বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
দলে শুদ্ধি অভিযান চালাবে বিএনপি, দুষছে পুলিশকেও

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৭

বাংলাদেশের খবর
রাজনৈতিক দলগুলোয় স্বস্তি-সংশয়
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলে হতে যাচ্ছে। এমন ধারণায় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে কাজ করছে। তবে লেভেল প্লেইং ফিল্ড এবং জুলাই সনদ ও গণহত্যার বিচার ইস্যুতে দ্বিমত এখন চরমে পৌছেছে।
নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক প্রস্তুতিগুলো আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ নির্দেশ দেওয়ার পর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে যে সংশয় তৈরি হয়েছিল তা অনেকটাই কেটে গেছে। তবে বিচার-সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের পরিকল্পনা নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে কোনো কোনো দল। গতকাল যশোরের খেজুর চত্বর এলাকায় এক পথসভায় দেওয়া বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিচার আর সংস্কার ছাড়া নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। যারা বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের পরিকল্পনা করে তারাই নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
নির্বাচন ও ভোটাধিকারের পক্ষে গণঅভ্যুত্থানের তরুণ নেতৃত্বরাই লড়াই করে যাচ্ছে। সরকারের দেওয়া ভোটের সময়সীমার ওপর জামায়াতে ইসলামী আস্থাশীল বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তবে এই ভোট যেন আওয়ামী লীগ আমলের মতো না হয়, সে নিশ্চয়তা চায় দলটি। অন্যদিকে, এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গত বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা
কালের কণ্ঠ
মহাচ্যালেঞ্জে পোশাক খাত
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্প আবারও মহাচ্যালেঞ্জের মুখে। যুক্তরাষ্ট্রের পুনরায় শুল্ক বৃদ্ধির পদক্ষেপে টলমল করছে বিদেশি ক্রেতার আস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা এ মহাচ্যালেঞ্জে ফেলেছে দেশের তৈরি পোশাক খাতকে।
এদিকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় দফার বাণিজ্য আলোচনার তৃতীয় ও শেষ দিন উভয় দেশ বেশ কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছে। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। দুই পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে আন্ত মন্ত্রণালয় আলোচনা অব্যাহত রাখার। শুল্ক আলোচনার এখনো সুরাহা না হলেও এরই মধ্যে বিশ্বখ্যাত ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের কয়েকটি অর্ডার স্থগিত বা বিলম্বিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের তিনজন কারখানা মালিক ও ওয়ালমার্টের এক সাপ্লায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
ওয়ালমার্টের জন্য প্রায় ১০ লাখ পিস সাঁতারের প্যান্টের অর্ডার স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন। তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার অর্ডারটি স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া আরো কিছু প্রতিষ্ঠান বাড়তি শুল্কের ভাগ নিতে চাপ দিচ্ছে।
একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বৃহত্তম।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
চাঁদাবাজি না ব্যবসার দ্বন্দ্ব, স্বজন ও পুলিশের ভিন্ন দাবি
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যার পেছনে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সোহাগের স্বজনরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের অভিযোগ, সোহাগের কাছে দুই ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল খুনিরা। চাঁদা না দেওয়ায় নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করেছে খুনিরা। পুলিশ জানিয়েছে, পৈশাচিক এই খুনের সঙ্গে জড়িত ১৯ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে বরগুনায় সোহাগের গ্রামে চলছে শোকের মাতম। স্বজনরা বলেন, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এখনো হত্যাকারীদের লোকজন মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। সোহাগের দুই সন্তান ১০ বছর বয়সি ছেলে সোহান ও ১৪ বছর বয়সি মেয়ে সোহানা। স্ত্রী লাকি বেগম (৩০) জানেন না, কীভাবে স্কুলপড়ুয়া এই দুই সন্তানকে সান্ত্বনা দেবেন। সোহাগ হত্যাকাণ্ডে জড়িত গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মাহমুদুল হাসান মহিন, তারেক রহমান রবিন, আলমগীর ও মনির ওরফে লম্বা মনির ও টিটন গাজী। এদের মধ্যে তারেক রহমান রবিন গতকাল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সোহাগের মৃত্যুর পর তার লাশের ওপর উঠে উল্লাস করেছেন বড় মনির ও ছোট মনির। লাশের ওপর পাথর মেরেছেন মনির ওরফে লম্বা মনির ও আলমগীর। এ ছাড়া গ্রেপ্তার মাহমুদুল হাসান মহিন হচ্ছেন এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী।
যুগান্তর
ষড়যন্ত্রকারীদের মূল টার্গেট বিএনপি
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এরই অংশ হিসাবে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা বেছে নিয়েছে একটি গোষ্ঠী বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা।
তাদের মতে, এই ষড়যন্ত্রকারীদের মূল টার্গেট বিএনপি। পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য চক্রটি এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নে ব্যবহার করছে কিনা-তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় রাজনীতি ও বিএনপির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। অথচ রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও জড়িতদের দৃষ্টামূলক শাস্তি দাবি করছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলার আলোকে আজীবন বহিষ্কারের মতো সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের কাছে হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিও জানিয়েছে। তারপরও বিএনপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির ট্যাগ দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। যা দেশের গণতন্ত্র ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য ভয়ংকর অশনিসংকেত।
বিএনপি মনে করে, অপরাধী যেই হোক সে আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী। কোনো অপরাধীর দলীয় পরিচয় নেই। তার দলীয় পরিচয় অপ্রয়োজনীয় এবং তার অপরাধের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত কার্যকরের বিষয়ে দলীয় অবস্থান সুদৃঢ় এবং অপরিবর্তিত। যেখানে পুলিশ বলছে এ হত্যাকাণ্ড ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণে, এর সঙ্গে চাঁদাবাজির কোনো সম্পর্ক নেই। সেখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি মহল বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি নেতারা বলেন, বেশ কয়েকটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ্য রাখা দরকার। তা হলো এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার হচ্ছে কিনা। জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করার জন্য এ ঘটনাটিকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা।
প্রথম আলো
সায়মা ওয়াজেদকে ছুটিতে পাঠিয়েছে ডব্লিউএইচও
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের (এসইএআরও) পরিচালক সায়মা ওয়াজেদকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠিয়েছে সংস্থাটি। গত শুক্রবার (১১ জুলাই) থেকে কার্যকর হয়েছে এই ছুটি। শুক্রবার হেলথ পলিসি ওয়াচের ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। হেলথ পলিসি ওয়াচ একটি স্বাধীন, অলাভজনক প্ল্যাটফর্ম, যা বিশ্বের প্রধান স্বাস্থ্যনীতিবিষয়ক চ্যালেঞ্জ ও প্রবণতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
যোগাযোগ করা হলে জাতিসংঘের একটি সংস্থার নয়াদিল্লিতে কর্মরত একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সায়মা ওয়াজেদকে ছুটি দেওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ। অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
অভিযোগ আছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মার নিয়োগ পাওয়ার জন্য তাঁর মা শেখ হাসিনা নিজের প্রভাব খাটিয়েছেন। এর পর থেকে সায়মাকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। গত বছরের জানুয়ারিতে ওই দায়িত্ব পান সায়মা। চার মাস আগে দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুটি মামলা করে। হেলথ পলিসি ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডব্লিউএইচওর এক সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ ই-মেইলে
সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সায়মা ওয়াজেদকে ছুটিতে পাঠানোর কথা জানান। এতে ডব্লিউএইচওর প্রধান উল্লেখ করেন, সায়মা ওয়াজেদ ছুটিতে থাকবেন এবং তাঁর জায়গায় সহকারী মহাপরিচালক ক্যাথারিনা বেম ‘ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বেম আগামী মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ভারতের নয়াদিল্লিতে এসইএআরও কার্যালয়ে যোগ দেবেন বলেও জানান তিনি।
গতকাল শনিবার সকালে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রথম আলোকে জানানো হয়, তারা শুনেছে, সায়মা ওয়াজেদকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি বা অন্য কোনো নির্দেশনা পায়নি।
এ বছরের মে মাসে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনের সময় বাংলাদেশের কর্মকর্তারা ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালককে সায়মা ওয়াজেদের ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অস্বস্তির কথা জানান। ওই সম্মেলনে অংশ নেওয়া একজন প্রতিনিধি এ কথা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই সায়মার নিয়োগ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক চলতি বছরের জানুয়ারিতে তদন্ত শুরু করে।
বণিক বার্তা
শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে ট্রাম্পের ওপর
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দফায় তিন দিনব্যাপী বাণিজ্য আলোচনা গতকাল শেষ হয়েছে। বেশকিছু বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ। তবে কয়েকটি বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে বলে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে। মার্কিন বাজারে বাংলাদেশী পণ্য রফতানিতে উচ্চহারে ধার্য শুল্ক কমানোর বিষয়টি অবশ্য ফলপ্রসূ হয়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করে অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, শুল্ক হ্রাসের বিষয়টি নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর। তিনি চাইলেই কেবল এটি হতে পারে। তাছাড়া শুল্কের বিষয় আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তটিও ট্রাম্পের। তাই এখনো আশা ছাড়ছে না বাংলাদেশ।
ওয়াশিংটনে ৯-১১ জুলাই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়। শুরুর দিন এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর ইউএসটিআরের আমন্ত্রণে ‘এগ্রিমেন্ট অন রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ শীর্ষক দরকষাকষির দ্বিতীয় দফার আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে জানানো হয়, দ্বিতীয় দফায় প্রথম দিন ‘শুল্ক’ আলোচনার পরিসর ছিল বিস্তৃত, যেখানে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে আসে।
দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শেষে প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, ‘শুল্ক’ আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের গতি-প্রকৃতি কেমন হবে সেসব বিষয় উপস্থাপন ও যুক্তিতর্ক হয়। বেশকিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটিভাবে একমত হয়েছে। কিছু বিষয় অবশ্য অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তৃতীয় ও শেষ দিনের বৈঠক শেষে গতকাল জানানো হয়, দ্বিতীয় দফার ‘বাণিজ্য’ আলোচনার তৃতীয় ও শেষ দিনে আরো কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ। তবে কয়েকটি বিষয় এখনো অমীমাংসিত।
সূত্র জানিয়েছে, তিনদিনের আলোচনায় মূলত বাণিজ্যিক বিধিমালার বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে। আর এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে। বৈঠকে সরাসরি অংশ নেয়া বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ বিষয়ে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আলোচনা এখন পর্যন্ত একটা পজিটিভ জায়গায় আছে। ফাইনালি (চূড়ান্তভাবে) কী হবে বলা মুশকিল।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা। তবে সেটি কমিয়ে আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। নির্ধারিত সময়ে আগে শুল্কের বিষয়ে কোনো পরিবর্তন আসতে পারে কিনা, জানতে চাইলে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশসংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ‘অবশ্যই আসতে পারে। তবে তার আগে আরো আলোচনা হবে দুই দেশের মধ্যে।’ আলোচনার ধরন দেখে নিশ্চিতভাবে পরিবর্তন আসবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয়।
মানবজমিন
মাসে ২ লাখ টাকা চাঁদা চাইছিল খুনিরা
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ঢাকায় পাথরের আঘাতে নিহত ব্যবসায়ী সোহাগের (৩৯) দাফন হয়েছে নিজ জেলা বরগুনায়। ভয়, আতঙ্ক আর ক্ষোভ নিয়ে অনেকটা গোপনেই দাফন হয়েছে সোহাগের। গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তড়িঘড়ি করে ছোট পরিসরে নামাজে জানাজা শেষে তার নানাবাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ৭ নম্বর ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর নামক এলাকায় তার মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের মৃতদেহ নিয়ে আসেন স্বজনরা।
নিহতের স্বজনদের দাবি, হত্যাকারীরা মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল সোহাগের কাছে। এদিকে, মামলায় হত্যাকারীদের বাদ দিয়ে পুলিশ তড়িঘড়ি করে স্বাক্ষর নিয়েছে বাদীর। বাবা সোহাগের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকারে ভয়, আতঙ্ক ও ক্ষোভ নিয়ে অঝোরে কাঁদছে মেয়ে সোহানা (১৪) এবং ছেলে সোহান (১১)। মেয়ে সোহানা ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও ছেলে সোহান চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।
নিহত সোহাগের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোহাগের বয়স যখন মাত্র ৭ মাস, তখন বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তার বাবা আইউব আলীর। এরপর জীবিকার তাগিদে মা আলেয়া বেগম শিশু সোহাগ ও তার আরও দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে বরগুনা ছেড়ে রাজধানী ঢাকায় পাড়ি দেন। ওই সময় থেকেই সোহাগ ঢাকায় বসবাস করতেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার মিটফোর্ডে মেসার্স সোহানা মেটাল নামের একটি দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করেই অভিযুক্তদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় একসময় সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধও করে অভিযুক্তরা। এরপর বুধবার বিকালে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে চাঁদার দাবিতে সোহাগকে আটকে রেখে দফায় দফায় চাপ প্রয়োগ করা হয়। এতেও চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোহাগকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে পাথর মেরে হত্যা করা হয়। নিহত সোহাগ তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকার জিঞ্জিরা কদমতলী কেরানীগঞ্জ মডেল টাউন নামক এলাকায় বসবাস করতেন।
নিহত সোহাগের স্ত্রী লাকি বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমার স্বামীর দোকান থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন হত্যাকারীরা। আমার স্বামীর ব্যবসা তাদের সহ্য হচ্ছিল না। তারা প্রতি মাসে দুই লাখ করে টাকা চাচ্ছিল। আমার স্বামী তা দিতে চায়নি। আর এ কারণেই নির্মমভাবে হত্যার শিকার হতে হয়েছে তাকে। সোহাগের মেয়ে সোহানা বলেন, চাঁদা না দেয়ায় আমার বাবাকে পাথর দিয়ে মেরে হত্যা করেছে বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা। আমাদের সাজানো-গোছানো পরিবারটা শেষ করে দিয়েছে।
সমকাল
দলে শুদ্ধি অভিযান চালাবে বিএনপি, দুষছে পুলিশকেও
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আজীবন বহিষ্কারসহ কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার পরও লাগাম টানা যাচ্ছে না বিএনপির একশ্রেণির নেতাকর্মীদের। এই নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি, দখল এমনকি খুনের মতো গুরুতর অভিযোগে বিব্রত দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামী নির্বাচনে এসব ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা নেতাদের। এ অবস্থায় দলের তৃণমূল থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে শুদ্ধি অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
দলীয় সূত্র জানায়, শুদ্ধি অভিযানে ৫ আগস্টের পর দলে আসা সুবিধাভোগী নেতাকর্মীদের চিহ্নিত করা হবে। পাশাপাশি যারা দলের সর্বোচ্চ সতর্কতা উপেক্ষা করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন, তাদের বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চলখ্যাত জেলাগুলোতে এই সাংগঠনিক অভিযানে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত বুধবার সংঘটিত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে দলের লোকজনের নাম আসায় এর দায়ভার দলকেই নিতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে অন্তত ১০ জনকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পরও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে দল।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দলের চেইন অব কমান্ড ঠিক রাখতে অচিরেই জেলা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অচিরেই এটা শুরু হবে।
মিটফোর্ডের ঘটনার বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, হত্যার ঘটনায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের অভিযুক্ত সদস্যদের আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পরও বিএনপির ওপর দায় চাপানো হচ্ছে। এটা পরিকল্পিত ও নোংরা অপরাজনীতি।
মিটফোর্ডের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাত থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মিছিল-সভা হয়েছে। গতকাল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। বিএনপি মনে করছে, এর মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততার চেয়ে বেশি বিশেষ রাজনৈতিক ইন্ধন। তবে দলটি এই ধারাকে মুখোমুখি না হয়ে পর্যবেক্ষণ করবে বলে জানিয়েছে।
কালবেলা
বেপরোয়া ৫৩ এজেন্সি
কালবেলার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বিদেশে উচ্চ বেতন আর উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে হাজার হাজার নারী কর্মীকে প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে অর্থনৈতিক শোষণের পাশাপাশি মানসিক ও যৌন নির্যাতন করছে একটি অসাধু সিন্ডিকেট। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে দিনে দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে এই সিন্ডিকেট সদস্যরা। শ্রমিকদের প্রতারিত করে নিজেদের পকেটে ভরছে শত শত কোটি টাকা। অন্যদিকে, বিদেশে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন হাজারো বাংলাদেশি নারী। যাদের কেউ বা ফিরে আসছেন নিঃস্ব হয়ে, কেউ হারাচ্ছেন সম্ভ্রম, আবার কেউ কেউ পাচ্ছেন না ন্যায্য মজুরি বা মানবিক আচরণ। বিদেশে কর্মী পাঠানোর আগে সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কথা বিএমইটির। তবে খোদ বিএমইটিরই কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ওই অসাধু সিন্ডিকেটে সম্পৃক্ত থাকায় কঠোর নজরদারি কিংবা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে না জড়িতদের। শুধু তাই নয়, এই সিন্ডিকেটভুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জমা দেওয়া অনিয়মে ভরা ফাইল অনুমোদন হয়ে যায় দিনে দিনে, অথচ সব মানদণ্ড পূরণের পরও অন্যদেরটা পড়ে থাকে দিনের পর দিন। কালবেলার দীর্ঘ অনুসন্ধানে এই চক্রে অন্তত ৫৩টি রিক্রুটিং এজেন্সি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদেশি নিয়োগদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করা, সরকারের নির্ধারিত নীতিমালার ভিত্তিতে দক্ষ, আধাদক্ষ বা অদক্ষ কর্মী নির্বাচন, বিদেশে যাওয়ার আগে প্রাসঙ্গিক ভাষা ও সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের চুক্তিপত্র তৈরি ও ব্যাখ্যাসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিশ্চিতের দায়িত্বে রয়েছে বিএমইটি নিবন্ধিত বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি। এ রকম ১৬টি শর্তে বিএমইটির অনুমোদন পায় জনশক্তি রপ্তানির এসব প্রতিষ্ঠান। তবে অনুমোদন পাওয়ার পরে কিছু অসাধু এজেন্সি তোয়াক্কা করে না কোনো ধরনের নিয়ম-নীতির।
নিয়মকানুনের বেশিরভাগই মানেন না তারা। ভুয়া রেফারেন্স পাসপোর্ট নম্বরে প্রত্যাগত দেখিয়ে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই নারীদের বিএমইটির ছাড়পত্র দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে ন্যূনতম বয়সের মানদণ্ড পূরণ হয়নি এমন নারীদেরও। ভাষা, কর্ম ও গন্তব্য দেশের কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক জ্ঞান না থাকায় বিপাকে পড়ছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে গত ২৬-২৮ মে দৈনিক কালবেলায় তিন পর্বের ‘গৃহকর্মীর আড়ালে কিশোরী পাচার’ শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্বে ‘রক্ষক বিএমইটিই ভক্ষক’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নতুন করে দৈনিক কালবেলার হাতে এ-সংক্রান্ত আরও কিছু নথিপত্র আসে। সব মিলিয়ে বিএমইটিতে এই ভয়ংকর জালিয়াতির কারবারে একাধিক কর্মকর্তাসহ অন্তত ৫৩টি রিক্রুটিং এজেন্সির জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে কালবেলা।