বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
প্রাথমিক থেকেই তৈরি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের গণিত ও ইংরেজির দুর্বলতা

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১০:৩২

প্রথম আলো প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘৭০% মামলার তদন্তে ‘অগ্রগতি’, প্রতিবেদন দিতে চার চ্যালেঞ্জ’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সারা দেশে মামলা হয়েছে ১ হাজার ৬০১টি। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ মামলার তদন্তে ‘সন্তোষজনক অগ্রগতি’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এসব মামলার তদন্ত–তদারকি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে এসব মামলার প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান চার ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
চ্যালেঞ্জগুলো হলো বেশির ভাগ শহীদের ময়নাতদন্ত না হওয়ায় লাশ উত্তোলন করা; মেডিকেল প্রতিবেদনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার কথা উল্লেখ না থাকা বা মৃত্যুর সঠিক কারণ লেখা না থাকা; এজাহারে ঘটনাস্থলের ভুল বর্ণনা এবং মামলায় অনেক ঢালাও আসামি থাকা। এসব কারণে পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দিতে পারছে না বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে।
এর বাইরে ভিডিওর ফরেনসিক প্রতিবেদন একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সেটার জন্যও সময় লাগছে। বেওয়ারিশ হিসেবে অনেকের লাশ দাফন করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত সেসব ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় মামলা ও তদন্ত আরেকটা চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া বিভিন্ন ত্রুটি, পদ্ধতিগত জটিলতা ও ঘটনা সম্পর্কে পরিষ্কার চিত্র না পাওয়ায় ৩০ শতাংশ মামলার তদন্তে তেমন অগ্রগতি নেই বলে জানা গেছে।
সমকাল প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘রামদা হাতে আলোচনায় এসে দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ক্যাম্পাসে রামদা হাতে আলোচনায় এসেছিলেন। পাঁচ মাসের মাথায় নগরীর দৌলতপুরে নিজ বাড়ির সামনে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন। একাধিক গুলির পর তাঁর পায়ের রগও কেটে দেওয়া হয়। নিহতের নাম মাহবুবুর রহমান মোল্লা। শুক্রবার দুপুরে এই হত্যাকাণ্ডের পর খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তারা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ও মিছিল করেন।
নিহত মাহবুবুর রহমান মোল্লা দৌলতপুর থানা যুবদলের সহসভাপতি ছিলেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের পক্ষে-বিপক্ষে সংঘর্ষে শতাধিক ছাত্র ও স্থানীয় মানুষ আহত হন। কুয়েট ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সেদিন ছাত্রদলের সংঘর্ষ বাধে। ছাত্রদলের পক্ষে স্থানীয় বিএনপির কর্মীরা এতে যোগ দেন। যদিও ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরে দাবি করেছিল তারা ওই দিনের সংঘর্ষে যুক্ত ছিল না। ওই সংঘর্ষের সময় রামদা হাতে মাহবুবুর রহমানের একটি ছবি সামাজিক ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই রাতেই তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে তিনি নিয়মিত দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
বাংলাদেশের খবর প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘ভোটের নেই দৃশ্যমান তৎপরতা : রাজনৈতিক দলগুলোয় স্বস্তি-সংশয়’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলে হতে যাচ্ছে। এমন ধারণায় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে কাজ করছে। তবে লেভেল প্লেইং ফিল্ড এবং জুলাই সনদ ও গণহত্যার বিচার ইস্যুতে দ্বিমত এখন চরমে পৌছেছে। নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক প্রস্তুতিগুলো আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ নির্দেশ দেওয়ার পর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে যে সংশয় তৈরি হয়েছিল তা অনেকটাই কেটে গেছে। তবে বিচার-সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের পরিকল্পনা নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে কোনো কোনো দল।
গতকাল যশোরের খেজুর চত্বর এলাকায় এক পথসভায় দেওয়া বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিচার আর সংস্কার ছাড়া নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। যারা বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের পরিকল্পনা করে তারাই নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। নির্বাচন ও ভোটাধিকারের পক্ষে গণঅভ্যুত্থানের তরুণ নেতৃত্বরাই লড়াই করে যাচ্ছে। সরকারের দেওয়া ভোটের সময়সীমার ওপর জামায়াতে ইসলামী আস্থাশীল বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তবে এই ভোট যেন আওয়ামী লীগ আমলের মতো না হয়, সে নিশ্চয়তা চায় দলটি। অন্যদিকে, এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গত বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকে নির্বাচনের নানা প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
