Logo

নির্বাচিত

১০ মাসে ৩৫৫৪ খুন, ৪১০৫ ধর্ষণ, ৮১৯ অপহরণ

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৮

১০ মাসে ৩৫৫৪ খুন, ৪১০৫ ধর্ষণ, ৮১৯ অপহরণ

বাংলাদেশের খবর
অগ্নিপরীক্ষায় ইসি
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) একাধিক জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য এবং ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার চাপ; এই তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জকে ঘিরেই এখন ইসির কর্মকৌশল নির্ধারিত হচ্ছে।

এদিকে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, বরং বাড়ছে দূরত্ব। এমন এক পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) এক কঠিন অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসির সামনে প্রধানত তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ইসি এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে নির্বাচনের জন্য কতটুকু প্রস্তুত হতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেই জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেছেন যে, পথটি কণ্টকাকীর্ণ, তবে অসম্ভব নয়।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
১০ মাসে ৩৫৫৪ খুন, ৪১০৫ ধর্ষণ, ৮১৯ অপহরণ
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১০ মাসে ৩ হাজার ৫৫৪টি খুন, ১২ হাজার ৭২৬টি নারী ও শিশু নির্যাতন, ৪ হাজার ১০৫টি ধর্ষণ, ৮১৯টি অপহরণ এবং ৯৭টি দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে ১ হাজার ৭৩০টি চোরাচালান, ১ হাজার ৫২৬টি দস্যুতা, ৬১০টি ডাকাতি, ৩৮ হাজার ১৭৬টি মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধ এবং ৭ হাজার ৩১০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মোট ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৫টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৮৯৮টি দ্রুত বিচার মামলা।

পুলিশ সদর দপ্তরের বরাত দিয়ে দেশে অপরাধপ্রবণতার এ তথ্য প্রকাশ করে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে বলেছে, পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ‘গত ১০ মাসে বড় ধরনের অপরাধের প্রবণতা স্থিতিশীল রয়েছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চলতি বছর দেশে অপরাধের হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে-বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরে জনমনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছর বড় ধরনের অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে-এমন দাবি সঠিক নয়।’ পুলিশ সদর দপ্তর যে তথ্য দিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে ১ হাজার ৯৩৩টি খুন, ২ হাজার ৭৪৪টি ধর্ষণ, ৫১৭টি অপহরণ এবং ৩৬৭টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০২৪ সালে সারা বছরে ৪ হাজার ১১৪টি খুন, ৪ হাজার ৩৯৪টি ধর্ষণ, ৬৪২টি অপহরণ এবং ৪৯০টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পরিসংখ্যানে বড় ধরনের অপরাধ দ্রুত বাড়ার কোনো লক্ষণ নেই। বাস্তবে বেশির ভাগ গুরুতর অপরাধের হার কমছে বা একই পর্যায়ে রয়েছে। তবে কিছু নির্দিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে সামান্য বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।’

প্রেস উইং নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরও বিশ্বাস রাখতে হবে। কারণ, অপরাধের হার মোটামুটি স্থিতিশীল, যাতে বোঝা যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’

মানবজমিন
অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো লড়াইয়ে, কী করবেন ইউনূস
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, সংকট, কঠিন এক সংকটে বাংলাদেশ। যা কিনা ইতিপূর্বে আর কখনো দেখা যায়নি। আর এই সংকট মোকাবিলায় সরকার আছে, নেই। পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো একে-অপরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে। টেবিলে নয়, প্রকাশ্যে। কিন্তু কেন? কী তাদের লক্ষ্য। অনেকে বলেন অস্পষ্ট, আবেগে ভরা। কিন্তু মোটেই তা নয়। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই তারা হাঁটছেন ধারালো ছুরির উপর দিয়ে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা নতুন ঘটনা না হলেও এবারেরটা অস্তিত্ব সংকটে ফেলে দিচ্ছে। বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছে এক উল্টো স্রোতে।  

একটি হত্যাকাণ্ড রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছে। ওলট-পালট হয়ে যাচ্ছে অর্জনগুলো। কূটকৌশলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করছেন রাজনীতিকরা। এখানে আওয়ামী লীগ অনুপস্থিত। অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো যে ভাষায় কথা বলছে, তা দেখে দূর থেকে আওয়ামী লীগ হাসছে। হাসছেন শেখ হাসিনা। যে শক্তি বঙ্গবন্ধুর ছবি ও ভাস্কর্য ভেঙেছে সেই শক্তিকেও দেখা গেল জিয়াউর রহমানকে অবমাননা করছে। কুৎসিত ভাষায় স্লোগান দিচ্ছে। 

কারা মারলো ব্যবসায়ী সোহাগকে? যেকোনো বিবেচনায় এটা নির্মম, নিষ্ঠুর। ঘুঁটি কোথায় বসে সাজানো হয়েছিল তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা চলছে। এটা কি নিছক হত্যাকাণ্ড? নাকি রাজনীতির নোংরা কোনো খেলার অংশ। সময়ই বলে দেবে। তবে, ক্রমেই খোলাসা হচ্ছে। বিএনপিকে কোণঠাসা করতেই এটা যে পরিকল্পিত খেলা- এখন তা স্পষ্ট। এখানে বিএনপি’র দায় আছে। ৫ই আগস্টের পর দরজা খুলে দিয়েছিল। ময়লা-আবর্জনায় ডুবে গেছে দলটি। কে জানে কার কী উদ্দেশ্য। বিএনপি নেতারা সংখ্যা দেখেছেন। মানুষ দেখেননি। বলছি ত্যাগী আর সৎ মানুষের কথা।

চাঁদাবাজ আর দখলবাজের দৌরাত্ম্য দেখে অনেকেই সতর্ক করেছিলেন। বিএনপি নেতারা তেমনটা আমলে নেননি। হাজী সেলিমের ক্যাডার যখন বিএনপি’র কাফেলায় যোগ দেয়, তখন বোঝা উচিত ছিল নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো মতলব আছে। এই সোহাগ ছিল হাজী সেলিমের বিশ্বস্ত ক্যাডার। তাকেই পৈশাচিকভাবে  হত্যা করে তারই বন্ধুরা। যারা একসঙ্গে চাঁদাবাজির নিশানা উড়িয়েছিল। কারা তাকে হত্যা করলো? কেনই-বা করলো? তদন্ত হচ্ছে। ফলাফল হয়তো জানা যাবে না। কারণ এর পেছনে দেশি-বিদেশি ‘কালো হাত’ রয়েছে। 

অভ্যুত্থানের শক্তিদের ভাগ করা যদি উদ্দেশ্য থাকে তাহলে অতি সহজে হিসাব মেলাতে পারবেন না। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বিএনপি’র গতি রোধ করা। সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। নির্বাচনকে অনিশ্চিত করা। এই তিন লক্ষ্যই হাসিল হয়েছে। মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। অভ্যুত্থানের ফসল কে ঘরে তুলবেন? একে-অপরকে যে ভাষায় গালিগালাজ করছেন, রাজপথে আওয়াজ তুলছেন- তা রীতিমতো চমকে ওঠার মতো। প্রফেসর ইউনূসের ঐকমত্য কমিশনের ১২টা যে বেজে গেল। জামায়াত, এনসিপি আর বিএনপি কি একসঙ্গে এক টেবিলে বসবে? বুড়িগঙ্গায় অনেক পানি গড়িয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে। তৈরি হয়েছে বিস্তর ফারাক। সরকারের ভেতরের সরকার তৎপর হয়েছে। নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবির উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানের আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার অতীত ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। প্রমাণ হয়ে গেছে রিজওয়ানা তার অতীত থেকে বের হতে পারেননি। এতদিন তিনি আসল রূপ আড়াল করে রেখেছিলেন। 

