
ছবি : ক্রিকইনফো
আবারও ব্যর্থতার চোরাবালিতে তলিয়ে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হারের ক্ষত না শুকোতেই এবার সিরিজের শুরুতেই পাকিস্তানের কাছে লজ্জার হারে পথচলা শুরু করল লিটন বাহিনী। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিক পাকিস্তানের কাছে ৩৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক লিটন দাসের এক লাইনের স্বীকারোক্তিই যেন বলে দিল, কী ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছে দল :
‘পুরো ম্যাচেই আমরা ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই ভালো করিনি।’
এই পরাজয় শুধু স্কোরকার্ডে ৩৭ রানের হিসাব নয়, বরং বাংলাদেশ দলের মনস্তত্ত্ব ও কৌশলগত প্রস্তুতির দারুণ এক ব্যর্থতা।
বুধবার ( ২৮ মে) রাতে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল বাংলাদেশ। মাত্র ৫ রানের মধ্যেই দুই পাকিস্তানি ওপেনারকে ফেরান শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব। কিন্তু এরপর থেকেই দৃশ্যপট বদলে যেতে থাকে।
সালমান আলি আগা ও মোহাম্মদ হারিসের দৃঢ় জুটি, হাসান নাওয়াজের ঝড়ো ইনিংস (৩২ বলে ৫৪) এবং শেষ দিকে শাদাব খানের তাণ্ডবে ২০ ওভারে পাকিস্তান তুলে ফেলে ২০১ রান। বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল নেন দুটি উইকেট। বাকিরা ছিলেন দিশেহারা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ শুরুতে ভালো শুরু পেলেও মিডল অর্ডারে ভয়ঙ্কর ধস নামে। ওপেনার পারভেজ ইমন ৪ রানে ফিরলে লিটন ও তানজিদ তামিম কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। লিটন করেন ৩০ বলে ৪৮ রান, তানজিদ ৩১। কিন্তু ১০০ থেকে ১৫০ রানের মাঝে বাংলাদেশ হারায় ৬ উইকেট!
জাকের আলি অনিকের ৩৬ রানের ইনিংসও ম্যাচে ফেরাতে পারেনি দলকে। আর বাকিরা যেন নখদন্তহীন—হৃদয়, শামীম, রিশাদদের ব্যাট ছিল নির্বিষ। সবকটি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৬৪ রানে।
এই ম্যাচের নায়ক নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের হাসান আলি। বাংলাদেশের ব্যাটিংকে কার্যত ধসিয়ে দিয়ে তিনি তুলে নেন ৫ উইকেট। তার গতির সামনে একের পর এক ব্যাটার আত্মসমর্পণ করেন।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে হতাশ লিটন বলেন, ‘আমাদের তিন বিভাগেই উন্নতি করতে হবে। এখন আমরা ভালো ফিল্ডিং করছি না। এই মাঠে ২০০ রান চেজ করা যেত। কিন্তু সেটা করতে হলে ব্যাটিংয়ে আরও ভালো করা লাগতো।’
জাকের আলির প্রসঙ্গে লিটন বলেন, ‘জাকের ভালো খেলছে, কিন্তু একজন প্লেয়ারে কিছু হবে না। মানসিকভাবে দল হিসেবে খেলতে হবে। ক্রিকেট শুধু প্র্যাকটিস নয়, মানসিক প্রস্তুতির খেলা।’
এই হারের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে পিছিয়ে পড়ল বাংলাদেশ। এখন বাকি দুই ম্যাচে জিততে না পারলে আরও এক সিরিজ হাতছাড়া হবে টাইগারদের। উল্লেখ্য, আগামী ৩০ মে একই ভেন্যুতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
- এটিআর