কালের কণ্ঠ প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘ভর্তিযুদ্ধ এবার আরো তীব্র’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশিত হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন পরীক্ষার্থী। ফলাফল নিয়ে তাৎক্ষণিক শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস কাজ করলেও ধীরে ধীরে অনেকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। কারণ যারা পাস করেছে একাদশ শ্রেণিতে এখন তাদের ভর্তি হতে হবে।
কিন্তু কোথায় ভর্তি করা যায়? পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে তো? এ রকম ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর মোর্চা আন্ত শিক্ষা বোর্ড বলছে, একাদশ শ্রেণিতে আসনসংখ্যার কোনো সংকট নেই। যে পরিমাণ শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবে দেশের কলেজগুলোয়, তার দ্বিগুণ আসন খালি থাকবে। তবে পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া নিয়ে সংকট থেকেই যাচ্ছে। কারণ দেশে কলেজের সংখ্যা বাড়লেও মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়েনি। ফলে এবারও দেশের নামিদামি তিন শতাধিক কলেজ ঘিরেই জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা ভর্তিযুদ্ধে নামবে।
মানবজমিন প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘এটা কি পরিকল্পিত নৃশংসতা?’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্বর। পৈশাচিক। নির্মম পাষন্ডতা। কোন শব্দেই এই ঘটনার নিষ্টুরতা প্রকাশ করা কঠিন। রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ-বাকরুদ্ধ পুরোদেশ। তোলপাড় চলছে সর্বত্র। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল ও সাধারণ মানুষ। প্রকাশ্যে এমন নারকীয় ঘটনার দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত মানুষ। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দুদিন পর ভিডিও এবং খবর প্রকাশ ঘিরেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ঘটনার ভিডিও প্রকাশের পর এ নিয়ে তোলপাড় হলেও তার আগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো ভূমিকা না থাকাকেও রহস্যজনক মনে করা হচ্ছে।
অনেকে প্রশ্ন করছেন, দুদিন কি করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া কারা ঘটনার ভিডিও ছড়িয়েছে সেই সূত্র খোঁজারও দাবি করেছেন কেউ কেউ। শুক্রবার রাতে ঘটনার খবর ও ভিডিও ব্যাপক আকারে প্রকাশের পর বিভিন্ন দল তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছে নানা স্থানে। ইতোমধ্যেই পুলিশ ও র্যাবের তৎপরতায় আসামীদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই আসামী মহিন ও তারেককে আগেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে র্যাব মামলার আরও ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পাঁচজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবারের ওই ঘটনা নিয়ে প্রথমে কোনো আলোচনা না থাকলেও ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।
বণিক বার্তা প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘প্রাথমিক থেকেই তৈরি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের গণিত ও ইংরেজির দুর্বলতা’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় দীর্ঘদিনের এক অনিয়ম এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে ৩১ দশমিক ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ। ফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পরীক্ষার্থীদের বড় একটি অংশই গণিত ও ইংরেজিতে খারাপ করেছে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, একটি শিশুর গণিত ও ইংরেজির ভিত্তি তৈরি হয় মূলত প্রাথমিক স্তরেই। কিন্তু শিক্ষকের মানসিক প্রস্তুতি, বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা ও শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা শিক্ষার গুণগত মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। অদক্ষ শিক্ষক দিয়ে পাঠদানে শিক্ষার্থীদের ভিত্তি দুর্বল হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়েই।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ২০২৩ সালে করা একটি জরিপে দেখা যায়, প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ শিশু গণিত বিষয়ে একক অংকবিশিষ্ট সংখ্যা শনাক্ত করতে পারে না। আর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ের দুটি বিয়োগ ও দুটি ভাগ সমস্যার সমাধান করতে পারে না পর্যায়ক্রমে ৭৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ ও ৯৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ শিশু।
ইংরেজি বিষয়ে ছেলেশিশুর মধ্যে ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং মেয়েশিশুর মধ্যে ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ইংরেজি বইয়ের একটি বর্ণও পড়তে পারে না। আর ৮৪ দশমিক ১৫ শতাংশ ছেলেশিশু এবং ৮২ দশমিক ৮৬ শতাংশ মেয়েশিশু তিনটি বা তার কম ভুল উচ্চারণসহ একটি কাহিনী সাবলীলভাবে পড়তে পারে না। শুধু বেসরকারি সংস্থার তথ্যই নয়, শিক্ষার্থীদের এ দুর্বলতার তথ্য উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত সরকারি প্রতিবেদনেও।
এমবি