বণিক বার্তা
জনপ্রশাসন ও পুলিশ সংস্কারের উদ্যোগ চাপা পড়ে যাচ্ছে
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশে ফ্যাসিবাদী কাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল জনপ্রশাসন ও পুলিশের। জনগণের সেবক না হয়ে শাসক হয়ে উঠেছিল সরকারের এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। সরকারি চাকরির শর্ত ভঙ্গ করে অনেক আমলা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য আবির্ভূত হয়েছিলেন রাজনৈতিক কর্মীর ভূমিকায়। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি প্রতিষ্ঠানে আমূল সংস্কার হবে। সংস্কারের মধ্য দিয়ে লালফিতার দৌরাত্ম্য কিংবা পুলিশি রাষ্ট্র থেকে বের হয়ে আসবে বাংলাদেশ। কিন্তু অভ্যুত্থানের এক বছর হতে চললেও গণমানুষের সে প্রত্যাশা অর্জিত হয়নি।

উল্টো গত এক বছরে সচিবালয়কেন্দ্রিক ক্ষমতার বলয় আরো শক্তিশালী হয়েছে। বহাল রয়েছে ‘সিনিয়র সচিব’ পদমর্যাদার মতো শেখ হাসিনার দিয়ে যাওয়া উপঢৌকনও। আমলাতন্ত্রের ঘেরাটোপে আটকে পড়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগও। পুলিশের পরিস্থিতিও একই। জনগণের সেবক না হয়ে বাহিনীটির সদস্যরা এখনো রাজনীতির বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছেন। জনপ্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী সংস্কারে গঠিত কমিটির কোনো মৌলিক সুপারিশ এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বরং নির্বাচন ও সংস্কারের নানা ডামাডোলে এ দুটি প্রতিষ্ঠান সংস্কারের মৌলিক দাবি চাপা পড়ে গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তারা বলছেন, সংস্কার কার্যক্রম যত বিলম্বিত হবে, জনপ্রশাসন ও পুলিশের ঘুরে দাঁড়ানো বা জনবান্ধব হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াও ততটা পিছিয়ে পড়বে।

এ মুহূর্তে জনপ্রশাসন কিংবা পুলিশের সংস্কারের বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায়ই নেই বলে মনে করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রাক্তন সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘সরকার সাধারণত অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করে। যেসব বিষয় সরকারের অগ্রাধিকারে রয়েছে, সেগুলোতেই নজর দেয়া হচ্ছে। আমার মনে হয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যে কাজ, এ মুহূর্তে সেটিই সরকারের অগ্রাধিকার। বিশেষ করে সাংবিধানিক সংস্কার, বিচার বিভাগের সংস্কার, নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার—এগুলোই হয়তো সরকারের প্রায়োরিটি। এগুলো শেষ করার পরেই হয়তো সরকার জনপ্রশাসন কিংবা পুলিশ সংস্কারে নজর দেবে।’

প্রথম আলোর
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবার বসতে চায় বাংলাদেশ
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে নতুন করে যে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন, দ্বিপক্ষীয় দর-কষাকষির মাধ্যমে তা কমিয়ে আনতে দুই দফা আলোচনা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতা হয়নি। তবে ১ আগস্ট এই ঘোষণা কার্যকরের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবারও বসতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য সময় চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ই–মেইল করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার সচিবালয়ে অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন একটি দল পাল্টা শুল্কহার কমানোর ব্যাপারে চুক্তি করতে ৯ থেকে ১১ জুলাই ওয়াশিংটনে আলোচনা শেষে গত রোববার দেশে ফিরেছে।

আলোচনার অগ্রগতি জানাতে গতকাল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দুই অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান ও নাজনীন কাউসার চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছি। এ ছাড়া আন্তমন্ত্রণালয়ে কিছু আলোচনার বিষয় আছে। সেগুলো শেষ করে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি আবার আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যাব। একটা ভালো ফলের জন্য সবাই মিলে চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করতে না পারলে কী হবে, তার ধারণা পাওয়া যায় ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশনের তথ্য থেকে। ওই কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যে যত শুল্ক আদায় করা হয়েছে, তার গড় ১৫ শতাংশের মতো। ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হলে তা দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ। তার মানে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। আশা করছি, বাংলাদেশ তার সক্ষমতা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে এবং বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক পর্যায়ে শুল্ক নির্ধারণ করবে।

