Logo

প্রযুক্তি

টেলিকম খাতে মাফিয়া সিন্ডিকেট ভাঙতে নতুন নীতি আনছে সরকার

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ১৮:৫৯

টেলিকম খাতে মাফিয়া সিন্ডিকেট ভাঙতে নতুন নীতি আনছে সরকার

দেশের ইন্টারনেট ও টেলিকম খাত দীর্ঘদিন ধরে একটি মাফিয়া সিন্ডিকেটের কবলে ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, এ খাতের দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ করতেই সরকার নতুন টেলিকম লাইসেন্সিং নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন কিছু লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু ছিল, যা পৃথিবীর কোথাও নেই। মাত্র ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বহু ভূইফোঁড় কোম্পানি প্রতিবছর ৪০০ কোটি টাকা পর্যন্ত লুট করেছে। গত ১৫ বছরে প্রায় ৩ হাজার ৪০০ কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই সরকারের রাজস্ব না দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এসব কোম্পানির মাধ্যমে সরকার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ রাজস্ব পেলেও বাকি টাকাগুলো সিন্ডিকেটের পকেটে গেছে। এই লুটপাট ঠেকাতেই নতুন নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে।’

নতুন টেলিকম লাইসেন্সিং নীতিমালার বিষয়ে তিনি জানান, আগের মতো আর সাত-আটটি ধাপ পেরিয়ে লাইসেন্স নিতে হবে না। এর ফলে টোল আদায়কারী মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে।

লাইসেন্স নবায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যাদের বৈধ লাইসেন্স রয়েছে, তাদের থেকে সেটি কেড়ে নেওয়া হবে না। তবে মেয়াদ শেষে নতুনভাবে নবায়নের ক্ষেত্রে সংশোধিত নীতিমালার আওতায় আসতে হবে।’

ইন্টারনেট খাতের দুর্বল অবস্থা তুলে ধরে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, ‘দেশের ইন্টারনেটের ৭০ শতাংশ এতদিন ভারতনির্ভর ছিল। অনেক ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বিদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়ে এসেছে। এখন থেকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ব্যান্ডউইথ দেশের সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে আনতে হবে।’

তিনি আরও জানান, ‘বিটিআরসির মাধ্যমে ‘কেপিআই সিস্টেম’ চালু করে ইন্টারনেটের মান নির্ধারণ করা হবে। যেসব অপারেটর খারাপ মানের ইন্টারনেট সেবা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মান উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেটকে আর ব্রডব্যান্ড বলা যায় না। এটি অন্তত ১২ থেকে ১৫ এমবিপিএস করতে ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সংগঠনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।’

টেলিকম ও আইসিটি খাতের দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিগত আমলে এই দুই খাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। বর্তমান সরকার এর শ্বেতপত্র তৈরি করছে এবং নতুন কোনো প্রকল্প হাতে না নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছ নীতিমালা তৈরি করছে।’

তিনি আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নতুন এই নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে টেলিকম ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দীর্ঘদিনের দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা সম্ভব হবে।

ডিআর/এমএইচএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর