
বাংলাদেশের খবর
পাসের হারে ধস
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হারে ধস নেমেছে। কমেছে জিপিএ-৫ এর সংখ্যাও। এবার মাধ্যমিকে পাস করেছে ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। গত বছর এই হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। পাসের হার কমেছে ১৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ, যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। ফলে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৪৩ হাজার ৯৭ জন। এবারের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৯ লাখ ৪ হাজার ৮৬ শিক্ষার্থী।
তাদের মধ্যে পাস করেছেন ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন। আর গত বছর ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন পাস করেন। গতকাল বেলা ২টায় একযোগে ফল প্রকাশ করে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ড। অন্যান্য বছরের মতো ফল প্রকাশের আগে সরকার প্রধানের হাতে পরিসংখ্যান তুলে দেওয়ার অনুষ্ঠানিকতা এবার ছিল না। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক
প্রথম আলো
তিন কারণে এসএসসির ফল খারাপ
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশের নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে খারাপ হয়েছে। গড় পাসের হার ও ফলাফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ সবই কমেছে। সব পরীক্ষার্থী ফেল করেছে—এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। কমেছে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার মূলত তিনটি কারণে ফল খারাপ হয়েছে। প্রথমত, এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা গত পাঁচ বছরের শিক্ষাজীবনে করোনা মহামারিসহ নানা কারণে বিদ্যালয়ে ক্লাস পেয়েছে কম। দ্বিতীয়ত, এবার গণিতে পাসের হার কম। তৃতীয়ত, এবার উত্তরপত্র মূল্যায়নে অন্যান্য বছরের চেয়ে ‘কড়াকড়ি’ ছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এবার নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষা দেয় ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩১০ জন পরীক্ষার্থী। পাস করেছে ১০ লাখ ৬ হাজার ৫৫৪ জন। পাসের হার ৬৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ; যা গতবার ছিল ৮৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এবার গতবারের চেয়ে জিপিএ-৫ কমেছে ৩৮ হাজার ৮২৭। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাখিল এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষার ফলও গতকাল প্রকাশিত হয়েছে। এবার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি। শিক্ষা বোর্ডগুলো আলাদাভাবে ফলাফল প্রকাশ করেছে। তবে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির পক্ষে কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ফলাফলের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। ২০২০ সাল থেকে গতকাল পর্যন্ত প্রকাশিত ফলাফলগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এবার ফল সবচেয়ে খারাপ হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত সব বছরেই পাসের হার ৮০ শতাংশের বেশি ছিল।
পাসের হারে এবার সবচেয়ে পিছিয়ে পড়েছে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড। এই বোর্ডে পাসের হার ৫৬ দশমিক ৩৮। আর পাসের হারে এগিয়ে আছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। এই বোর্ডে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৬৩। এ ছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৭ দশমিক ৫১ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ, যশোরে ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৬৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৫৮ দশমিক ২২ শতাংশ। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ক্লাস পেয়েছে কম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার যারা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়, তারা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরের মোট পাঁচ বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সময় বিদ্যালয়ে ক্লাস পায়নি। এর মধ্যে এ বছরের এসএসসির নিয়মিত পরীক্ষার্থীরা ২০২০ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ওই বছরের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি শুরু হয়েছিল। তখন টানা দেড় বছর ছুটি ছিল। দ্বিতীয় দফায় করোনার কারণে ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সেবারও এক মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।
যুগান্তর
সত্য প্রকাশ করলে ক্ষমা পেতে পারেন মামুন
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন। দোষ স্বীকার করে বলেছেন, তিনি একজন সাক্ষী হিসেবে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে আদালতকে সহায়তা করবেন। এর মাধ্যমে তিনি ‘অ্যাপ্রুভার’ হতে চেয়েছেন।
রাজসাক্ষী হওয়ায় ট্রাইব্যুনালের বিচারে আবদুল্লাহ আল-মামুন কি দায় থেকে মুক্তি পাচ্ছেন, নাকি তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে- এ নিয়ে বিচারপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বক্তব্যের মাধ্যমে পুরোপুরি সত্য প্রকাশিত হলে আদালত তাকে ক্ষমা করতে পারেন। অথবা অন্য কোনো আদেশও দিতে পারেন। ট্রাইব্যুনাল আইনে বলা হয়েছে, ঘটনার মূল হোতা বা সহায়তাকারীকে সেটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত (রাজসাক্ষী) ব্যক্তি সাক্ষ্য গ্রহণে সত্য ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করার শর্তে ক্ষমা পেতে পারেন। তবে শর্ত থাকে যে, বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এরূপ ব্যক্তিকে আটক রাখতে হবে।
তাজুল ইসলাম অ্যাপ্রুভার শব্দের ব্যাখ্যায় বলেন, আইনের ভাষায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ‘অ্যাপ্রুভার’ হয়েছেন। বাংলায় একে ‘রাজসাক্ষী’ বলে। আইনের পরিভাষায় ‘একটি অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত বা সে সম্পর্কে গোপন তথ্যের অধিকারী কোনো ব্যক্তি যদি ক্ষমা পাওয়ার শর্তে অপরাধের সমগ্র ঘটনা, মূল অপরাধী ও সহায়তাকারী হিসাবে জড়িত সব অপরাধী সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ও সত্য ঘটনা প্রকাশ করে আদালতে যে সাক্ষ্য প্রদান করে, তখন তাকে ‘রাজসাক্ষী বলে’।
বণিক বার্তা
গণিত ও ইংরেজির দুর্বলতায় এসএসসিতে বেড়েছে অকৃতকার্য
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় তা ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশীয় পয়েন্ট কমেছে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। জিপিএ ৫-প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে এবার। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ইংরেজি ও গণিতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক ফলাফলে।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল গতকাল প্রকাশ করা হয়। অবশ্য ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে এবার কোনো আনুষ্ঠানিকতাই রাখা হয়নি। শিক্ষা বোর্ডগুলো তাদের ফল প্রকাশ করেছে আলাদাভাবে। এবার পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখের মতো। পাস করেছে ১৩ লাখ এবং অকৃতকার্য হয়েছে ছয় লাখ। জিপিএ ৫-এর সংখ্যাও কমেছে, ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন। আগের বছর জিপিএ ৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
বিষয়ভিত্তিক ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছর শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে গণিত ও ইরেজিতে। এর মধ্যে গণিতে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ, আর ইংরেজিতে ৮৭ দশমিক ২১ শতাংশ। এছাড়া বাংলায় ৯৭ দশমিক ২৭ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞানে ৯৪ দশমিক শূন্য ২, রসায়নে ৯৪ দশমিক ৭৬, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ৯৭ দশমিক ২৯, পৌরনীতিতে ৯৪ ও হিসাববিজ্ঞানে ৯১ দশমিক ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। আবার গণিত ও ইংরেজিতে সবচেয়ে বেশি খারাপ করেছে বরিশাল বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা। এ বোর্ডে ৩৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ গণিতে ও ৩০ দশমিক ৩৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছে।
মানবজমিন
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে একমত দলগুলো
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের জন্য সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে এবং রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতির মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারবেন। এই দু’টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য হয়েছে। বিদ্যমান সংবিধানে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু প্রধান বিচারপতি হিসেবে কর্মে নিযুক্ত জ্যেষ্ঠতম একজন, না কর্মে জ্যেষ্ঠ দুইজনের মধ্যে একজন নিয়োগ হবে, সেই বিষয়ে দুটি মত উপস্থিত আছে। এ বিষয়ে কমিশন আলোচনা অব্যাহত রাখবে। এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে আমরা আরও অনেকটা অগ্রসর হতে পেরেছি। গতকাল রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১১তম দিনের বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে প্রস্তাব এসেছে এবং ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে বিকল্প দুইটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। এই প্রস্তাবের লক্ষ্য ছিল প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ব্যাপারে আইনসভার মধ্য থেকেই প্রস্তাব তৈরি করে নিয়োগের ব্যবস্থা করা। এগুলো নিয়ে আজকে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত পাওয়া গেছে। এ বিষয়টি আরও সুস্পষ্ট করতে টেবিলে আছে এবং আজকের আলোচনার ভিত্তিতে আরও একটি সুস্পষ্ট প্রস্তাব হাজির করবো। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কোনো ভিন্নমত নেই। তবে রাজনৈতিক দলগুলো চাইছেন দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটার প্রতিফলন যেন ঘটে। ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যেন কোনো অবস্থাতেই বিতর্কের মুখে না পড়ে।
