Logo

খেলা

২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তরের ব্যাখ্যায় কী বলছে বিসিবি

Icon

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:২৯

২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তরের ব্যাখ্যায় কী বলছে বিসিবি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা সমালোচনার মুখে রয়েছেন ফারুক আহমেদ।

বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে সম্পর্কের দূরত্ব, বিপিএল আয়োজনে পেশাদারিত্বের অভাব, টিকিট বিক্রিতে দর্শকদের ক্ষোভ এবং দলের বাজে পারফরম্যান্স মিলিয়ে ফারুকের ওপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে।

এসবের মাঝেই তার বিরুদ্ধে বিসিবির আর্থিক লেনদেনে অস্পষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। কয়েক দিন ধরে ক্রিকেট অঙ্গনে গুঞ্জন চলছে, বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট থেকে ১২০ কোটি টাকা সরিয়েছেন ফারুক আহমেদ। এমনকি অভিযোগ উঠেছে, বোর্ড পরিচালকদের না জানিয়ে তিনি একক সিদ্ধান্তে এই টাকা সরিয়ে নিয়েছেন।

তবে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিসিবি। শনিবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বোর্ড জানায়, ‘জাতীয় গণমাধ্যমের একটি অংশে বোর্ডের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন বিসিবির নজরে এসেছে। বিসিবির মতে, এসব প্রতিবেদন ভুল তথ্যভিত্তিক এবং বোর্ড ও এর সভাপতি ফারুক আহমেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে।’

বিবৃতিতে ফিক্সড ডিপোজিটের টাকা স্থানান্তরের বিষয়ে বিসিবি ব্যাখ্যা দিয়ে জানায়, ‘২০২৪ সালের আগস্টে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর ফারুক আহমেদ বিগত বছরগুলোর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের পর দেশের অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে বোর্ডের আর্থিক স্বার্থ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেন।’

‘এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিসিবি ব্যাংকিং সম্পর্কগুলো পুনর্মূল্যায়ন করে এবং কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেয় যে কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ‘গ্রীন’ ও ‘ইয়েলো’ জোনভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই লেনদেনে যুক্ত থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিসিবি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলো থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে, যার মধ্যে ২৩৮ কোটি টাকা গ্রীন ও ইয়েলো জোনভুক্ত ব্যাংকগুলোতে পুনঃবিনিয়োগ করা হয়। অবশিষ্ট ১২ কোটি টাকা বিসিবির বিবিধ পরিচালনা ব্যয় নির্বাহের জন্য নির্ধারিত একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।’

বিসিবি আরও জানিয়েছে, ‘বোর্ড সভাপতি কোন একক সিদ্ধান্তে বা পরিচালনা পর্ষদের অজ্ঞাতে ব্যাংক পরিবর্তন বা লেনদেনের নির্দেশ দেননি। বিসিবির আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে স্বাক্ষর প্রদানকারী হিসেবে ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা এবং টেন্ডার ও পারচেজ কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম রয়েছেন। বোর্ড সভাপতি এসব আর্থিক কার্যক্রমে স্বাক্ষর প্রদান করেন না।’

বিবৃতিতে বিসিবি আরও উল্লেখ করেছে, ‘কিছু সুবিধাভোগী মহল এবং ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী, যারা ক্রিকেট প্রশাসনের ভেতরেও সক্রিয়, তারা বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বিসিবির আর্থিক নিরাপত্তা জোরদারের এটিও অন্যতম কারণ। সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে এ পর্যন্ত বিসিবি তার অর্থ ও স্থায়ী আমানত ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকের মাধ্যমে সংরক্ষণ করছে। এর ফলে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক মুনাফা লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

‘পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় বিসিবির স্থায়ী আমানত থেকে ২-৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত মুনাফা অর্জিত হয়েছে। গত ছয় মাসে বিসিবি তার বর্তমান তিনটি ব্যাংকিং অংশীদারের কাছ থেকে আনুমানিক ১২ কোটি টাকার স্পনসরশিপ পেয়েছে। পাশাপাশি, অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য অংশীদার ব্যাংকগুলো প্রায় ২০ কোটি টাকার বিনিয়োগের আশ্বাস দিয়েছে, যা আর্থিক সম্পর্কের দৃঢ়তা ও গভীরতা নির্দেশ করে।’

বিবৃতিতে আরও বলেছে, ‘বোর্ড সর্বোচ্চ মানের আর্থিক ব্যবস্থা বজায় রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রকৃত ও তথ্যভিত্তিক উৎস থেকে তদন্ত ও পর্যালোচনাকে বিসিবি স্বাগত জানায়। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে অনুরোধ করা হচ্ছে, ভিত্তিহীন অথবা বাংলাদেশ ক্রিকেট ও এর সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে, এমন ভুল তথ্যসম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য।’

এমজে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর