Logo

প্রযুক্তি

এআই দিয়ে দুর্নীতি দমন বিশ্বের উদাহরণ, বাংলাদেশের মুক্তি

মোহাম্মদ নেসার

মোহাম্মদ নেসার

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০০:৪১

এআই দিয়ে দুর্নীতি দমন বিশ্বের উদাহরণ, বাংলাদেশের মুক্তি

গ্রাফিক্স : বাংলাদেশের খবর

এখনকার দিনে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানে শুধু রোবট কিংবা চ্যাটবট নয় এটা দুর্নীতি সমস্যা সমাধানেরও বড় হাতিয়ার হয়ে উঠছে। বেশ কিছু দেশ দেখিয়েছে যে, সরকারি কেনাকাটা, বাজেট, খরচ, স্বাস্থ্য বা শিক্ষা যেখানে টাকার লেনদেন বেশি সেখানে এআই ব্যবহার করলে অনিয়ম দ্রুত ধরা পড়ে।

ব্রাজিল

ব্রাজিলে অ্যালিস (Alice) নামের একটি এআই চালু হওয়ার পর হাজার হাজার সরকারি কেনাকাটার দরপত্র, টাকার খরচ সব এই এআই অ্যানালাইসিস করে দিচ্ছে। যেখানে আগে বিভিন্ন হিসেব সম্পন্ন করে দুর্নীতি ধরতে বছরের পর বছর সময় লেগে যেত, এখন সেখানে কয়েক দিনেই তা চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে। তারা সোফিয়া আর  মোনিকা নামের আরও দুটি এআই সিস্টেম দিয়ে, আরও দ্রুততর অডিট, তথ্য যাচাই আর নজরদারি করছে। যার কারনে তাদের দুর্নীতি দিন দিন কমে আসছে। ইতিমধ্যে অনেক জালিয়াতির দরপত্র এআই আটকে দিয়েছে, যার ফলে বড় অঙ্কের সরকারি টাকা রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

ইউক্রেনের উদ্ভাবন

ইউক্রেনে প্রোজোরো (ProZorro) এবং ডোজোরো (DOZORRO) নামে দুটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছিল। যেখানে সরকারি দরপত্র- কে কত দামে, কী কী শর্তে পাচ্ছে সেগুলো জনসাধারণের কাছে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হয়। ২০১৮ সালের পর থেকে ডোজোরোতে মেশিন লার্নিং ব্যবহার শুরু হয়। এর ফলে মোটামুটি যেকেউ, এক্সপার্ট না হলেও, কোন দরপত্র বেশি অনিয়মের ঝুঁকিতে আছে তা নির্ণয় করে ফেলতে পারে। এতে দেশের অডিট ও তদন্তকারীদের কাজ অনেক সহজ হয়েছে এবং সরকার কয়েক বিলিয়ন ডলার বাঁচাতে পেরেছে।

ইউরোপীয় উদাহরণ

হাঙ্গেরি, স্পেন, ইতালি এসব দেশের সরকারও টেন্ডার, ওষুধ কেনা বা বড় বিনিয়োগ করতে এআইয়ের সহায়তা নিচ্ছে। ইতালির উতোস্ত্রাদে পের লি'তালিয়া (Autostrade per l’Italia) কোম্পানি তাদের এআই রিটা (RITA) দিয়ে খুব সহজে কোন কোন খাতে অনিয়ম হচ্ছে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়মিত জানতে পারছে। নতুন আইন বা তথ্য এলেই রিটা নিজে থেকেই আপডেট হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে?

বাংলাদেশে সরকারি চাকরি, হাসপাতাল, ভূমি অফিসসহ প্রায় সবখানেই অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া। যদি সরকারি ডেটাগুলো ডিজিটালভাবে সাজানো যায় এবং এআই দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়- ডাটা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে কে কোথায় বেশি টাকা খরচ করল, কে বারবার দরপত্র পেল, কোথাও সন্দেহজনক কিছু হলো কি না, এসব এআই জানিয়ে দিতে পারবে। এতে অনিয়ম ও দুর্নীতি কমে আসবে। তবে এর জন্য ডাটা ডিজিটাল হতে হবে, সরকারি নীতিমালায় প্রযুক্তির ব্যাপারে স্বচ্ছ নিয়ম থাকতে হবে, প্রশিক্ষিত লোকবল প্রয়োজন হবে, যারা এআই বোঝে।

অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও চাইলেই কিছু খাতে পরীক্ষামূলকভাবে হলেও এআই চালু করা যেতে পারে। এবং এর সুফলের সাথে তাল মিলিয়ে এআই নির্ভর প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ান যেতে পারে।    

প্রযুক্তি যতই আধুনিক হোক না কেন, ভালো কাঠামো, সততা ও দায়বদ্ধতা না থাকলে দুর্নীতি কমবে না। কিন্তু এআই থাকলে দুর্নীতি ধরার কাজ অনেকটাই সহজ আর স্বচ্ছ হবে।

এমএন

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর