প্যালেসকে টাইব্রেকারে হারিয়ে লিগ কাপের সেমিফাইনালে আর্সেনাল
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৫
গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগার নৈপুন্যে মঙ্গলবার লিগ কাপের কোয়র্টার ফাইনালে পেনাল্টি শুটআউটে ক্রিস্টাল প্যালেসকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আর্সেনাল। কেপার এই সেভে ক্রিস্টাল প্যালেস ডিফেন্ডার ম্যাক্সেন্স ল্যাক্রোয়িক্সের জন্য রাতটি হয়ে ওঠে দুঃস্বপ্নের।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে ল্যাক্রোয়িক্সের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় আর্সেনাল। তবে যোগ করা সময়ে মার্ক গুয়েহির গোলে ১-১’এ সমতা ফেরায় প্যালেস। ফলাফল নির্ধারনে এরপর ম্যাচটি গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। যেখানে দুই দলই প্রথম সাতটি করে শটে সফল হয়। আর্সেনালের অষ্টম কিকে উইলিয়াম সালিবা গোল করে। কেপা ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ল্যাক্রোয়িক্সের শট ঠেকালে ৮-৭ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় আর্সেনালের।
স্প্যানিশ গোলরক্ষক কেপার জন্য এটি ছিল এক ধরনের মুক্তির মুহূর্ত। ২০১৯ সালে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে চেলসির লিগ কাপ ফাইনালে পেনাল্টি শুটআউটের আগে বদলি হতে অস্বীকার করে তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। এছাড়া ২০২২ সালে লিভারপুলের বিপক্ষে লিগ কাপ ফাইনালের শুটআউটে চেলসির হারের সময় তিনি নিজেও একটি পেনাল্টি মিস করেছিলেন।
সেমিফাইনালে দুই লেগে লন্ডনের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী চেলসির মুখোমুখি হবে আর্সেনাল। অন্য সেমিফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নিউক্যাসলের বিপক্ষে খেলবে ম্যানচেস্টার সিটি।
আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতা বলেন, “আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছি এবং আরও অনেক গোল করা উচিত ছিল। যখন আপনি ম্যাচ শেষ করতে পারেন না, তখন গোল খাওয়ার ঝুঁকি থাকেই। আমাদের কয়েকজন খেলোয়াড় ব্যক্তিগতভাবে দারুণ খেলেছে। পেনাল্টিতে খেলোয়াড়রা খুব শান্ত ছিল এবং শেষ পর্যন্ত কেপা একটি সেভ করেছে। আমরা যেখানে থাকতে চাই, সেখানেই আছি।”
টানা দ্বিতীয় মৌসুমে লিগ কাপের সেমিফাইনালে উঠল আর্সেনাল। ২০২০ সালে এফএ কাপ জয়ের পর এটি হতে পারে তাদের প্রথম শিরোপা। উত্তর লন্ডনের ক্লাবটি লিগ কাপ জিতেছে মাত্র দু’বার। সর্বশেষ শিরোপা এসেছিল ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে- বর্তমান স্কোয়াডের কেউ তখন জন্মায়ওনি।
বৃহস্পতিবার বড়দিন উদযাপনের পর আর্সেনাল আবার মনোযোগ দেবে শিরোপা লড়াইয়ে। ২০২৫ সালের শেষ দিকে তারা প্রিমিয়ার লিগে ঘরের মাঠে ব্রাইটন ও তৃতীয় স্থানে থাকা অ্যাস্টন ভিলার মুখোমুখি হবে।
২০০৪ সালের পর প্রথমবারের মতো ইংলিশ লিগ শিরোপা জয়ই এ মৌসুমে আর্সেনালের প্রধান লক্ষ্য। তবে মার্চে লিগ কাপ জিততে পারলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিরোপাখরায় থাকা ক্লাবটির জন্য তা হবে বড় অনুপ্রেরণা। শনিবার এভারটনের বিপক্ষে জয়ী দলের থেকে আর্তেতা আটটি পরিবর্তন করে উইলিয়াম সালিবা, মিকেল মেরিনো, এবেরেচি এজে, গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি ও গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে নিয়ে শক্তিশালী একাদশ নামান।
জানুয়ারিতে বাঁ হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ার পর জেসুস ৩৪৫ দিন পর প্রথমবারের মতো শুরুর একাদশে খেললেন। চলতি মাসের শুরুতে ক্লাব ব্রাগের বিপক্ষে বদলি হিসেবে তিনি মাঠে নেমেছিলেন। ম্যাচের শুরুতেই ননি মাদুয়েকে আর্সেনালকে এগিয়ে দিতে পারতেন, কিন্তু দু’বারই তাকে বাধা দেন প্যালেস গোলরক্ষক ওয়াল্টার বেনিতেজ, যিনি পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন। পোস্টের খুব কাছ থেকে জেসুসের হেডও বাম দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান বেনিতেজ। এরপর মাদুয়েকের আরেকটি জোরালো শটও রুখে দেন। জুরিয়েন টিম্বারের ১০ গজ দুরের হেডের বল বাইরে চলে গেলে আর্তেতা হয়তো ভাবছিলেন আর্সেনাল আদৌ কোন গোলের দেখা পাবে কি না।
দ্বিতীয়ার্ধে বুকায়ো সাকা ও মার্টিন ওডেগার্ডকে নামান আর্তেতা। ওডেগার্ড নামার সঙ্গে সঙ্গেই প্রভাব ফেলেন- তার ক্রসে জেসুসের হেড অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত ৮০তম মিনিটে জট কাটে। চলতি মৌসুমে বহুবারের মতো সেট-পিস থেকেই ক্ষতি করে আর্সেনাল। সাকার কর্নারে গোলমুখে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় এবং সালিবার শটবল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ল্যাক্রোয়িক্স নিজের জালেই বল পাঠান। তবে প্যালেসও সেট-পিস থেকেই জবাব দেয়। ম্যাচের ৯৫তম মিনিটে তাদের প্রথম লক্ষ্যে থাকা শট থেকেই সমতা আসে। অ্যাডাম ওয়ার্টনের ফ্রি-কিক জেফারসন লের্মা হেডে নামিয়ে দিলে কাছ থেকে বল জালে পাঠান গুয়েহি।
এসএসকে/

