম কিন্তু সেখানেও ভিটে-বাড়ি নেই। আমার শ্বশুর অনেক আগে মারা যান। শাশুড়ি মাটি কাটার কাজ করতেন এখন কিছু করতে পারেন না। ১৩ হাজার টাকা বেতন পাই এখানে। বাসা ভাড়া দিতে হয় ৫ হাজার টাকা। আমি না খেয়ে থাকতে পারি কিন্তু ছোট সন্তান ও বয়স্ক মানুষকে তো না খাইয়ে রাখতে পারি না। ভেবেছিলাম দু’জনে কাজ করে একটু ভিটে-বাড়ি করবো কিন্তু স্বপ্ন দেখার আগেই আমার স্বপ্ন শেষ। ছেলেটাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছিলাম কিন্তু এখন আর পাঠাতে পারি না সেখানে। একদিকে আর্থিক সমস্যা অন্যদিকে আমি বাসায় না থাকলে তাকে কে দেখবে।
যুগান্তর
আসন সমঝোতার নিশ্চয়তা চায় মিত্র দলগুলো
যুগান্তরের প্রথম বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত নয়। তবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনি সময়সীমা টার্গেট করে প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। সে লক্ষ্যে আসনভিত্তিক এলাকায় মাঠেও নেমেছেন নেতারা। তবে বিগত সময়ে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্র দল ও জোটনেতাদের অনেকেই নিজের আসন নিয়ে দোদুল্যমান অবস্থায় পড়েছেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা থাকলেও নির্বাচনি আসন নিয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তায় তারা। এজন্য এখনই বিএনপির কাছ থেকে ‘আসন সমঝোতার’ নিশ্চয়তা চায় মিত্ররা। অন্ততপক্ষে মৌখিক আশ্বাস পেলেও নির্বাচনি আসনে তারা কাজ শুরু করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মিত্র দলগুলোর একাধিক শীর্ষ নেতা।
যদিও বিএনপি রাজনৈতিক মাঠে পরীক্ষিত মিত্র দলগুলোকে সঙ্গে নিয়েই নির্বাচনি বৈতরণি পার হতে চায়। সেক্ষেত্রে সমঝোতার ভিত্তিতে ঢাকাসহ সারা দেশে বেশকিছু আসন ছাড় দেওয়ার চিন্তা করছে দলটি। আর যুগপৎ আন্দোলনের নেতারা চান ‘সম্মানজনক’ আসন। পাশাপাশি উচ্চকক্ষ কিংবা ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সরকারেও থাকতে চান। এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে মিত্রদের আসন নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে অনেকটাই নীরবে। বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে মিত্রদের চলমান ধারাবাহিক বৈঠকেও এ বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার পর হতে পারে আসন ভাগাভাগি। নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হলে তো এই প্রক্রিয়া হবে। আমরা সে জায়গায় এখনো আসিনি। যখনই নির্বাচনি কার্যক্রম, তফশিল ঘোষণা হবে-এ বিষয়গুলো উঠে আসবে। সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হবে।
প্রথম আলো
বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, আছে করোনাও
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, সাত দিন আগে তীব্র জ্বর, গায়ে ব্যথা ছিল নারায়ণগঞ্জের আমেনা বেগমের (৪৮)। ওষুধে জ্বর কমছিল না। পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। রক্তের প্লাটিলেট কমে ৪০ হাজারে নেমে এলে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ১ জুলাই থেকে তিনি মহাখালীতে অবস্থিত উত্তর সিটি করপোরেশন পরিচালিত ডিএনসিসি কোভিড–১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালের পঞ্চম তলায় অবস্থিত আইসিইউর সামনে গিয়ে দেখা হয় আমেনা বেগমের ছেলে অর্ণব মোহাম্মদের সঙ্গে। অর্ণব জানান, ভর্তির পরদিন তাঁর মায়ের প্লাটিলেট আরও কমে ১৮ হাজারে নেমে আসে। মাকে দেখভালের জন্য চার দিন ধরে তিনি ও তাঁর বাবা মো. সালাউদ্দিন হাসপাতালে রয়েছেন। রাতে বারান্দায় মাদুর পেতে ঘুমান।
আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে জান্নাতুল (১৭) নামের একটি মেয়ে। পরিবারের সদস্যরা তার জন্য রক্ত জোগাড় করছিলেন। জান্নাতুলের মা আমেনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শেখেরটেকে থাকেন। ১০ জুন মেয়েকে নিয়ে তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ২৭ জুন সেখানে মেয়ের প্রচণ্ড জ্বর হলে তিনি পরদিন জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। পরীক্ষায় জান্নাতুলের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। তিনি বলেন, ওই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ছিলেন অনেক বেশি। চিকিৎসকের পরামর্শে ৩০ জুন তিনি ঢাকায় এসে ডিএনসিসি কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করেন। মেয়েকে রক্ত দেওয়া হয়েছে এক ব্যাগ। শুক্রবারের রিপোর্টে প্লাটিলেট কমে ৬ হাজারে নেমে আসায় চিকিৎসক আরও রক্ত দিতে হবে জানিয়েছেন।
হাসপাতালটির আইসিইউতে গতকাল ১৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে আমেনা বেগম, জান্নাতুলসহ ডেঙ্গু রোগী ৬ জন। হাসপাতালে গতকাল দুপুরে ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা করপোরাল মো. মিয়ারুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে এখন আইসিইউ ও ওয়ার্ড মিলিয়ে ১৩১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ডেঙ্গু রোগী ২৬ জন, কোভিড রোগী ১৯ জন এবং অন্যান্য রোগী ৮৬ জন। এই হাসপাতালে চিকুনগুনিয়া শনাক্তের আলাদা ব্যবস্থা নেই। উপসর্গ থেকে তাঁরা ধারণা করছেন, কিছু রোগী চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। তাঁদের অন্যান্য রোগীর সঙ্গে রাখা হয়েছে।
রাজধানীসহ সারা দেশে এখন জ্বর, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও করোনার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। জ্বর হলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এখন ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেশি। আগামী দুই মাসে এই রোগ আরও বাড়তে পারে।
নয়া দিগন্ত
ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে ৭৫ কোটি টাকা ঘুষ নেন আনিসুল
নয়া দিগন্তের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে ৪০ দফায় তিনি ৭৫ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। তদবির বাণিজ্যে অংশ নিয়ে আনিসুল হক আত্মীয়দের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে মোটা অঙ্কের এ ঘুষ গ্রহণ করেন।
সম্প্রতি আদালতে ফ্রিজ হওয়া তার ব্যাংক হিসাবের সন্ধান করতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আনিসুল হক সংশ্লিষ্ট ২৭টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আদেশ দেন আদালত। তার মধ্যে আনিসুলের নামে রয়েছে ১৭টি হিসাব। এর বাইরে আনিসুল হকের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও ভাতিজাসহ কয়েকজনের নামে আরো ১০টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে বলে জানা যায়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আনিসুল হক ঘুষ বা অবৈধ আয় গ্রহণে তার ব্যবসায়িক বন্ধু, মা, ভাইয়ের স্ত্রী, ভাগিনা ও কথিত বান্ধবী তৌফিকা করিমের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করেছেন। আবার ওই ব্যাংক হিসাবগুলোর একমাত্র নমিনি ছিলেন তিনি। মায়ের ক্ষেত্রে নমিনি হওয়ার যৌক্তিক কারণ থাকলেও অন্যদের ব্যাংক হিসাবগুলোর নমিনিতে তার নাম থাকার বিষয়টি সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। ইতোমধ্যে ঘনিষ্ঠদের ব্যাংক হিসাবগুলোর বিবরণী দুদকে জমা হয়েছে।
সূত্র জানায়, একমাত্র নমিনি হিসেবে আনিসুল হকের নাম থাকা ঘনিষ্ঠ পাঁচজনের অ্যাকাউন্টে ওই সময়ে ৭৫ কোটি ২২ লাখ টাকা নগদ বা ক্যাশ হিসাবে জমা হয়। এই বিপুল টাকা কোনো ব্যাংক হিসাব থেকে তাদের হিসাবে স্থানান্তর হয়নি। সরাসরি জমা হয়েছে, যা থেকে মূলত সন্দেহ তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অর্থের উৎস গোপন করতেই এমন কৌশল নেয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আনিসুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। ফ্রিজ করা হয়েছে ২৭টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ১৪০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। মামলা হয়েছে তার কথিত বান্ধবী তৌফিকা আফতাব ওরফে তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধেও। তার বিরুদ্ধে ৫৬ কোটি ৬১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা হয়েছে।
কালের কণ্ঠ
মব সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ দেশ
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, অনেকের কাছে সেদিন শুভ সকাল হলেও এই পরিবারের তিনজনের কাছে সকালটি ছিল অশুভ। কে জানত গ্রামের একদল লোক তাঁদের পিটিয়ে মৃত্যুপথের যাত্রী হিসেবে পাঠিয়ে দেবে এই জগৎ থেকে। গত বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়িতে মা এবং তাঁর ছেলে ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মোবাইল ফোন চুরির জেরে প্রকাশ্য পিটুনিতে প্রাণ হারান খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৮) এবং মেয়ে জোনাকী আক্তার (৩২)।
নিহত রাসেল মিয়ার স্ত্রী মীম আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এমন ঘটনা শোনার পরও আমি বিশ্বাস করতে পারিনি মানুষ মানুষকে এভাবে পিটিয়ে মারতে পারে।’ ঘটনার পর কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) নাজির আহমেদ খান বলেছিলেন, কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তাকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করার কথা। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
গত রবিবার ভোরে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড কারখানায় ১৯ বছরের যুবক শ্রমিক হৃদয়ের জীবনপ্রদীপ নিভেছে পিটুনিতে। চুরির অপবাদ দিয়ে তাঁকে রশি দিয়ে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। থানায় হত্যা মামলার পর চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শুকতার বাইদ গ্রামের আবুল কালামের ছেলে হৃদয় কারখানায় মেকানিক্যাল মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
হত্যা করলেই মিলত টাকা
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বিগত সরকারের আমলে বিরোধী মত দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়। তাঁদের দিয়ে ঘটানো হয় গুম, খুন ও ভুক্তভোগীদের বছরের পর বছর আটকে রেখে নির্যাতনের মতো ঘটনা। অপহৃত ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে তাঁকে হত্যা করা হতো। সেই হত্যায় জড়িত থাকলে মিলত টাকা। অস্বীকার করলে পড়তে হতো বিপদে। তবু বাহিনীর অনেক সদস্য বিপদ জেনেও গোপনে বন্দিদের সাহায্য করার চেষ্টা করতেন। নির্দেশদাতা চলে গেলে বন্দিদের হাতের বাঁধন খুলে দিতেন। গুম কমিশনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সদস্য ও ভুক্তভোগীর দেওয়া সাক্ষ্যে এমন চিত্র সামনে এসেছে। গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তা চাইতেন না তাঁদের সদস্যরা র্যাবে যোগদানের পর খুন-খারাবিতে জড়িয়ে পড়ুক।
তবে কেউ এ অপরাধ করলেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতো না। গুম, খুন, নির্যাতনের মতো অপরাধ প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতির অংশ হিসেবে অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল, যার প্রমাণ মিলেছে উচ্চপদস্থ এক জেনারেলের সাক্ষাৎকারে। তিনি জানান, সেনাবাহিনী থেকে র্যাবে নিয়োজিত কর্মকর্তারা যাতে খুনের মতো অপরাধে জড়িয়ে না পড়েন সেজন্য তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন। এজন্য ব্রিফিং ও ডিব্রিফিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। র্যাবে পদায়নের আগে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হতো। আবার দায়িত্ব শেষে ফেরার পর আলাপ করা হতো। স্পষ্টভাবে সতর্ক করা হতো যেন তাঁরা কোনোভাবেই অসহায় বন্দিদের বেআইনিভাবে হত্যা না করেন। এমন এক ডিব্রিফিং সেশনে একজন জুনিয়র কমকর্তাকে তাঁর ঊর্ধ্বতন জিজ্ঞাসা করেন-এ পর্যন্ত তিনি কাউকে হত্যা করেছেন কি না। করলে কজনকে? কিছুক্ষণ ইতস্তত করার পর ওই কর্মকর্তা স্বীকার করেন, তিনি নিজ হাতে দুজনকে হত্যা করেছেন এবং আরও চারটি হত্যাকা প্রত্যক্ষ করেছেন।
এ ধরনের অভিযানের পর নিয়মিত অর্থ বিতরণ করা হতো। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানতে চান অভিযানের পর প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি কী করেছেন। উত্তরে ওই কর্মকর্তা বলেন, তিনি সেই টাকা নিজ গ্রামে মসজিদে দান করে দিয়েছেন। ওই কাজগুলো করে অনুশোচনায় ভুগছিলেন তিনি। গুম ও হত্যায় জড়িত থাকলে চাকরিজীবনেও মিলত পুরস্কার। উদাহরণস্বরূপ গুম কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-বর্তমানে ব্রিগেডিয়ার পদে অধিষ্ঠিত এক কর্মকর্তাকে (যাঁর বিরুদ্ধে গুমে জড়িত থাকার প্রমাণ কমিশনের হাতে আছে) তৎকালীন র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ‘উদাহরণযোগ্য রেকর্ড’-এর অধিকারী হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। ওই কর্মকর্তার কর্মদক্ষতাকে প্রতিবেদনে ‘খুবই সন্তোষজনক’ হিসেবে উল্লেখ এবং তাঁর নেতৃত্বকে ‘উচ্চমানের’ বলে প্রশংসা করা হয়। একই সঙ্গে তাঁকে পেশাগতভাবে ‘অত্যন্ত দক্ষ’, ‘ভদ্র’ ও ‘সৎস্বভাবের’ কর্মকর্তা হিসেবে বর্ণনা করা হয়। প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়, ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক তথ্য পাওয়া যায়নি।