জরুরি অবস্থা প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো এখানে দুটো বিষয়ে একমত হয়েছিল। ১৪১ অনুচ্ছেদের ক- জরুরি অবস্থার ঘোষণার বিষয়টি সংশোধন করতে হবে। রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে যেন জরুরি অবস্থা ব্যবহার না হয়। এটাকে আরও স্পষ্ট করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ও কমিশন মনে করে। আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে এবং আশা রাখছি এ মাসের মধ্যেই একটি সনদ প্রস্তুত করতে পারবো।
কালের কণ্ঠ
ভোটের ট্রেনে ওঠার তোড়জোড়
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী ট্রেন ছাড়ার প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। গণতন্ত্রের পথে যাত্রী হতেও প্রস্তুতি নিচ্ছে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। আনন্দ-উৎসাহের সঙ্গে দলবিশেষের কিছুটা দ্বিধাও রয়েছে এই প্রস্তুতির মধ্যে। গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনের বাইরেও সর্বত্র নির্বাচন নিয়ে আলোচনা।
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের দিকেই ভোটগ্রহণ হতে পারে—এই সম্ভাবনা ধরে নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার এই নির্দেশনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি বলেছে, ‘দেশের জনগণ নির্বাচন ও ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছে। কাজেই আমরা মনে করি, নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না।’ জামায়াতে ইসলামী বলেছে, ‘আমরা আগেও বলেছি, নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সব সংস্কার এবং বিচার নিশ্চিত হলে নির্বাচনে আমাদের আপত্তি নেই।’
গতকাল বৃহস্পতিবার জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের কালের কণ্ঠকে এ কথা বলেন। আগামী ১৯ জুলাই জামায়াতে ইসলামী রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ব্যাপক জনসমাগম ও শোডাউনের মাধ্যমে সমাবেশ করতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়েই দলটি দেশবাসীকে নির্বাচনী বার্তা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
সন্ত্রাসীদের রক্ষক যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ৩১ মার্চ, ২০২৪ সাল। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত হয় এযাবৎকালের সেরা ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ‘বেনজীরের ঘরে আলাদিনের চেরাগ’। দুর্নীতিবাজ, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম লাঠিয়াল এবং কসাই সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর। এ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটতন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন।
এ প্রতিবেদন সারা দেশে সাড়া ফেলে। শুরু হয় আওয়ামী লুটতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। এটিই ছিল আওয়ামী লীগ পতনের টার্নিং পয়েন্ট। জুলাই বিপ্লবে এ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের অবদান ছিল অনেক। কিন্তু বেনজীরের দুর্নীতির এ রিপোর্ট প্রকাশের পর আক্রান্ত হয় বসুন্ধরা গ্রুপ। একের পর এক মিথ্যা, ভিত্তিহীন অসত্য মামলা দায়ের হতে থাকে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ওরফে কসাই কামাল নিজেই দায়িত্ব নেন ‘বসুন্ধরা গ্রুপ’কে শায়েস্তা করার। কামাল ও বেনজীরের সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দেওয়া হয় বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে, বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়া হাউসের কণ্ঠরোধ করতে।
একের পর এক হত্যা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসের উদ্ভট, কাল্পনিক মামলা দায়ের করা হতে থাকে। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যখন তৎকালীন সরকারের যেখানে উচিত ছিল বেনজীরের দুর্নীতি, অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, তার বদলে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বসুন্ধরা মিডিয়ার কণ্ঠরোধে উদ্যত হন। মজার ব্যাপার হলো, বসুন্ধরা মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করতে যাদের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যবহার করেন, তারা সবাই ছিলেন চিহ্নিত সন্ত্রাসী, লুটেরা, মাদক ব্যবসায়ী এবং চাঁদাবাজ। এদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাস, হত্যার একাধিক অভিযোগ ছিল। নিজেদের এলাকায় এরা মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ হিসেবে চিহ্নিত। এসব মামলা থেকে স্পষ্টতই বোঝা যায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সরাসরি মদতে এরা তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিল নির্বিঘ্নে, নিরাপদে। মিডিয়ার কণ্ঠরোধে এদেরই ব্যবহার করেন তৎকালীন দুর্নীতিবাজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
- এটিআর