যুগান্তর
ধরাছোঁয়ার বাইরে দুর্নীতি ধামাচাপার তিন ‘কারিগর’
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার আমলে বড় বড় দুর্নীতির ঘটনা ধামাচাপার ‘কারিগর’ ছিলেন তিনজন। তাদের ইশারায় আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের রক্ষা করা হতো। শুধু তাই নয়, মামলার জালে ফাঁসানো হতো সরকারবিরোধী নেতা ও ব্যবসায়ীদের। আবার তাদের বিরুদ্ধে আছে ব্যাংক-বিমা লোপাটকারী অলিগার্কদের (যারা শুধু ক্ষমতা ও অর্থের মালিকই নন, প্রচুর সম্পদের উৎসগুলোর নিয়ন্ত্রকও) ছেড়ে দিয়ে অঢেল অর্থ উপার্জনের অভিযোগও। তারা হলেন-দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক তিন চেয়ারম্যান-এম বদিউজ্জামান, সৈয়দ ইকবাল মাহমুদ ও মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লা।

আওয়ামী সরকারের ইশারায় দুদককে রীতিমতো হাতিয়ারে পরিণত করেছিলেন তারা। সংস্থাটির ভাবমূর্তি ধ্বংস করে যাওয়া এ তিন ব্যক্তি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কানাডায় বিলাসী জীবনযাপন করছেন ইকবাল মাহমুদ। আর বদিউজ্জামান ও মঈনউদ্দীন আবদুল্লা দেশেই আছেন নীরবে-নিভৃতে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে দুদকের সাবেক মহাপরিচালক (লিগ্যাল) মঈদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। চেয়ারম্যান থাকাকালে তাদের বিরুদ্ধে কেউ হয়তো কথা বলতে সাহস পাননি। এখন কথা বলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কাজেই সাবেক দুদক চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও মামলা হতে পারে। তবে কমিশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা অনভিপ্রেত। ‘সরষের ভেতর ভূত’ থাকলে তা অবশ্যই তাড়াতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব যাদের, তারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্ত হলে কখনো দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব হবে না। হয়তো নিজেরা দুর্নীতিতে জড়িত বলেই রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান-কমিশনারদের কোন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার। নিয়োগ সংক্রান্ত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি আছে। তাদের নিজস্ব যাচাই-বাছাই ও সুপারিশে নিয়োগ হয়েছিল নাকি কারও হুকুম তামিল করতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাও অনুসন্ধান করা দরকার।’

কালবেলা
আ.লীগের মন্ত্রীর ভাই পাচ্ছেন ১ কোটি বই ছাপার কাজ
কালবেলার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের সব সেক্টর থেকে ওই সরকারের সুবিধাভোগীদের সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও ব্যতিক্রম শুধু জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সরকারি এ দপ্তরটি হাঁটছে উল্টোপথে। দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতিতে ডুবে থাকা দপ্তরটি এবার আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীদের পুনর্বাসন শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের সাবেক এক মন্ত্রীর ভাইকে ১ কোটি ৩৩ লাখ বই ছাপার কাজ দেওয়া হয় গত বছর, যা নিয়ে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। আপত্তি তোলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। এর পরও আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে তাকে ১ কোটির বেশি বইয়ের কাজ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। শুধু তাই নয়, বিতর্কিত এই মুদ্রাকরকে নিয়ে গোপনে বৈঠক করেন সংস্থাটির কর্তাব্যক্তিরা।

এনসিটিবির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা সরকারের ২০১৮-২৪ মেয়াদের মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন মোস্তাফা জব্বার। তার ভাই রব্বানী জব্বার ২০২১ সালে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে ২০২৩ সালে তিনি মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি হন। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গত রোববার তাকে সমিতির পদ থেকে অপসারণ করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

কালবেলার হাতে আসা এনসিটিবির মুদ্রণ শাখার তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের ৫ আগস্টের পর তাকে ১ কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার ৪৯৯ কপি বই ছাপার কাজ দেয় এনসিটিবি। আনন্দ ও এপেক্স প্রিন্টার্সের নামে তিনি প্রায় ৭৫ কোটি টাকার কাজ করে বিল তুলেছেন বিনা বাধায়। নিম্নমানের বই দিলেও হয়নি জরিমানা।

এদিকে আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের বই ছাপার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিকের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বইয়ের জন্য ৫৯৮টি লটের দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়েছে। এসব দরপত্রের মধ্যে রব্বানী জব্বারের দুটি প্রেস ১৬টি লটের সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয়েছে। এতে তিনি ৪৭ লাখ বইয়ের কাজ পাবেন। এরই মধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইয়ের দরপত্র মূল্যায়নের কাজ শেষ করেছে কমিটি এবং তার প্রেস দুটিকে কাজের যোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়েছে। বাকিগুলোয় মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চলতি মাসের শেষদিকে চতুর্থ, পঞ্চম ও নবম শ্রেণির বইয়ের দরপত্র জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। এনসিটিবি ও মুদ্রণ শিল্প সমিতির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আগের দরপত্রের সমঝোতা অনুযায়ী আরও ৪৫ লাখের বেশি বইয়ের কাজ পাবেন রব্বানী জব্বার। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রীর ভাইয়ের এত সংখ্যক বই ছাপার কাজ পাওয়া নিয়ে সরকারি এ কাজের সঙ্গে যুক্তরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে দুটি গোয়েন্দা সংস্থা।

কালের কণ্ঠ
সেই সতর্কবার্তা এখন গুরুত্ব পাচ্ছে, রাজনীতিতে কাদা ছোড়াছুড়ি চরমে
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে রাওয়া ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে তিনি সব পক্ষের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘নিজেরা কাদা ছোড়াছুড়ি, মারামারি ও কাটাকাটি করলে দেশ ও জাতির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। এই দেশ আমাদের। আমরা সবাই সুখে-শান্তিতে থাকতে চাই। আমরা চাই না হানাহানি, কাটাকাটি, মারামারি।

আমাদের মধ্যে মতের বিরোধ থাকতে পারে, চিন্তা-চেতনার বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু দিন শেষে আমরা সবাই দেশ ও জাতির দিকে খেয়াল করে সবাই যেন এক থাকতে পারি। কেবল এক থাকলেই এ দেশ উন্নত হবে, সঠিক পথে পরিচালিত হবে। না হলে আমরা আরো সমস্যার মধ্যে পড়ে যাব। ওই দিকে আমরা যেতে চাই না। আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। পরে বলবেন সতর্ক করিনি। এই দেশ আমাদের সবার। আমরা সবাই সুখে-শান্তিতে থাকতে চাই।

সেই উদ্দেশ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ এর প্রায় পাঁচ মাস পর সেনাপ্রধানের সেই সতর্কবার্তা এখন সচেতন সব মহলে গুরুত্ব পাচ্ছে। অনেকেরই উপলব্ধি, সেনাপ্রধান সেদিন ভুল কিছু বলেননি।

সম্প্রতি পুরান ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে অশ্লীল স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে অভিযোগ করেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার পরিচালনার দায়িত্বে না থাকা সত্ত্বেও একটি রাজনৈতিক দল ও তার প্রধান নেতৃত্বকে দায়ী করে বিক্ষোভ মিছিল এবং অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এটি রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে আবারও সেই ফ্যাসিবাদের যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, কাদা ছোড়াছুড়ি না করতে সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অনেকেই এটা উপলব্ধি করছেন।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর