অ্যাপল এআইয়ে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে, প্রযুক্তির ভবিষ্যতের নতুন প্রস্তুতি

প্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ১২:২৬
-688dafa784fac.png)
প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল সম্প্রতি তাদের এআই স্ট্র্যাটেজিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে, যেখানে তারা নিজেদের তৈরি এআই মডেলের পাশাপাশি থার্ড পার্টি এআই প্ল্যাটফর্মগুলোকে যুক্ত করতে যাচ্ছে। বিশেষ করে ওপেনএআই এবং অ্যানথ্রপিকের মতো প্রতিষ্ঠানের এআই মডেল ব্যবহারের মাধ্যমে তারা ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট সিরি এবং অন্যান্য সেবা আরও উন্নত করার পরিকল্পনা করছে।
অ্যাপলের এই নতুন পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স নামক একটি উন্নত এআই সিস্টেম, যা আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাকসহ অ্যাপলের অন্যান্য ডিভাইসে মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যবহারকারীর অভ্যাস বুঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করবে। সিরি ও অন্যান্য ফিচার আরও স্মার্ট হবে। এবং ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ সম্পাদনে সহায়তা করবে।
স্বাস্থ্য খাতে অ্যাপল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারও বাড়াচ্ছে। তারা মালবেরি নামের একটি নতুন প্রকল্প শুরু করেছে, যার মধ্যে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে এআই ফিচার যুক্ত করা হচ্ছে। এটি ব্যবহারকারীদের শারীরিক অবস্থা ও কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেবে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ভিডিও কনটেন্ট এতে সংযুক্ত করে দেবে। অ্যাপল ওয়াচ এবং আইফোনের ডেটা ব্যবহার করে এই স্বাস্থ্য সহকারী মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির মাধ্যমে আরও দক্ষ হবে।
অ্যাপল নিজস্ব ডেটা সেন্টারে তাদের তৈরি চিপ ব্যবহার করে এআই ফিচারগুলো চালু করবে, যাতে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে উন্নতমানের এআই পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এই পদ্ধতিতে তারা ব্যবহারকারীর তথ্য নিরাপদ রাখবার পাশাপাশি দ্রুত ও কার্যকর সেবা দিতে পারবে।
অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর জীবনকে আরও সহজ ও নিরাপদ করা। আমাদের এআই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয় এবং প্রাইভেসি সম্মত হবে। ২০২৬ সালের মধ্যে সিরির নতুন সংস্করণে এই উন্নত এআই মডেল যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে যা ব্যবহারকারীদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে।
তবে এই এআই নির্ভর প্রযুক্তির বাণিজ্যিক সাফল্য কতটা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ বর্তমানে বাজারে অনেক বিনামূল্যে পাওয়া এআই সেবা রয়েছে। অ্যাপলের এআই ফিচারের কার্যকারিতা ও নির্ভরযোগ্যতা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে, ব্যবহারকারীরা যেন অর্থ বিনিময়ে সঠিক সেবার মান নিশ্চিত করতে পারে।
এই নতুন পথে অ্যাপল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ ও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে সামনের দিনগুলোতে অ্যাপল ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধাজনক, নিরাপদ এবং স্মার্ট ইকোসিস্টেম তৈরি করবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করছে প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।
অ্যাপলের এআই প্রযুক্তি শুধু প্রযুক্তি গ্রহণকারীদের জীবনকে বদলাবে না, বরং স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ও দৈনন্দিন কাজেও বিপ্লব ঘটাবে, যা প্রযুক্তি বিশ্বে নতুন এক যুগের সূচনা হবে বলে ধরা হচ্ছে।
এম এন